ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের পরীক্ষাগার অনুমোদিত নয় বলে দুধে মেলামাইনের বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় নি সরকার। সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও খাদ্য উপদেষ্টা ড. এএমএম শওকত আলী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলুফার নাহার দি এডিটর ডট নেটকে বলেছেন,দুধে মেলামাইনের ফলাফল যদি সরকারের মন মতো না হয় তবে পরীক্ষার জন্য তাদের কাছে পাঠানো হল কেন
খাদ্য উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে খাদ্যের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য উন্নত দেশের আদলে দেশে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্টেশন নামে একটি সংস্থা করা হবে। আগামী ২ বছরের মধ্যে এই সংস্থাটি কাজ করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। স্বাস্থ্য ও খাদ্য উপদেষ্টা এ এম এম শওকত আলী বিদেশ থেকে মেলামাইন মিশ্রিত দুধের ফল না আসা পর্যন্ত গুড়োঁদুধ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সবাইকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে দুধে মেলামাইন পরীক্ষার পরও কেন সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না তার জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা হয়েছে তা যথাযথভাবে অনুমোদিত নয়। বিধায় এর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি পরীক্ষাগার স্থাপনের জন্য যে অনুমোদনের দরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তা নেই।
অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও সরকার কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠালো- এ ব্যাপারে কোন জবাব দেন নি উপদেষ্টা শওকত আলী। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুধে মেলামাইন পরীক্ষা কমিটির গবেষক ড. নিলুফার নাহার প্রশ্ন তুলে বলেন, দেশের কোন ল্যাবরেটরি অনুমোদিত।
সরকার যে অনুমোদনের কথা বলছে বিএসটিআই ছাড়া বাংলাদেশে তো সে রকম অনুমোদিত ল্যাবরেটরি নেই। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরকার অনুমোদিত একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু আমাদের গবেষণার ফলের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।
ড. নিলুফার নাহার প্রশ্ন করে বলেন, আমাদের ল্যাবরেটরিতে অননুমোদিত বলছে তবে আমাদের কাছে পাঠানো হলোই বা কেন।
খাদ্য উপদেষ্টা জানান, আগামী চার পাঁচ দিনের মধ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আঞ্চলিক কার্যালয় ব্যাংক থেকে সেখানে পরীক্ষার জন্য দুধে মেলামাইনের ফল পাওয়া যাবে। সরকার তখন সিদ্ধান্ত নেবে। এ সময়ের মধ্যে গুড়োঁ দুধ না খাওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। উপদেষ্টা আরো বলেন, মেলামাইন মিশ্রিত গুড়োঁদুধের ব্যাপারে ইতোমধ্যে হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছে সরকরা তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছে।
চীনের গুড়োঁ দুধে মেলামাইন পাওয়ার পর সরকার গত মাসে দুধে মেলামাইন পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগকে পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়। রসায়ন বিভাগ ১৪ অক্টোবর তাদের প্রতিবেদনে জানায়, চীনের ইয়াশলী -১, ইয়াশলী -২ ও সুইট বেবী ২,ডেনমার্কের ডানো, অস্ট্রেলিয়ার রেডকাউ ও ডিপ্লোমা এবং নিউজিল্যান্ডের অ্যানলিন ও নিডো ফর্টিফাইড দুধে মেলামাইনের অস্তিত্ব মিলেছে।
এরপরও সরকার গুড়োঁ দুধগুলোর বিক্রি নিষিদ্ধ না করায় গত ২৩ অক্টোবর হাইকোর্ট ওই গুড়োঁ দুধ বিক্রি, বিতরণ ও প্রদর্শন বন্ধের আদেশ দেয়।
সুত্র : দি এডিটর
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।