(৮) উমর ইবনে আব্দুল আজিজের প্রমাণ স্বরূপ উত্থাপিত গাদীরের হাদিস ঃ
ইয়াজিদ ইবনে উমর নামক একজন বলেছেনঃ আমি শামে (সিরিয়াতে) ছিলাম, উমর ইবনে আব্দুল আজিজ কিছু সম্পদ বন্টন করছিলো, আমিও আমার অংশ নেওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম, যখন আমার পালা আসলো, বললঃ তুমি কোন বংশের? আমি বললামঃ কোরাঈশ বংশের। বললঃ কোন গোষ্ঠীর? বললামঃ বনী-হাশিম গোষ্ঠীর। বললঃ কোন পরিবারের? বললামঃ আলীর আত্মীয়দের মধ্য হতে। বললঃ কোন আলীর? আমি উত্তর দিই নি। তখন উমর ইবনে আব্দুল আজিজ তার বুকে হাতমেরে বললঃ আল্লাহর কসম! আমিও আলীর আত্মীয়দের মধ্য হতে।
একদল লোক আমাকে বলেছে যে, রাসূল (সাঃ) তার সম্পর্কে বলেছেনঃ “আমি যাদের মাওলা এই আলীও তাদের মাওলা। ”
তখন সে তার সহকারীর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললঃ এ রকম ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লোককে তুমি কি পরিমাণ দিবে? বললঃ একশ’ থেকে দুইশ’ দিরহাম। বললেনঃ তাকে তুমি ৫০ দিনার দাও। কারণ, সে আলীর শাসনামলের লোক। আমাকে বললঃ তুমি তোমার শহরে ফিরে যাও, তোমার প্রাপ্য তুমি সেখানেই পাবে।
(৯) আব্বাসীয় খলিফা মামুনের প্রমাণ উত্থাপিত হিসেবে গাদীরের হাদিসঃ
প্রসঙ্গক্রমে মামুন ও বিচারপতি ইসহাক ইবনে ইব্রাহিমের মাঝে রাসূলের (সাঃ) সাহাবীদের মর্যাদা নিয়ে সে যুগে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল, তখন মামুন তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলঃ তুমি কি শাসন কর্তৃত্বের হাদিসটি বর্ণনা কর? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ করি। মামুন বললঃ হাদিসটা পাঠ কর। ইয়াহহিয়া হাদিসটি পাঠ করলো। মামুন জিজ্ঞেস করলোঃ তোমার দৃষ্টিতে কি এই হাদিসটি আলীর ----------
ইসহাক বললঃ বলা হয় যে, রাসূল (সাঃ) এই হাদিসটি ঐ সময় বলেছিলেন যখন আলী ও যাইদ ইবনে হারিসের মধ্যে এক মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। রাসূলের (সাঃ) সাথে আলীর আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা যাইদ অস্বীকার করেছিল; আর এই কারণেই রাসূল (সাঃ) বলেছিলেনঃ “আমি যাদের মাওলা এই আলীও তাদের মাওলা” ---।
মামুন বললঃ যাইদ ইবনে হারিসা গাদীরের পূর্বেই শহীদ হয়েছিলেন। তুমি কিভাবে এটা মেনে নিলে যে, রাসূল (সাঃ) এই হাদিসটি তার কারণেই বলেছেন? আমাকে বল যদি তোমার পনের বছরের ছেলে মানুষকে বলে যে, হে জনগণ! আপনারা জেনে নিন যে, যাদের আমার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে, আমার চাচাতো ভাই-এর সাথেও তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। তুমি কি তাকে বলবে না যে, যে বিষয়টা সবার জানা ও কারো কাছে যেটা অস্পষ্ট নয়, কেন তুমি সেই বিষয়টার পুনরাবৃত্তি করছো? বললঃ “কেন, অবশ্যই তাকে বলবো”। মামুন বললঃ এই ইসহাক! যে কাজটি তুমি তোমার পনের বছরের ছেলের ক্ষেত্রে মেনে নিচ্ছনা, তাহলে কিভাবে ঐ একই বিষয় রাসূলের (সাঃ) ক্ষেত্রে মেনে নিলে? আক্ষেপ হয় তোমাদের উপর, কেন তোমরা তোমাদের ফকীহ্দের (ফিকাহ্বিদদের) ইবাদত কর?
যেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় যে, আলীর (আঃ) খেলাফত বা শাসনামল ছিল এই কথোপকথোনের কেন্দ্র বিন্দু। প্রামাণিকগণ এই হাদিস দ্বারা, আলীর (আঃ) খেলাফতকে প্রমাণ করেছেন।
আর বক্তাগণও কখনো বলেননি যে, এই হাদিসে “মাওলা” শব্দটি নেতা বা অভিভাবক ব্যতিত অন্যকিছু। যদি উক্ত হাদিসে আলীর (আঃ) নেতৃত্ব ব্যতিত অন্য কোন অর্থ থাকতো, তাহলে আবু হোরায়রা এভাবে বিনীত হয়ে জনাব আসবাগ ইবনে নাবাতার সামনে দীর্ঘশ্বাস ফেলতো না ও লজ্জিত হত না এবং আমর ইবনে আস, আম্মারের কাছে নিরস্ত্র হয়ে আত্মসর্মপন করতো না।
সুতরাং যদি কেউ যে কোন অভিসন্ধির কারণে গাদীরের হাদিসের প্রতি সন্দেহপোষণ করে তাহলে সে শুধু সত্যকেই গোপন করেনি বরং রাসূলের (সাঃ) বানীকেও বিকৃত করেছে এবং আব্বাসীয় খলিফা মামুনের কথায় রাসূলের (সাঃ) সঙ্গে এমন কিছু জুড়ে দিয়েছে যা, এক পনের বছরের ছেলের সাথেও জুড়ে দেওয়া সম্ভবপর নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।