নাজিল আযামীর ব্লগ সাইট
শয়াতনগোষ্ঠীর একটি জরুরি মিটিং চলছে। এ মিটিং-এর মূল উদ্দেশ্য হলো কে কিভাবে এবং কোন প্রকারে মানুষকে বিভ্রান্ত করে অসৎ কাজে নিয়োজিত বা ঠেলে দিতে পেরেছে, তার রিপোর্ট পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করা। শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি মাঝখানে বসে আছে। সকলে তাদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর রিপোর্ট পেশ করে চলেছে। কেউ বলছে, আমি দুইজন মানুষের মাঝে ঝগড়া বাধিয়ে দিয়েছি, কেউ বলছে, আমি মানুষকে সুদ, ঘুষ, ধর্ষণ এবং দুর্নীতি করতে প্ররোচিত করেছি।
কেউ বলছে, আমি একজন মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে আর একজন মানুষকে হত্যা করিয়ে ছেড়েছি। শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি এদের পেশ করা রিপোর্ট নির্বিকারভাবে শুনে যাচ্ছে। কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে না। কিন্তু উপস্খিত শয়তানদের ভেতর এক শয়তান তার রিপোর্টে উল্লেখ করলো যে সে একজন তালেবুল ইল্ম অর্থাৎ দ্বীনী জ্ঞানার্জনকারী ছাত্রকে বহুত কোশেশ করে তার কানে কুমন্ত্রণা এমনভাবে ঢেলে দিয়েছে যে এখন সে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছে। চমৎকার! সাবাস!! সাবাস!!! বলে শয়তান গোষ্ঠীর দলপতি পরম উল্লসিত হয়ে ঐ রিপোর্ট পেশকারীর পিঠ চাপড়াতে শুরু করলো আর সকলকে বলতে লাগলো এ একটা কাজের মতো কাজ করেছে।
একে আমি সবচে বড় পুরস্কার দেবো। তারপর শয়তান দলপতি মহাখুশিতে হাত-পা ছড়িয়ে বসে সকলকে উদ্দেশ্য করে বললো, তোদের খুন, হত্যা, ধর্ষণ, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতির কুমন্ত্রণা এর রিপোর্টের কাছে একেবারে ছার। সকল শয়তান মনে মনে চিন্তা করতে লাগলো খুন, হত্যা, ধর্ষণ, ঘুষ, সুদ, দুর্নীতির চেয়ে বড় হলো কি-না একটা পুচকে ছাত্রকে লেখাপড়া থেকে মন ঘুরিয়ে দেয়ার কাজ। আর যে এই সামান্য কাজটি করেছে তাকে নাকি দেয়া হবে পুরস্কার। আল্লাদে আর বাঁচা যায় না।
সভা স্খলে হৈ চৈ শুরু হলো। দলপতি শয়তান সকলকে থামিয়ে মাথা নেড়ে বিজ্ঞের মতো বললো, আহা! তোমরা বিষয়টি বুঝতে পারোনি তাই এমনভাবে হৈ-চৈ করছো। এবার মনোযোগ দিয়ে শোন এ কথার গুঢ় তাৎপর্য অর্থাৎ বিষয়টার ভেতরের আসল কথা। সকল শয়তান হৈ-চৈ থামিয়ে উৎকর্ণ হয়ে শুনতে লাগলো। শয়তান দলপতি বললো, ইল্ম বা বিদ্যার্জন বিশেষ করে দ্বীনী ইল্ম (ধর্মীয় জ্ঞান) অর্জনকারী ছাত্র সে যেমন নিজে উপকৃত হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করার পথ পরিষ্কার করবে তেমন সমাজের আরও অনেক মানুষকে সৎ বানিয়ে ফেলবে।
এই সৎ মানুষগুলো আবার দেশের বৃহত্তর গণ্ডিতে গিয়ে সকল মানুষকে সৎ বানিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। মানুষরা যদি দলে দলে জান্নাতে প্রবেশ করে তাহলে আমাদের এত সব জারিজুরি সবই বৃথা। আমাদের সর্ব প্রধান লক্ষ্যই হলো মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা। এই চ্যালেঞ্জই তো করে এসেছে আমাদের শয়তানের বড় শয়তান আজাজিল আব্বাজান। তাই যতো পারো ততো বেশি বেশি ধর্মজ্ঞান শিক্ষা ঘেষা ছাত্রদেরকে বিদ্যালয়ে যাওয়া থেকে দূরে সরিয়ে ফেলো তাহলে দেখবে আমাদের কাজ হালকা হয়ে গেছে।
ওরাই তখন আমাদের পক্ষ থেকে মানুষকে জাহান্নামে ঠেলে দেয়ার পথ পরিষ্কার করে যাচ্ছে। ওরা তখন মানুষের আকৃতিতে থাকলেও আমাদের শয়তান সম্প্রদায়েরই দলভুক্ত হয়ে যাবে। এখন চিন্তা করো, আমি এই শয়তান সদস্যের রিপোর্টটি শ্রেষ্ঠ বলে মূল্যায়ন করে ভুল করেছি? সমবেত শয়তানের দল সমস্বরে মহাউল্লাসে ফেটে পড়লো, সাবাস! সাবাস!! না, না, আপনি ভুল করেননি। ঠিকই করেছেন। আমরা কথাটা আপনার মতো গভীরভাবে ভেবে দেখিনি।
সম্প্রতি এ সরকারের অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম ব করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে একদল ইসলামবিদ্বেষী চিহ্নিত তথাকথিত বুদ্ধিজীবী পরভোজীরা। এদের কাছে ইসলাম কথাটা শোনামাত্রই গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। যেহেতু মসজিদ একজন মুমিন মুসলিমের ইবাদতগাহ্ সেহেতু ঐ চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী মহলের আক্রোশ পড়েছে এই ভেবে যে, এখান থেকে কোমলমতি শিশুরা অন্য বিষয়ের শিক্ষার্জনের সাথে সাথে ইসলামী জ্ঞানার্জন করে একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠবে তখন এদেরকে আর কখনও ইসলামবিমুখ বা ইসলামদ্রোহী করা যাবে না। তাই সুপরিকল্পিতভাবে অত্যন্ত ফলপ্রসূ এই মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রমকে উৎখাত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ঐ সব বুদ্ধিজীবী মহল। ঐ চিঠির একটি অনুলিপি পাঠানো হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর কাছে।
যথোপযুক্ত ব্যক্তির কাছে একেবারে ঝোপ বুঝে কোপ মারা হয়েছে অনুলিপিটি পাঠিয়ে। এই সেদিনকে যিনি কুরআন ও সুন্নাহর পবিত্র আইনকে লঙ্ঘন করে নারীনীতি বাস্তবায়নের প্রধান উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম ‘উদ্বেগজনক'। প্রণিধানযোগ্য এই যে, সরকারের মন্দিরভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম বরে জন্য ঐ বুদ্ধিজীবী মহল কোনরকম উচ্চবাচ্য করেননি। এখানে উনারা দাঁতে কুলুপ এঁটেছিলেন।
আসলে বিদেশী সাহায্যপুষ্ট পরভোজী একটি গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে গোলটেবিল বৈঠক, কখনো কাল্পনিক অভিযোগ তুলে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার বিরুদ্ধে সরকারি নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো ইসলামী মন মস্তিষ্কের ধারক বাহক জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে যেন এ বাংলাদেশের বুক থেকে বিলীন হয়ে যায়। তাই ঝোপ বুঝে কোপ মারা হয়েছে এই মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রমকে সমূলে উৎখাত করতে। অথচ সরকারের এই প্রকল্পে ব্যয় খুবই কম। কিন্তু দেশের বিশাল জনসাধারণকে অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম একটা সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করতে সর্বোতভাবে সক্ষম।
এমন একটি কার্যক্রমকেই এই প্রতিক্রিয়াশীল ইসলামবিদ্বেষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী চক্র ব করে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এদের এই হীন তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে। এরা প্রকারান্তরে ইসলাম, মুসলমান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর প্রতিশোধ নিতে উদগ্রীব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।