ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
এমন কোনো প্রেম কি হয়, যে প্রেমের পাত্র-পাত্রি উভয়কে পছন্দ করে কিন্তু তবু তাদের দুজনকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে? গত শতাব্দীর অন্যতম সেরা রোমান্টিক সিনেমা কাসাব্লাংকা এমনই এক প্রেমের কাহিনী।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সে সময় সারা ইউরোপে জার্মান ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমেরিকা ছিলো এসময় অনেকটা নিরাপদ। ফলে ইউরোপিয়ানদের আমেরিকায় যাবার জন্য একটা হুলস্থুল পড়ে যায়। আমেরিকা যাবার জন্য এসময় লোকজন ভিড় করে কাসাব্লাংকাতে।
কাসাব্লাংকা মরক্কোর একটা শহরের নাম। ঠিক এমন এক ঐতিহাসিক সময়ে কাসাব্লাংকাতে একটা জমজমাট ব্যবসা চালাতে থাকে মি. রিক ব্লেইন। তিনি একজন আমেরিকান।
সে সময়ই কাসাব্লাংকাতে সিনেমার নায়ক রিক ব্লেইনের সাথে দেখা হয় নায়িকা এলিসা লিন্ডের। তাদের দুজনের পরিচয় করার কোনো দরকার হয় না।
কারণ তারা আগে থেকেই পরিচিত। এখানেই মূলত কাহিনীর শুরু।
দুজনের মনে পড়ে প্যারিসে তাদের প্রেম গড়ে ওঠার কাহিনী। তার পরই প্যারিস আক্রমণ করে জার্মান বাহিনী। জীবন বাঁচানোর জন্য দুজনে সিদ্ধান্ত নেয় দ্রুত প্যারিস ছেড়ে পালাতে হবে।
ঠিক করে তারা বিয়ে করবে। কখন কোথায় উপস্থিত থাকবে, কিভাবে শেষ ট্রেনে করে তারা পালাবে তাও ঠিক করে তারা।
স্টেশনে যখন রিক অপেক্ষা করছিলো অনেক আশা আর উত্তেজনা নিয়ে তখনই সে বৃষ্টির জলে ভেজা এলিসার চিঠি পায়। চিঠিতে এলিসা লিখেছে, “আমি যেতে পারবো না। কারণটা তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করো না….”
সেটা ছিলো প্যারিস থেকে শেষ ট্রেন।
সেটাতে করে প্যারিস থেকে পালিয়ে না গেলে জার্মান বাহিনীর হাতে বন্দী হতে হবে। তাই রিক সেই ট্রেনে করেই প্যারিস ছেড়ে চলে যায়। দুজনে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কাসাব্লাংকাতে যখন আবার তাদের দেখা হয় তখন এলিসা বিবাহিত। খুব স্বাভাবিকভাবেই রিকের পুরনো কথাগুলো মনে পড়ে।
সেদিন রাতে মনের দুঃখে অপেক্ষা করতে থাকে পুরনো প্রেমিকার সাথে কথা বলার জন্য। যদিও সেদিন রাতে এলিসার আসার কথা ছিলো না.....
তবু সেদিন রাতেই রিকের কাছে এলিসা দেখা করতে আসে। রিকের মনে স্বাভাবিকবাবেই প্রশ্ন ছিলো প্যারিসের পুরনো বিষয়গুলো নিয়ে। সেদিন কেন আসেনি সে? কেন তাকে স্টেশনে দাড়িয়ে রাখলো। একেবারে শেষ মুহূর্তে কেন জানালো তার সাথে যেতে পারবে না? আর কেনইবা এতোদিন পর আসলো?
পরে ধীরে ধীরে তাদের কথাবার্তায় প্রকাশ হয় সে সময়কার পরিস্থিতি।
এলিসা জানায় প্যারিসে যখন তাদের প্রেম হচ্ছিলো তখনো সে ছিলো বিবাহিত।
এলিসার স্বামী ছিলো জার্মানদের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী। তার সাথে কোনো যোগাযোগই ছিলো না। সে জানতোনা তার অবস্থান কিংবা কোনো খবর। তবে শুনেছিলো যে জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে পালানোর সময় গুলিতে মারা গেছে।
আর এ বিষয়গুলো গোপন রাখা যুদ্ধের সময় ছিলো স্বাভাবিক বিষয়।
এর পরের কাহিনীটা আরো আকর্ষণীয়। এলিসা আর তার স্বামী কাসাব্লাংকাতে এসেছে আমেরিকায় পালিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু নানা সমস্যায় তারা যেতে পারছে না। এ সময় রিকের হাতে অনেক ক্ষমতা।
সে চাইলে তার প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে এলিসা স্বামীকে কাসাব্লাংকায় রেখে তারা দুজনে চলে যেতে পারে আমেরিকায়। আবার ইচ্ছা করলে শুধু তাদের দুজনকেও পাঠিয়ে দিতে পারে আমেরিকায়।
রিক শেষ পর্যন্ত কি করেছিলো? সে কি হতে পারবে এতোটা উদার? এটাই হচ্ছে এ সিনেমার টানটান উত্তেজনার বিষয়।
--- ------ -------- -------------
বাকি অংশটা বলছি না। তাহলে সিনেমা দেখে আর মজা পাবেন না।
আগে যখন কাসাব্লাংকা দেখেছিলাম তখন কাহিনীটা ঠিক বুঝিনি। এখন আগের চেয়ে ইংরেজি কথাবার্তা সামান্য বেশি বুঝি। ফলে কাহিনী বুঝতে সুবিধা হয়েছে। তাই বহুদিন পর নতুন করে সিনেমাটা দেখে খুব ভালো লাগলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।