আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি আসলে ক্ষমতাশালীদের দলে অথবা একটি নির্দোষ অ-রম্য রচনা



ধারাবাহিক নিয়মে প্রতি বছরের মত এ বছরও নভেম্বরের ২২ তারিখ আমার জন্মদিন ছিল। এ ব্যাপারে কারো কোন সন্দেহও ছিল না। কারন এখন পর্যন্ত আমার সঠিক জন্মদিন প্রকাশের দাবী জানিযে কোন নোটিশ পাইনি। জন্মদিনটি নিয়ে ভাব নিয়ে যদি কিছু বলতে হয় তাহলে বলব,জন্মদিনের কথা কি আর মনে থাকে? আর যদি ভাব ছাড়া বলি তাহলে,অবশ্যই মনে ছিল। কারন আমি ভূলে গেলেও এ জাতি আমাকে তা ভুলতে দেয় না।

তারা চোখে আঙুল দিয়ে,দেয়ালে চিকা মেরে,গলির মোড়ে মোড়ে পোষ্টার লাগিয়ে মনে করিয়ে দেয়। আমি বুঝতে পারি,হে ইশতিয়াক আহমেদ ২২ তারিখ তোমার জন্মদিন। মাত্র একদিন বাকী আছে। কারন,চোখে আঙুল,দেয়ালে চিকা,গলির মোড়ের পোষ্টারে তখন ২০ তারিখের হিসাব নিকাশ। আমাদের তারেকের জন্মদিন।

এর একদিন পরেই আমার। ২. তারেকের জন্মদিনের কারনে আমার জন্মদিন মনে পড়ে,ভোলা হয়না। আমার আনন্দ লাগে। আবার মন খারাপও হয়। তারেকের জন্মদিন থেকে কেন আমার জন্মদিন মনে করতে হবে? মনের ভেতর থেকে বাংলা ছবির মতো বিবেক বেরিয়ে আসে।

আক্রমনাত্মক সুরে বলে,আরে বলদ তারেক ক্ষমতাশালী। তারা ক্ষমতায় ছিল। এক সময় হয়তো জয়কে নিয়েও হবে। তোর জন্মদিন নিয়ে এমন প্রত্যাশার তো কোন কারন দেখিনা। তোর কি ক্ষমতা আছে? না তুই কোনদিন ক্ষমতায় ছিলি? আমি চুপসে যাই।

আসলেই তো বিবেক ব্যাটার কথা সত্যি। আমার কি আছে? কখনো ক্ষমতা ছিলনা। ভবিষ্যতেও সে সম্ভাবনা নাই। তারপর বিবেকের সঙ্গে সামান্য বিবেকবোধ নিয়ে কথা বলি,তাহলে কি আমার কোন দাম নাই? কত ভালো মানুষ আমি। আমার বিরুদ্ধে দূর্নীতির কোন অভিযোগ ছিল না।

তথ্য গোপনের কোন প্রমাণ নাই। এমনকি জেলেও যাই নাই। তার উপর গুটি কয়েক উল্লেখযোগ্য গুণও আছে আমার, আমি সুরঞ্জিত সেনের মতো গুছিয়ে কথা বলতে পারি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মত নানা থিওরী দিতে পারি। এমন কি হোসেন জিল্লুরের মতো হাসি হাসি মুখ করে দিনভর ঘোরাঘুরি করতে পারি।

আমার কথায় বিবেক খুব একটা গুরুত্ব দিল না। তাই একখানা ভাবনা দিলাম। দিলাম ভাবনার সাগরে ডুব। ৩. দুতিন দিন ভাবনার পর একদিন সময় হঠাত আর্কিমিডিসের মতো ইউরেকা বলে চিতকার দিলাম তবে আর্কিমিডিসের মতো বস্ত্রহীণ হই নাই। শীতের দিন তো, আলমারির সব কাপড় গায়ে-ই ছিল।

চিতকারের কারন, আমি নিজে মতাশালী না হলেও আমি মতাশালীদের দলে। আমরা আহমেদরা এখন দেশের সব। আমাদের কেউ আবার ‌'আহমেদিয়া' স¤প্রদায় মনে করে ভুল করবেননা। কি যে ভালো লাগছিল আমরা ক্ষমতায় আছি বলে। আনন্দে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।

প্রমাণ হিসেবে উপর থেকে আসি, আমাদের প্রেসিডেন্টের নাম কি? ইয়াজউদ্দিন আহমেদ। প্রধান উপদেষ্টা? জনাব ফকরুদ্দিন আহমদ। সেনা প্রধান? জনাব মঈন উ আহমেদ। তারাও একই দলভূক্ত। লেখালেখির হিসেবে আসুন।

আহমেদ নিয়ে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তায় বসে আছেন একজন হুমায়ূন সাহেব। টিভি নাটক দেখুন এখনো যথেষ্ট ক্ষমতাশালী অভিনেতা অভিনেত্রী তৌকির আহমেদ,বিপাশা আহমেদরা। টিভির সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান এখন গানের প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান। সেদিকে তাকান, আহমেদ নিয়ে বিচারকের আসনে বসে আছেন একজন ইমতিয়াজ বুলবুল। আর গান, মডেলিং, সিনেমা এগুলো আর কষ্ট করে খুঁজতে গেলাম না।

তারা ছোট ছোট নাম ব্যবহার করেন। বড় নাম ঘাটলে দেখা যাবে আহমেদ ওয়ালারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে বেরিয়ে আসবেন। এই যে যারা ছদ্মনামে ব্লগে লিখছেন তাদের কথা ধরুন, তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালান ( ডোন্ট মাইন্ড) দেখবেন বেরিয়ে আসছে আহমেদ ওয়ালারাই। তাই কদিন ধরে আর মন খারাপ হচ্ছে না। জন্মদিন নিয়েও দুঃখবোধ নেই।

সবাই তো জেনে গেল আমি ক্ষমতাশালীদের দলে। তারা নিজেরাই আগামীতে হয়তো ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠবে আমাকে নিয়ে। পুনশ্চ: আচ্ছা কেউ কি বলতে পারেন, নমিনেশন ফরম বিক্রির ডেট কি ওভার হয়ে গেছে নাকি? সময় থাকলে, এই সুযোগে কোন সুবিধাজনক জায়গা থেকে একটু নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যাওয়া যেত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.