জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রায় কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠানের আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না নির্বাচন কমিশন। এমনকি প্রস্তুতি না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা ২৯ উপজেলার উপ-নির্বাচনও করতে পারছে না ইসি। আর নবগঠিত চার উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচনও দশম সংসদ নির্বাচনের আগে হচ্ছে না। গত ২৫ জুলাই থেকে দেশে উপজেলা নির্বাচন করার সময় হয়ে গেলেও ইসি তা নিয়ে ভাবছে না বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
ইসি সূত্র জানায়, দশম সংসদ নির্বাচনের পরপরই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানেও প্রস্তুত নয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি দেশব্যাপী উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারছে না তারা। ইসি মনে করছে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গেলে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে। এক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরে মেয়াদের মধ্যে দেশের ৪৯১টি ও নবগঠিত চার উপজেলায় নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এর আগে ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি সারা দেশে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষের ১৮০ দিন পূর্বেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার কথা।
সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যদিকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনও করতে হবে ইসিকে। জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিশাল প্রস্তুতির দরকার আছে। এ নির্বাচনের আগে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গেলে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হবে। আইনিভাবে বাধ্য না হলে জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো বড় নির্বাচন করবে না ইসি।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, নভেম্বর বা ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন তফসিল দিয়ে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচনের বছর হলেও এ বছরই বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য ইসি।
গত জুলাই থেকে জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয়সহ অন্যসব প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে ইসি। কিন্তু ২৫ জুলাই থেকে দেশের সব উপজেলা নির্বাচন হওয়ার কথা। প্রায় বিশ বছর পর ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি তৃতীয় উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় একসঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারির মধ্যে উপজেলা নির্বাচন না করলে আইনি জটিলতায় পড়বে ইসি। এদিকে গত জুন ও আগস্টে উপ-নির্বাচন ও নবগঠিত উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কমিশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিলেও তা আর করতে পারল না। নবগঠিত উপজেলা পরিষদে ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু নবগঠিত পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটিতে নির্বাচনের সময়সীমা ১৮০ দিন শেষ হয়ে গেছে।
এখন নির্বাচন করতে হলে স্থানীয় সরকার বিভাগকে আবারও সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এ নিয়ে কোনো মতামত দেয়নি। গত আগস্টে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও নবগঠিত ৪ উপজেলা পরিষদসহ মোট ৩৪ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ২৫ সেপ্টেম্বর এসব উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য ভোটের তারিখও নির্ধারণ করে। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের আপত্তির কারণে এ নির্বাচন থেকে সরে আসতে হলো ইসিকে।
যদিও ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের এ নির্বাচন তারা না করলে ইসির কিছু করার নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচন সরকার যখন বলবে তখনই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।