১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ডিআইটি (DIT=Dacca Improvement Trust) ভবনের নিচের তলায় কয়েকটি অপরিসর কক্ষে
সীমিত সুযোগ-সুবিধা সম্বল করে এর গোড়াপত্তন হয়। এটি পরিচিত ছিল ‘পাইলট টেলিভিশন, ঢাকা’ নামে।
১৯৬৫ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা টেলিভিশন থেকে ৯০ দিনের পরীক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচারের কাজ শেষ হয়। এরপর পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগে ১৯১৩ সালের কোম্পানি আইনের আওতায় ‘টেলিভিশন প্রোমোটার্স কোম্পানি লিমিটেড’ নামে গঠন করা হয় একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এবং এর পরিচিত প্রতীক ‘পাইলট টেলিভিশন, ঢাকা’ পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পাকিস্তান টেলিভিশন সার্ভিস, ঢাকা’।
১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টেলিভিশনের প্রচার চৌহদ্দি ৫০ মাইলে উন্নীত করা হয়, একইসঙ্গে ঢাকার রামপুরায় এই কেন্দ্রের বর্তমান নতুন ভবন নির্মাণের কাজও শুরু হয়।
কিন্তু দেশের তৎকালীন অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে এর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত টেলিভিশনের বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশব্যাপী ঘোষিত ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ প্রতি সক্রিয় সমর্থন দিয়ে এতে প্রচারিত যাবতীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। শুধু তাই নয়, পাক সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে ২৪ মার্চ (১৯৭১) ঢাকা টেলিভিশন থেকে কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়নি। ২৬ মার্চ (১৯৭১) এটি চলে যায় পাক সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। তবে এ বছরেরই ১৩ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের মুখে এর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭১ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা টেলিভিশনকেন্দ্র ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন কর্পোরেশন, ঢাকা’ এই পরিচিতি ধারণ করে স্বাধীন বাংলাদেশে নতুন আঙ্গিকে অনুষ্ঠান প্রচারের কাজ শুরু করে। ১৯৭২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত রাষ্ট্রপতির ১১৫ নম্বর আদেশবলে সাবেক পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রের সমুদয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হয় এবং এর নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন, ঢাকা’। রামপুরার বর্তমান আধুনিক যন্ত্রপাতিসজ্জিত ভবনে এর স্থানান্তর ঘটে ১৯৭৫ সালের ৬ মার্চ। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এরপর থেকে টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান ধারণ ও প্রচার কাজ শুরু হয়।
রামপুরার নতুন টিভি ভবনের মূল নকশা-প্রণয়নকারী সুইডেনের প্রখ্যাত স্থপতি পিটার সেসশিং। ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। তারপর বাংলাদেশ টেলিভিশন সাদা কালোর যুগ থেকে প্রবেশ করে রঙিন যুগে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।