আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এন্টি গল্প > 36_24_36 >

যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
হাঁসফাঁস করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন তিনি। হাতে গোটা তিনেক ব্যাগভরা শপিং। খুব সাবধানে সিঁড়ি ভাংছেন,কারণ যে পরিমান ওজন হলে চার ইঞ্চি পয়েন্টেড হিল আ্যামিউজ করা যায় তার চে অন্তত কেজি বিশেক বেশী ওজন নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত তিনি। নামছেন। শরীরের ভাইটাল জায়গাগুলো অনেক আগেই ভিজে গেছিল, এখন প্যাঁচপেচে ধরণের অনুভূতি হচ্ছে! ঠিক তার পাশ দিয়ে একটা মেয়ে গট গট করে নেমে গেল।

তারও চার ইঞ্চি। কিন্তু কি সাবলীল নামল! আঠার মত চোখজোড়া লেগে রইল মেয়েটির পেছনে। পার্কিং লটে এসে দেখলেন মেয়েটি একটা নোয়াহ এর পাশে দাঁড়ানো। তিনিও এসে দাঁড়ালেন পুরোনো হয়ে যাওয়া করোলার পাশে। নিজের পেটের কাছটাতে তিন তিনটা থাক।

কত করেছেন,তাও কিছুতেই কিছু হলো না!এ্যাবকিং না কি যেন কিনেছেন, জিমে ভর্তি হয়েছেন, নাহ! কিছুতেই কিছু হলো না! কষ্টটা বাড়ে এই মাপের মেয়েদের দেখলে! ফিগার কি! পেছনটা দেখছেন বলে পেছনের বর্ণনাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বড়গলার ব্লাউজের শেষটাতে একটা ছোট্ট গিরিখাদের মত! পানি ঢাললে ঠিক নিচে নেমে যাবে না ছড়িয়ে! তারপর হঠাৎ উঁচু হয়ে ওঠা নিতম্ভ। সুডৌল। শেষে কলাগাছের মত উরুযুগল টানা নেমে মিশেছে চার ইঞ্চিতে! ভাইটাল স্ট্যাট কত? ৩৬? হু। তারপর কি ২৪ ? হু।

দেন ? ৩৬! মাইগড! বাংগালি মেয়ের এমন মাপ? আলতো করে নিজের হাতটা তিনথাকের ওপর ঘুরে গেল। মেয়েটি ততক্ষণে উঠে বসেছে নোয়াহতে। স্যাঁৎ করে বেরিয়ে গেল। ইচ্ছে হলো করোলাটাকে কষে লাত্থি লাগায়..পা এবং হিল তাকে থামাল। আবার বিরক্তিকর সেই ভেজা যায়গাগুলোর কথা মনে এলো।

করোলার সামনে দিয়ে একটা চলমান কাঠামো কুচি দৌড়ে পার হলো। যে কুচি দৌড়ে পার হচ্ছিল তার মাথা থেকে ঘোমটা মত আচলটা মুখের ডানপাশ দিয়ে নেমে দাঁতে কাঁমড়ানো। দেহাতি শাড়িটা প্রায় হাটুপর্যন্ত ওঠানো। ময়লা। আঁচলের তলে একটা থালামত তাতে হয়ত কোন খাবার।

নারীটি দ্রুত হাটছে। নারীটি কুচি দৌড়ে এগুচ্ছে। নারীটি সামনে কোন কিছুকে তোয়াক্কা করছে না। লিকলিকে শরীরের এই নারীরা এভাবেই হাঁটে। ওরা অনেকটা পথ হেঁটে একটা ঝুঁপড়িমত ডেরায় পৌঁছায়।

তারপর প্রায় বসে যাওয়ার ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে ভেতরে ঢোকে। সেখানে কেউ একজন চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে। অনন্তকাল যেন তার চিৎ হয়ে থাকার অভ্যেস হয়ে গেছে। সেই চিৎ হয়ে থাকা কেউ একজন বহুকষ্টে উঠে বসে। আঁচলের তলা থেকে সদ্যজন্মনেওয়া শিশুর মত কাঙ্খিত খাবার বের হয়।

চোখের তারায় ক্ষণিকের জন্য বিদ্যুৎ খেলে যায়। সেগুলো যখন মুখ গলা হয়ে পেটে চালান হয় তখন সেই বয়ে আনা নারীটির মুখে স্বর্গীয় হাসির দ্যুতি খেলে যায়। যদিও স্বর্গ বস্তুটা কেমন তার কোন ধারণাই নেই এদের। দুজন ঠোলার শ্যেন চোখ আঁচলের তলে অন্যকিছুর অস্তিত্ব খোঁজে। ধারণা নয়।

নিশ্চিত তারা। বহুবছরের অভিজ্ঞতায় একেবারে শতভাগ নিশ্চিত হয়, মাগি নিশ্চই মাল ডুকাইছে! ডাইল-ডুল কি? নাকি আরো ভয়ানক কিছু? জইল্যা ল’ মাগিরে দেখতে অয়। বার দুয়েক গলা খাকরানী দিয়ে গড় গড় করে মাথা নিচু করে ঢুকে গেছিল পুলিশ দুজন। মালের ধান্ধায় গন্ধটন্ধ গায়ে মাখে না ওরা। বেশ ট্রেইন্ড।

বিশেষ করে মাল বিষয়ক ব্যাপার গুলোতে। পাঁচ বাই সাড়েচার ঝুঁপড়িতে চোখ ঘুরিয়ে আনতে সময় লাগে না। লাগেওনি। কিছুক্ষণ পরই বেরিয়ে এসেছিল ওরা। মাল মেলেনি।

তবে অন্য মালের খোঁজ মিলেছে। মনে মনে ঠিক করে নিল, বড়বাবুকে বলে এঅঞ্চলে আবার ডিউটি নেবে। করোলা জ্যামঠেলে এগচ্ছে। কিন্তু তিনথাকের ভাবনা আবার জ্যামে পড়ে গেল। থেমে গেল সেই ৩৬-২৪-৩৬ এর ছবিতে।

কি দেমাগ মাগীর! একবার তাকাল না পর্যন্ত! এতটুকুন মেয়ে, তার একটু ম্যানার ট্যানার থাকবে না? তুক্ষুনি তিনথাকের ইচ্ছে হলো একটা চটকানা লাগায়। সম্ভব না। চটকানার ঝালটা পড়ল ড্রাইভার ছোকরাটার উপর। ‘কি চালাস তুই? এ যে রিক্সার চে আস্তে ! কাহিনী কি তোর?’ ছোকরাটা কিছুই না বুঝে জ্বে ম্যাডাম বলে গিয়ার চেঞ্জ করল। বুকটা! আহা! নিজে কি কখনো অমন ছিলাম? ভাবনা চলছেই গাড়ির গতিকে ফেল মেরে।

২৪! ভাবা যায়! মুঠোয় আসে! রিওয়াইন্ড করে পেছনে গেলেন তিনথাক। নাহ, সেখানেও অমন কিছু নেই। চোখে কাজল দেয়া দুই বেণীর এক মফস্বলি মাল! ধ্যাৎ! পরদিন ঠিকই দুই পুলিশ ওখানে ডিউটি পেয়েছিল। সন্ধ্যের একটু আগেই মাথা নিচু করে ঢুকে গেছিল ভেতরে। চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা মানুষটা আজ ছিল টানটান।

হাত-পা সোজা করা। খুব বোধহয় অসুস্থ্য ছিল, নইলে একবারো নড়বে না কেন? মাগিটা সেই টানটান এর পাশে গুটিশুটি। কান্নার মত শোনায় এমন কিছু বিলাপের সুরে আউড়ে যাচ্ছিল। এই ধরণের পরিস্থিতির সঙ্গে খুব ভাল পরিচয় আছে ঠোলাদের। তারা জানে এটাও একধরণের ভান।

এই মাগীগুলো খুব হারামী হয়। এখন এই প্যানপ্যানানি শুনবে? আবার পরে আসবে? কিন্তু শরীরের মধ্যিখানে নাভির নিচে কিছু একটা পরে আসার ব্যাপারটা কিছুতেই এ্যালাউ করল না। তার দাবী এখনই। এবং এক্ষুনি। কোন রকম বাধাবিপত্তি ছাড়াই টানটান এর পাশে গুটিশুটিকে শুইয়ে দিল ওরা।

তারপর ওর উপরে একজন একজন করে লম্বা হলো। কখনো কখনো একটু ভাজ হলো আবার সেই যে সারদাতে প্রাকটিস করেছিল ঘোড়ায় চড়ে! সেরকমই। বড় বড় নিশ্বাস ফেলে প্রথম জন সরে যেতেই দ্বিতীয়জন। একই ভঙ্গি। প্রথমজনের ভীষণ বদাভ্যেস ওই কামের পর পরই তাকে বিড়ি খেতেই হবে।

বাইরে এসে বিড়িটায় যে টানটা দিল তাতে প্রথম চোটেই মাঝবরাবর। অনেকক্ষণ পর খুঁতখুঁতানি। শালার এতক্ষণ লাগে ক্যান? বাঞ্চোৎটাকে নিয়ে আর পারি না। আরে হালা ঝটপট মাল ঝাড়বি, তারপর হাওয়া হয়ে যাবি। তা না......খসানোর পরিতৃপ্তিতে গোঙ্গানির শব্দটা ঠিকমত কানে না গেলেও বেশ বুঝল কেস বিলা! উঁকি দিল।

চমকাল। চিৎকার করল। লাফ দিল। লোক ডাকল। হাতকড়া পরাল।

গাড়ি আসল। নারীটি গরাদে চলে গেল। কাল সকালে বা দুপুরে কেউ হয়ত টানটান হওয়াটাকে ব্যবস্থা করবে। পুলিস কেস। নো হ্যালাফেলা! জজ সাহেবের টাইয়ের নট বাঁধার সময়ের চেয়েও কম সময়ে কেস ফয়সালা।

চোদ্দশিক। খাতা। বেগুনিপেড়ে সাদাশাড়ি। একটা থালা। একটা বাটি।

একটা কম্বল। দিনগুলো পাথরের মত আস্তে আস্তে গড়িয়ে গেল। যাবার সময় চোখে চুলে হনুতে কণ্ঠার হাড়ে দাগ রেখে গেল। তিন বেলা আহারের এমন নিশ্চিন্ততা কবে পেয়েছিল ও? মনে নেই। ও জানে না এর পর কি? জানানো হলো একদিন খুব ভোরে।

যখন সবগুলো মাইক একসাথে বেজে ওঠে। সেদিনও সবগুলো মাইক একসাথে বেজে উঠেছিল। আর বেজে উঠেছিল একটা বিশেষ ধরণের ঘন্টা। ওটা বাজলে যারা পুরোনো তারা মুখে হাতচাপা দেয়। নারীরা কাঁদে।

পুরুষেরা মাথাটা বুকের সাথে মিশিয়ে রাখে। সান্ত্রিরা ফালতু হাসে না। বেজায় রসিক যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা ফালতুদের মারে না। নিমগাছটার পাশ দিয়ে ধোঁয়াটে ধূসর সূর্যটা হঠাৎ উঠে এলো। শান বাঁধানো চত্তরে রাখা হলো নারীটিকে।

বুকের ওপর একটা চাদর বিছিয়ে দেওয়া হলো। পাশে দাঁড়িয়ে জমাদার। তার হাতে ফাইল। নারীটির ফাইল। ক্লোজড।

৩৬ নম্বর খাতার ৩৬ সেল এর সেই নারীটির বয়স ছিল ২৪ ! ভাইটাল স্ট্যাট.......৩৬-২৪-৩৬...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।