আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একিট ঘটনা এবং..... [বিষয় জাতীয় চলিচ্চত্র পুরস্কার]



একটি ঘটনা এবং... এম এস রানা ২৩ অক্টোবর ২০০৮। চলচ্চিত্রমোদী মানুষেরা অপেক্ষায় ছিল এ দিনটির জন্য। কারণ, বিগত ছয় বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হবে এই দিনে। অনুষ্ঠানের আগেই অনেকে অভিযোগ করলেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে। সমাধান হলো।

অনেকেই অভিযোগ করলেন আসন বণ্টন নিয়ে। তারো সমাধান হলো। অবশেষে এমনি ছোট খাট নানা ভিঘ্ন পেরিয়ে এলা ২৩ অক্টোবর। নির্দিষ্ট সময়ে চলে এলেন আমন্ত্রিত অনেক অতিথি। দেরি হলেও চলে এলেন প্রধান অথিতি, এলন বিশেষ অতিথিরাও।

অনুষ্ঠান শুরু হলো। একে একে শিল্পী ও কলাকুশলীরা মঞ্চে এসে পুরস্কার নিলেন। দু-একটা ভুলও হলো। এত দীর্ঘ সময়ের অনুষ্ঠানে এমন একটা-দুটো ভুল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে অস্বাভাবিক লাগল অন্য আয়োজন।

এ ধরনের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গান কিংবা নৃত্য পরিবেশন এখন প্রায় নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সাধারণ অনুষ্ঠানেও দেখা যায় তারকাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ, দৃষ্টি নন্দন পরিবেশনা। কিন্তু একটা জাতীয় অনুষ্ঠানে সে ঘাটতি টের পেয়েছেন প্রতিটি দর্শক। গানের শিল্পীরা লিপসিংক্ করেছেন, এটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু, যে প্লেয়ারটাতে তাদের গান বাজানো হলো সেই প্লেয়ারটা ত্রুটিমুক্ত কি-না তা আগে থেকে পরীক্ষা করে নিলেই কিন্তু শিল্পীদের এমন বিব্রত হতে হতো না।

আরো যে বিষয়টা চোখে লেগেছে তা হলো, চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা বিরোধী একটি নাটিকা পরিবেশন এবং একই অনুষ্ঠানে অশ্লীলতার দোষে দুষ্টু এক চিত্রনায়িকার নৃত্য পরিবেশন! অনেকেই তারকাই আসেননি পুরস্কার পাননি বলে। যেখানে দেশসেরা তারকাদের জাতীয় পর্যায়ে সম্মানীত করা হচ্ছে সেখানে কেবল পুরস্কার প্রাপ্তরাই এসেছেন। পুরস্কার না পেলে কি অনুষ্ঠানে আসা যায় না? অনুষ্ঠানে উপস্থিতির পূর্ব শর্তই কি তবে পুরস্কার প্রাপ্তী? আচ্ছা, যিনি সেরা অভিনেতা বা অভিনেত্রী নির্বাচিত হলেন পুরস্কারের অর্থমূল্য তাকে কতটা সম্মানীত করে? তারচেয়ে এমন যদি হতো, একজন সেরা অভিনেত্রা বা অভিনেত্রী কিংবা পরিচালক এক বছর দেশে ভিআইপির মর্যাদা পাবেন, তবে জাতীয় এ পুরস্কারটি সত্যিকার অর্থেই অর্থবহ হতো, সম্মানীত হতেন একজন অভিনয় শিল্পী। অনুষ্ঠান যখন সমাপ্তির পথে তখন ঘড়ির কাঁটা তখন মধ্যরাত ছুঁই ছুঁই। হল দর্শকশূন্য, অনুষ্ঠান চলছে।

টিভি স্ক্রিনেও দেখা গেল সেই দৃশ্য। উপস্থাপক আলমগীরও [চিত্রনায়ক] কৌতুক করার লোভ সামলাতে পারলেন না। গল্প বললেন এরকম- এক অনুষ্ঠানে চোখ বন্ধ করে গাইতে শুরু করলেন এক লোক। অনেক্ষণ পর চোখ খলে দেখলেন হলে কেবল একটি লোক বসে আছেন। তিনি ভাবলেন, এই লোকটাই বুঝি তার গানের সত্যিকার সমঝদার আদমী।

কিন্তু লোকটি বললেন তিনি আসলে এ হলের কেয়ারটেকার। বসে আছেন কখন তিনি বেরোবেন সে অপেক্ষায় কারণ, তিনি বেরোলেই হল তালা মারবে লোকটি। সরাসরি অনুষ্ঠান। বিটিভি ওয়ার্ল্ডের কল্যাণে কেবল দেশবাসীই নয়, বিদেশের দর্শকও দেখলেন বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের এসব দৃশ্য! ছয় বছর হয়ে গিয়েছিল আমাদের দেশে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেোয়া বন্ধ ছিল। যদিও এ পুরস্কার প্রাপ্তিতে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর জীবনে বড় কোনো পরিবর্তন আনে না বলেই অনেকের ধারণা।

তবে জাতীয় পর্যায়ে একটা স্বীকৃতি তো মেলে! ভালো কাজ করে সেই কাজের স্বীকৃতি পেলে কার না ভালো লাগে? আনন্দের কথা হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাদন প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। এটা আয়োজনের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গন নতুন করে গতি পাবে সন্দেহ নেই। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আগে থেকে ভেবেচিন্তে অনেক সুন্দর একটা অনুষ্ঠান কি করা যেত না? যেন সার্বিক অর্থেই আয়োজনা সবাইকেসম্মানীতকরে, সবার মাঝে ভালোলাগার জন্ম দেয়। এ পুরস্কার প্রাপ্তি একজনকে গর্বিত করে? এটা না করা গেলে কিন্তু অন্য অনেক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রতিও আস্থা হারিয়ে ফেলবে সবাই!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.