skype :: hasib.zaman
১।
মায়াবতী একটা পাত্রী চাই, যার থাকবে মায়াবী দুটি চোখ আর - সারাক্ষন ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি।
আরে নাহ্ আমার জন্য না, পাত্রীটা আমার ইটালী প্রবাসী মামার জন্য।
মামা, পাত্রীর আর কী কী গুণ থাকা লাগবে? – জানতে চাই আমি।
- এই ধর, গান জানা মেয়ে হলে বেশ হয়।
নিশুতি রাতে সে আমাকে শোনাবে, আমারো পরানো যাহা চায় .. .. .. কিংবা আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে .. .. ..ইত্যাদি ইত্যাদি।
- আর কি কোয়ালিফিকেশন মামা?
- তোরা তো জানিস আমি খেতে খুব ভালোবাসি। তাই আমার বউকে রান্নায় পাঁকা হতে হবে মাস্ট। বিদেশে আজেবাজে ফাস্টফুড খেতে খেতে শরীরের কি অবস্থা হয়েছে দ্যাখ।
মামার কথা শুনে অবাক হয়ে তার বিশাল বপুর দিকে তাকাই, নাহ্ মামাকে মমতাজের সাথে নতুন অ্যাডে নিলে মন্দ হবে না।
আমার কাজিন জিজ্ঞেস করে,
- তা মামা, মামীর রূপের বর্ননা তো দিলা না। ক্যামন ফিগার লাগবে- মোটা না পাতলা?
লম্বা না তোমার সাইজের (মামা আবার একটু ইয়ে মানে বল্টু টাইপের) ?
চুল কি লম্বা হবে না বয়কাট?
মামা এবার খুব বিজ্ঞের মতো উত্তর দিলেন,
- এ ব্যাপারে তোরা ঐশ্বরিয়াকে একটা মাস্টারপিস হিসেবে ধরতে পারিস। ওর ধারে কাছে যা পাস তাই আমাকে আগে দেখা। এরপর ফাইনাল সিলেকশনটা আমি ধীরেসুস্থে করব। হা-হা-হা .. .. ..
এই মুহুর্তে মামাকে আমার খুব হিংসা হচ্ছে – ব্যাটা নিজের চেহারা-সুরতের খবর নাই, তার বউ লাগবে ঐশ্বরিয়া মানের ! ইন্টার ফেল করে কোনরকমে ইটালী গিয়েই কেল্লাফতে।
আর আমাদের দেশের অভিভাবকেরা তো বাইরের দেশের সিটিজেনশীপ পাওয়া একটা ভেড়াকে পেলেও চোখবুজে তাদের মেয়ে দিয়ে দেবে।
ধূর ছাই, এত কষ্ট করে ভার্সিটিতে পরে লাভটা কী? তারচেয়ে বরং মামার সাথে ইটালী চলে যাই, ফিরেই বিয়ে আহা! মামার এমন ভরা পৌষ মাস দেখে ভাবতে থাকি ইন্টারে বোর্ডস্ট্যান্ড না করে ফেল মারলেই ভাল ছিল।
মামার কথায় ধ্যানভঙ্গ হয় আমার
- তোর ভার্সিটিতে তো অনেক স্মার্ট সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে, তাই নারে?
আমার মেজাজ গেল চরমে
- হ্যাঁ, আছেই তো। তা আমি কি এখন তাদের গিয়ে বলব, এক্সকিউজ মি আপু, আপনি কি আমার মামী হবেন ?!
২।
মামা-ভাগ্নে দুজনে মিলে গিয়েছি পাত্রী দেখতে, আয়োজন হয়েছে পিজা হাটে।
পাত্রীর সাথে এসেছে তার খালা-খালু এবং মামা। আমার মামা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পাত্রীকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করছেন।
মেয়েটা এক কথায় অসাধারন সুন্দরী, আর খুব লাজুক। দুধে আলতা মেশানো গায়ের রং।
সত্যি বলছি, এই মেয়েকে মামী ডাকতে হলে আমি মরেই যাব।
শেষে আরেকটা রাধাঁ-কৃষ্ণ প্রেমকাহিনী হয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা। মেয়ে টা মাঝে-মধ্যে চোখ তুলে আমাকে দেখছে। আর আমি এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি ত আছিই।
তা হঠাৎ পাত্রীর খালা মামাকে বললেন,
- আপনি একটু আমাদের সাথে ওদিকটায় আসুন। ওরা দুজন একান্তে কিছুক্ষন কথা বলুক।
মামা একদম ভ্যাবাচ্যাকা খেলেন
- না, মানে আমি আমি … …
আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তারা মামাকে অন্যদিকে নিয়ে গেলেন। আমি মামার করুন প্রস্থান পর্ব দেখে হবু মামীর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম। সেও তখন আমার দিকে তাকিয়ে ভুবন-ভুলানো হাসি দিয়ে বললো
- আপনার মামাটা না খুব ভাল।
আমিও মুচকি হেসে সায় দিলাম
- হ্যাঁ, আসলেই মামা খুব ভাল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।