আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণতন্ত্রের রূপ.....।



খলীফা হযরত আবু বকর যখন বুঝতে পারলেন তার অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে, মৃত্যুর পূর্বেই পরবর্তী খলীফা মনোনীত করে যাওয়াকে তিনি কল্যাণকর মনে করলেন। তার দৃষ্টিতে ' উমার রাঃ ছিলেন খিলাফতের যোগ্যতম ব্যক্তি । তা সত্বেও উচু পর্যায়ের সাহাবীদের সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করা সমীচীন মনে করলেন। তিনি আবদুর রহমান ইবনে আউফ রাঃ কে ডেকে বলেন, উমার সম্পর্কে আপনার মতামত আমাকে জানান। তিনি বললেন : তিনি তো যে কোন লোক থেকে উত্তম, কিন্তু তার চরিত্রে কিছু কঠোরতা আছে।

তারপর আবু বকর অনুরোধ করলেন, তার সাথে আলোচিত বিষয়টি কারো কাছে ফাস না করার জন্য। অতঃপর তিনি উসমান ইবনে আফফানকে ডাকলেন। বললেন, 'আবু আবদিল্লাহ, ' উমার সম্পর্কে আপনার মতামত আমাকে জানান। ' উসমান বললেন : আমার থেকে আপনিই তাকে বেশী জানেন। আবু বকর বললেন , তা সত্বেও আপনার মতামত আমাকে জানান।

উসমান বললেনঃ তাকে আমি যতটুকু জানি, তাতে তার বাইরের থেকে ভেতরটা বেশী ভালো। তার মত দ্বিতীয় আর কেউ আমাদের মধ্যে নেই। আবু বকর (রা) তাদের দু জনের মধ্যে আলোচিত বিষয়টি গোপন রাখার অনুরোধ করে বিদায় দিলেন। এভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেক মতামত নেওয়া শেষ হলে তিনি উসমান ইবন আফফানকে ডেকে ডিকটেশ দিলেনঃ ' বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এটা আবু বকর ইবন আবি কুহাফার পক্ষ থেকে মুসলমানদের প্রতি অঙ্গিকার।

আম্মা বাদ' এত টুকু বলার পর তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফলেন। তারপর উসমান ইবন আফফান নিজেই বাকিটা সংযোজন করেন- ' আমি তোমাদের জন্য ' উমার ইবনুল খাত্তাবকে খলীফা মনোনীত করলাম এবং এ ব্যাপারে তোমাদের কল্যাণ চেষ্টায় কোন ক্রটি করি নাই। ' অতঃপর আবু বকর সংজ্ঞা ফিরে পান। লিখিত অংশটুকু তাকে পড়ে শোনানো হলো। ' সবটুকু শুনে তিনি "আল্লাহ আকবার" বলে ওঠেন এবং বলেন : আমার ভয় হচ্ছিল, আমি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মারা গেলে লোকেরা মতবেদ সৃষ্টি করবে।

উসমানকে লক্ষ্য করে তিনি আরো বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষ থেকে আপনাকে কল্যাণ দান করুন। তারপর আবু বকর সমবেত লোকদের বলেন : ' যে ব্যক্তিকে আমি আপনাদের জন্য মনোনীত করে যাচ্ছি তার প্রতি কি আপনারা সন্তুষ্ট ? আল্লাহর কসম, মানুষের মতামত নিতে আমি চেষ্টার ক্রটি করিনি। আমার কোন নিকট আত্মীয়কে এ পদে বহাল করিনি। আমি ' উমার ইবনুল খাত্তাবকে আপনাদের খলীফা মনোনীত করেছি। আপনারা তার কথা শুনুন, তার আনুগত্য করুন।

' এভাবে উমার রাঃ খিলাফত শুরু হয় হিঃ ১৩সনের ২২ জামাদিউস সানী মুতাবিকে ১৩ আগস্ট ৬৩৪ খৃঃ । ইসলামী হুকুমাতের নিয়মতান্ত্রিক প্রতিষ্টা মূলতঃ উমার রাঃ এর যুগেই হয়। সরকার বা রাষ্টের সকল শাখা তার যুগেই আত্মপ্রকাশ করে। তার শাসন ও ইনসাফের কথা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে কিংবদন্তীর মত ছড়িয়ে আছে। হযরত উমার প্রথম খলীফা যিনি "আমিরুল মুমিনীন" উপাধি লাভ করেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।