আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণতন্ত্রের ফাঁকা বুলি



বনের সব পশুরা মিলে ঠিক করল তাদের নতুন একজন রাজা থাকা উচিত। সেই আদি কাল থেকে চলে আসছে সিংহ পশুদের রাজা। যুগ যুগ ধরে সিংহ জঙ্গলে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে আসছে। যথন তখন বনের পশুদের ধরে ধরে খেয়ে ফেলে। এই অনিয়ম আর চলতে দেয়া যায় না।

এখন গণতন্ত্রের যুগ। তাই শৈরশাসন আর চলতে পারে না। যেই ভাবা সেই কাজ। সবাই সিদ্ধান্ত নিল ভোটের মাধ্যমে একজন বনের রাজা নির্বাচিত করা হবে। প্রত্যেকে একজন পশুর নাম প্রস্তাব করবে।

যেই পশু সব চেয়ে বেশী ভোট পাবে তাকেই বনের রাজা নির্বাচিত করা হবে। পুরো কাজের দায়িত্ব বাঘকে দেয়া হল। বাঘ সম্পূর্ন নিরপেক্ষ ভাবে একজন রাজা ঠিক করে দেবে। সারাদিনের উত্তেজনা শেষে ভোট দান শেষ হল। এবার গণনার পালা।

গণনা শেষ। এবার ফল প্রকাশের অপেক্ষা। দেখা গেল সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে গাধা। বনের সব পশুরা অবাক। এটা কি করে সম্ভব।

এটা ঠিক তারা সবাই চেয়েছে সিংহ নির্বাচনে ফেল করুক। তাই সিংহকে ভোট দেয়নি। কিন্তু তাই বলে গাধা পাশ করুক তাও চায়নি। সবাই ভাল করেই জানে জঙ্গলের আইন ঠিক রাখতে হলে যে মেধা এবং শক্তি দরকার তা গাধার নেই। এদিকে সিংহ থেকে থেকে হুংকার ছাড়ছে।

এই পাতানো নির্বাচন মানি না, মানব না। বাঘ দেখল এই সুযোগ। বাঘ গম্ভীর স্বরে বক্তৃতা আরম্ভ করল-ভাইসব, আপনারা জানেন দীর্ঘ দিনের শৈরশাসনের যুগ শেষ হয়ে এই বনে গণতন্ত্রের সূচনা হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা গণতন্ত্রের ভার যার তার হাতে দিয়ে দিতে পারি না। যেহেতু আপনারা সিংহের অত্যাচার থেকে মুক্তি চান।

আবার গাধাকেও বিজয়ী হিসেবে দেখতে চান না। তাই আমি বলছিলাম কি, আপনাদের সামনে এখন একটিই পথ খোলা রয়েছে। সেটা হচ্ছে মধ্যবর্তী পন্থা। আপনারা নিরপেক্ষ কাউকে নির্বাচিত করতে পারেন। আর আপনাদের যদি আপত্তি না থাকে তবে আমি এই পদ অলঙ্কিত করতে রাজী আছি।

বনের সব পশুর মাঝে গুঞ্জন উঠল। শেষ পর্যন্ত অনেক তর্ক বিতর্কের পর বাঘকেই পশুর রাজা নির্বাচিত করা হল। বেশ কিছুদিন ভালই গেল। তারপর বাঘ যখন তখন বনের পশুদের ধরে ধরে খাওয়া শুরু করল। বনের পশুরা শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করল গণতন্ত্র-ফন্ত্র আসলে কিছুই নয়।

সব হাওয়া কখনই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। ঈশপের আধুনিক উপদেশ: গণতন্ত্র সবার জন্যে নয়। সবাই এটাকে ঠিকমত হজম করতে পারে না। ( দেশে যে সরকারই নির্বাচিত হয়ে আসুক তারা কিছুদিন খুব চিল্রাফাল্রা করেন-আমরা দেশে গণতন্ত্রের শাসন প্রতিস্ঠিত করেছি। গণতন্ত্র কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়।

দেশের জনগণ কি চাচ্ছে। তারা কি বলছে তাদের তা একটু শুনা উচিত। এবং সেই মত কাজ করা উচিত। তাহলেই দেশে সত্যিকার ভাবে গণতন্ত্রের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। অন্য আর কোন ধরনের গলাবাজির দরকার নেই।

)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।