বিরোধীরা গোলপোস্টই খুঁজে পাচ্ছেন না। ক্ষমতাসীনরা গোলপোস্টটা এতবার সরিয়ে দিচ্ছেন তাতে যত ভালো খেলোয়াড়ই হোক গোল করতে পারছেন না। সবাই শুধু মাঠে দৌড়াদৌড়ি করছেন। গোলপোস্টের কাছে গেলেই সেটা ফট করে সরে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচন ও বর্তমান রাজনীতি প্রসঙ্গে গত বুধবার এসএ টিভি'র টকশো 'লেট এডিশন'- এ জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ কথা বলেন।
নঈম নিজামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে। টাইমফ্রেমটা রাজনৈতিকভাবে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে_ যদি সংসদের সময়টা পার হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে নির্বাচন তিন মাস আগেও হতে পারে, পরেও হতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানের অবস্থাটা খুব জটিল। সংসদ নেত্রী সংসদ ভাঙতে পারেন কি পারেন না_ এটা নিয়ে সারা রাত কাটিয়ে দেওয়া যায়। এটা পড়লে কেউ বুঝবে না এটা প্রেসিডেন্সিয়াল টাইপ অব গভর্নমেন্ট নাকি পার্লামেন্টারি টাইপ অব গভর্নমেন্ট। আগে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগপত্র দিয়ে সংসদ ভেঙে দিতে বলতেন। প্রেসিডেন্ট তাকে বলতেন কেউ আপনার স্থলাভিষিক্ত না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যান।
এটাই অন্তর্বর্তীকালীন। এখন সেই সংবিধান নেই। তবে সমস্ত বইটা পার্লামেন্টারি স্ট্রাকচারে হয়েছিল। পরে যার যেখানে সমস্যা হয়েছে তিনি ওই পাতাগুলো পরিবর্তন করেছেন। আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু বলেন, নির্বাচনের সমাধান বের হয়ে যাবে।
এটা তো ট্রেড ইউনিয়ন নয়। কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সংবিধান থেকে একচুলও নড়বেন না। আজ টিভিতে দেখলাম সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হবে। দুটি বিষয় কিন্তু এক না। শব্দে যখন পরিবর্তন এসেছে তার মানে নির্বাচন হবে এবং বিরোধী দলকে নিয়েই হবে।
আমি আশাবাদী। একটা প্রক্রিয়া অন্তত চালু থাকুক। তিনি বলেন, যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাওয়া হলো আমি বলেছিলাম, অভিজ্ঞতার আলোকে, সময়ের প্রয়োজনে কোনো সংস্কার লাগলে তা করতে হবে। প্রতিটা নির্বাচনের সময় তো দ্বন্দ্ব হয়নি। '৭৯, '৭৩, '৮৬, '৮৮-এ নির্বাচন হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের অধীনে '৯১ সালে নির্বাচন হলো। '৯৬-এ হলো। কই, সংঘাত তো হয়নি। ২০০১-এর নির্বাচনেও সংঘাত হয়নি। এরপরে কী ঘটল? নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি ও দ্বন্দ্ব শুরু হলো।
তত্ত্বাবধায়ক আর বিচারপতি নিয়ে রাজনীতি শুরু হলো। গণতন্ত্রকে একবাক্যে বললে এটা একটা মানসিক অবস্থা।
আইন-কানুন দিয়ে এটা ভাঙা-গড়া যায় না। মানার মানসিকতা থাকতে হয়।
জেপি চেয়ারম্যান বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনটা খুব সমালোচিত ছিল।
কিন্তু নিজের সুবিধার্থে কেউ এটা পরিবর্তন করেনি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভেবেছিলাম আমাদের পরবর্তী যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা এটা বাতিল করবেন। যেহেতু কেউই বাতিল করেননি, তার মানে এটা জায়েজ হয়ে গেছে। আমরাও এটা বাতিল করব না।
অনুষ্ঠানে আ স ম আবদুর রব বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিশেষ ক্ষমতা আইনেই দুই নেত্রী গ্রেফতার হয়েছিলেন।
তারপরও এটা বাতিল করা হয়নি। ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য এই ধরনের আইন বহাল রাখা হয়। তবে মনে রাখা দরকার আপনি যখন বিরোধী দলে যাবেন তখন এই আইন কিন্তু আপনার ওপরও প্রযোজ্য হবে। জেএসডি সভাপতি বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের মালিক শুধু মুখে বলা হয়। কেউ এটা মানে না।
যারা ক্ষমতায় আসেন তারা মনে করেন এটা একটা পজিশন। কিন্তু ক্ষমতা কোনো পজিশন না, দায়িত্ব। সরকারের দায়িত্ব দেশের জনগণের উন্নয়ন, কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাজ করা। তিনি নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, এই কমিশন অথর্ব। আত্দহত্যা করেছে।
নির্বাচন কমিশন দিয়ে নির্বাচন করতে হলে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।