আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
ভদ্রতার মুখোশে পক্ষপাতদুষ্টতা
Click This Link
অগ্রজ হুমায়ুন আহমেদের মতন তার অনুজ ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবালও নিজেকে লাইম লাইটে তথা বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে চান। ডঃ ম. জ. ইকবাল নিয়মিত ভাবে দৈনিক প্রথম আলোতে সাধাসিধে কথা নামক নির্ধারিত শিরোণামে বিভিন্ন বিষয় বস্তু নিয়ে কলাম লিখেন। সর্বশেষ ১০ই অক্টোবর ২০০৮, ঐ একই শিরোণামে তিনি রাজনীতি নিয়ে সম্পূর্ণ একপেশে, বহুলাংশে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এবং খন্ডিত-বিকৃত তথ্য উত্থাপন করত আবারও অসততার পরিচয় দিলেন। নিম্নে তার উক্ত লেখনীর বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত ও বিশ্লেষণ করব।
আর্টিকেলের প্রথম অংশে তিনি লিখেছেন যে রাঘব বোয়ালদের ধরা হয়।
কিন্তু তিনি বলেন নি যে আসলেই সব রাখব বোয়ালদের ধরা হয়েছে কিনা এবং সবাই অন্তত এনবিআরের উল্লেখিত সকলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিনা। গত বছর (১৮/১০/২০০৭) এনবিআর তথা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব বদিউর রহমান কে তার পদ হতে সরকার প্রত্যাহার করে নেন।
Click This Link
এর কারণ যে তিনি অত্যন্ত সততার সাথে দেশের বিভিন্ন আলোচিত-সমালোচিত রাঘব বোয়ালদের কে সম্পত্তীর বিবরণ প্রদানের জন্য লিষ্ট করেছিলেন। খালেদা-হাসিনা ও তাদের রাজনৈতিক দল সহ অন্যান্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন ব্যাবসায়ী সহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের কাছে এতদাসংক্রান্ত নোটিশ পাঠানো এবং নোটিশ পাঠানোর পূর্বে পত্র-পত্রিকা মারফত তাদের নাম প্রকাশ করেছিলেন। শেষমেশ সাবের হোসেন চৌধুরী, লতিফুর রহমান (ট্রান্সকম গ্রুপ কাম প্রথম আলো প্রকাশক) সহ তথাকথিত সুশীল সমাজ ভারত-মার্কিন ঘেষা বেশ কয়েকজন কে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আগাম তথ্য সাংবাদিক মারফত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও বেসরকারী টিভি চ্যানেল সমূহে প্রকাশ করলে বদিউর রহমান তার পদ হতে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পরে অপমান ও ক্ষোভে জনাব বদিউর রহমান স্বেচ্ছায় অবসরে চলে যান এবং বলেন ”চাকর হয়ে মনিবের মন জয় করতে ব্যার্থ হয়েছি”;
Click This Link
কিন্তু ডঃ জাফর ইকবাল কখনই এ বিষয়ে কোন লেখা লিখেন নি। পাছে যদি প্রথম আলো গং তার উপর নাখোশ হয়। স্পষ্টতই ডজন মামলা হতে জামিন লাভ তিনি তারেক রহমান কে বুঝিয়েছেন। যদি হাসিনা, জলিল ও সাজাপ্রাপ্ত নাসিম সংকটাপন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য উচ্চতর সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারেন সেখানে সরকারী মেডিকেল বোর্ড কতৃক বিদেশে ভালো চিকিৎসার জন্য তারেক রহমানের জন্য সুপারিশ করা হলে কেন ডঃ মু. জা. ইকবাল ও আওয়ামী-বাকশালী গং নাখোশ হন? এটা একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল। একটি মানুষের যখন যথাযথ চিকিৎসার অভাবে জীবন বিপর্যস্ত তখন তার বিরুদ্ধে রাজনীতি স্রেফ অমানুষের কাজ।
কই বিএনপি বা আওয়ামিলীগ বিরোধী পক্ষ তো হাসিনা, জলিল ও নাসিমের চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমন নিয়ে বিরোধীতা করেন নি। উল্লেখ্য জনাব নাসিম ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েও হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিন পান। তাই ডঃ মু. জা. ইকবালের সাথে কি আওয়ামী-বাকশালীদের সুর একতাল হয় না?
জাফর ইকবালের বাম সন্ত্রাসীদের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়া কে নিয়ে খুবই মায়াকান্না হয় এবং উনার মনে প্রশ্ন উদিত হয় কেন তথাকথিত জঙ্গী মৌলবাদীদের ক্রসফায়ারে দেওয়া হয় না। ১৯৭২ সাল হতে আজ অবধি তথাকথিত মৌলবাদী জ্ঙ্গীদের দ্বারা সাধারণ মানুষের নিহত, আহত হওয়ার চেয়ে বেশী সর্বহারা, যনযুদ্ধ, লাল পতাকা, জনযুদ্ধ ইত্যাদি উগ্র সমাজতান্ত্রিক দল সমূহের হাতে অনেক অনেক বেশী। ঠিক যেমন ভারতে মাওবাদীরা ব্যাপক হত্যা ও অরাজকতার খবর মিডিয়ায় তেমন আলোচিত না হলেও বিভিন্ন বোমা বিস্ফোরণে ভারতীয় মুসলমানদের কে ও বিভিন্ন ইসলামী দলকে ব্যাপক সমালোচনা দিনের পর দিন চলতে থাকে।
অথচ শায়খ রহমান, বাংলা ভাই সহ শীর্ষস্থানীয় ৬ জেএমবি নেতা জোট সরকারের আমলে গ্রেফতার হয় এবং নিম্ন আদালতে তাদের মৃত্যুদন্ডেরর রায় হয়। অথচ এই জে.এম.বি ১৯৯৮ সালে গঠিত হয় এবং সেই সময় থেকেই বাংলাদেশে বোমাবাজি তথা জঙ্গী তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু জাফর ইকবাল সাহেব আলীগ কে কোন প্রশ্ন করেন নি কেন তারা শায়াখ রহমান কে গ্রেফতার করতে পারল না? ইদানিং ভারতের একটি উগ্র হিন্দুবাদী দলের কর্মী বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হয়। পরবর্তীতে পুলিশের কোন তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায় নি। আর তার দলের নেতা এটাকে সাফাই গায় যে এর সাথে তার দল জড়িত নয়;
Click This Link
বস্তুুত এরা অস্বীকার করলেও সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় প্রমাণিত হয় ভারতীয় মুসলমান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কে বদনাম করার জন্য ভারতীয় উগ্রবাদী হিন্দু দল সমূহ গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
আমরা জানি জেএমবির কাছে সরবারাহকৃত অস্ত্র, বোমা সরঞ্জামের সব কিছুই ভারত হতে আগত। এত ব্যাপক বিস্ফোরক বাংলাদেশে ঢুকল আর ভারত সরকার তার কিছুই জানে না এটা স্রেফ অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু তথাকথিত সাধাসিধে ব্যাক্তি ডঃ জাফর ইকবাল এ নিয়ে কোনদিন প্রশ্ন তুলেন নি এবং মনে হয় জীবনেও কোনদিন প্রশ্ন তুলবেন না।
উনি বিএনপি-জামাতের জোট সরকার কে দুঃশাসন বললেন। মনে হয় ১৯৯৬-২০০১ যেন বাংলাদেশের মানুষ স্বর্গে ছিল।
ডাঃ ইকবাল, হাজী মকবুল, হাজী সেলিম, শামীম ওসমান, হাজারী, আবুল হাসনাত গং বাংলাদেশের মানুষ কে দারুণ স্বস্তিতে রেখেছিল। ফেনী, নারায়াণগঞ্জ, বরিশালে ১৯৯৬-২০০১ এ জামাত তো দূরে থাক বিএনপিকেও রাজনীতি করতে দেওয়া হয় নি। তখন কেন মুখে কুলুপ এটেছিলেন ডঃ জা. ইকবাল? আর আমরা সবাই জানি হাসিনার সময় বিশ্বে অপরিশোধিত জ্বালানী তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৮ হতে ২৪ ডলার ছিল। কাজেই শেখ হাসিনার সময় খাদ্যশস্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কোন কারণ নাই। বরং জোট সরকার ৯/১১ পরবর্তী পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় আসার আগেই তেলের মূল্য ৪০ডলার/ব্যারেল ঠেকে।
পরে ২০০৩ এ ইরাক যুদ্ধ এ দাম দাড়ায় ৭০ ডলারের অধিক। তারপরও জোট সরকারের ক্ষমতা ছাড়ার সময় বেসরকারী পর্যায়ে অর্থাৎ বাজারে মোটা চালের ১৮টাকা/কেজি তে পাওয়া যেত। যা শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছাড়ার সময় কেজি প্রতি ১৪ টাকা ছিল (সুত্রঃ দৈনিক জনকন্ঠ ১০ই অক্টোবর ২০০৫ইং)। কিন্তু জ্ঞানপাপী ডঃ জা. ইকবাল বিশ্ব পরিস্থিতি ও স্থানীয় বাজারের প্রকৃত মূল্য বিবেচনা না করেই জোট সরকার কে বদনাম করলেন। অথচ বর্তমানে সেই চালের মূল্য ৩৬ টাকা কেন তা নিয়ে ভদ্র রুপী ডঃ জাফর ইকবালের কোনই উচ্চ বাচ্য নেই।
তারেক রহমান অবৈধ ভাবে টাকা উপার্জন করেছেন এবং পাচার করেছেন এর কোন প্রমাণ ফখরুদ্দিনের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে পারেন নি। বরং শেখ হাসিনার ব্যাক্তিগত সহকারী ডঃ আউলাদের ব্যাংক একাউন্টে ৬০০ কোটি টাকা কোথা থেকে এল তা নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলেন না। আর ম্যাগাজিন প্রোবের খবর উদ্ধৃত করে আমাদের সময়ের রিপোর্টে টেক্সাস, ভার্জিনিয়ায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিলাস বহুল দামী বাড়ী এবং ফ্লোরিডায় ২০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের কোন খবর জেনেও না জানার ভান করেন ডঃ জাফর ইকবাল।
উনি রাষ্ট্রপতি জনাব ডঃ ইয়াজ উদ্দিনের অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা হওয়া কে নিয়ে তার সন্তানদের উৎকন্ঠার কথা বললেন। অথচ তিনি বললেন না যে আইন মোতাবেক বৈধ ভাবে কে. এম. হাসানের ঐ সময় প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা।
তাই আওয়ামী-বাকশালী গং প্রতিহিংসাবশত ২৮শে অক্টোবর ২০০৬ সালে পৈশাচিক ও অসভ্য-বর্বরের মতন জামাতের ৫/৬ কর্মীকে প্রকাশ্য রাজপথে পিটিয়ে অমানুষ জংলীদের মত উদ্বাহু নৃত্য করল এ নিয়ে ডঃ জাফরের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তিনি বিএনপি জামাত জোটের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনলেন, অথচ সামপ্রতিক ইতিহাস বাদ দিয়ে তিনি ইয়াজউদ্দিনের ব্যাপারে এত্ত ভয়ে তটস্থ হলেন। তিনি কি দেখেন নি মোট ৫ জন কে ডিঙিয়ে শেখ হাসিনার সরকার বিচারপতি লতিফুর রহমান কে প্রধান বিচারপতি করে। এ নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারক যিনি লতিফুর রহমানের সিনিয়র বিচারক কাজী শফিউদ্দিন সাহেব ২০০০ সালে পদত্যাগ করেন এবং যূগান্তরে তার ন্যায্য পদন্নোতি বঞ্চিত হওয়ার ব্যাপারে স্বাক্ষাৎকার দেন। এ ছাড়াও হাসিনার নিজ জেলার গোপালগঞ্জের লোক এম. এ. সাঈদ কে সিইসি করা এবং ৮ জন কে ডিঙিয়ে লে. জেনারেল হারুন কে সেনাবাহিনী প্রধান করা হয়, তখন কি ডঃ জাফর ইকবাল চোখ, কান বন্ধ করে রেখেছিলেন।
আর মনে শেখ হাসিনা যখন ১লা অক্টোবর ২০০১ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়ে বলেন যে ”বেড়া দিয়েছিলাম ক্ষেত রক্ষার জন্য সেই বেড়াই আমার ক্ষেত খেয়ে ফেলল” তখন জাফর ইকবাল শিয়ালের গর্তে ঘুমিয়ে ছিলেন। নিজেরা করলে দোষ নেই কিন্তু প্রতিপক্ষ করলে যত্ত দোষ। এটাই হল মতলব বাজ ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবালের কাছে খুবই সাধা সিধে ব্যাপার।
লেখার শেষাংশে হাজার বছরের বাঙালীর সংস্কৃতির ঐতিহ্য এ দেশে জাতীয় ভাবে তথা সরকারী ভাবে পালনের আশ্বাস চেয়েছেন, তা সরকার আলীগ বা বিএনপি যেই হৌক না কেন। যদি আলীগ ক্ষমতায় আসে তো তার দ্বাবী রাখবে এ বিষয়ে সন্দেহের কোনই অবকাশ নেই।
কিন্তু যদি পুনরায় বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে তো তথাকথিত হাজার বছরের ঐতিহ্যের নামে অর্থাৎ বাঙালী সংস্কৃতির মুখোশে পৌত্তলিক কালচার বিএনপি-জামাত জোট সরকার কেন জাতীয় ভাবে পালন করবে? এটা কি তার মামা বাড়ীর আবদার? উনি কি ইতিহাসে পড়েন নি যে এ অঞ্চলের ব্যাপক সংখ্যক হিন্দু ও বৌদ্ধগণ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হল তখন বিশেষ করে হিন্দুরা ১৯৪৭ পর্যন্ত বাঙালী মুসলমানদের বাঙালী না বলে স্রেফ মুসলমান বলেছে। তাই হাজার বছরের তথাকথিত বাঙালী ঐতিহ্যর নামে যে সকল সংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে তা আসলে বেশীর ভাগই হিন্দু ধর্মের অংশ। যেমন বটমূলে আসর যা হিন্দু রমণীরা ১লা বৈশাখে পুজা দেয়, বড় বড় টিপ-সিদুর-তিলক, শঙ্খ ধ্বনি-মন্দিরা, ধুতি পরিধান, মঙ্গল প্রদীপ ইত্যাদি আরো বিষয় আছে যা হিন্দু ধর্মের নিয়ম সেগুলো কেন বাংলাদেশের সিংহভাগ বাঙালী মুসলমান অনুসরণ করবে? যেখানে বিগত হাজার বছরে হিন্দুরা স্রেফ নিজেরা বাঙালী সেজে ও দ্বাবী করে, এ দেশীয় সেই সকল বাঙালী যারা ধর্মে মুসলমান তাদের কে বাঙালী বলে অস্বীকার করে নিজেদের ধর্মীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি কে বাঙালী বলে চালিয়ে দেওয়া স্রেফ মুসলমানদের ইমান নষ্ট করার ষড়যন্ত্র। উনি বাংলাদেশের মানুষ কে ধর্মান্ধ বলেন আসলেই কি আমরা সব্বাই ধর্মান্ধ? মুষ্টিমেয় কিছু ধর্মান্ধ তাদের জন্য সবাইকে ধর্মান্ধ হয়ে যাওয়া আসলে দূরভিসন্ধি মূলক। এ দেশের ৯০% মানুষ মুসলমান, তাই তাদের কে শিরকী ও কুফরী করতে বললে সচেতন আলেম সমাজ ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ ও আন্দোলন করবেই।
তাই বাংলাদেশের ৯০% মুসলমান কে জোড় পূর্বক সেক্যুলার শিক্ষার নামে কুফরীতে দীক্ষা দেওয়ার কথা বলা বাংলাদেশ কে অশান্ত, অস্থিতিশীল করে বাংলাদেশ উগ্র-ইসলামী রাষ্ট্রের পরিচয় করার ষড়যন্ত্রেরই ইংগিত দেয়। সেক্যুলার কি জিনিস তা নিম্নের লিংকই প্রমাণ করে;
http://dictionary.reference.com/browse/secular
তাই ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হল বাংলাদেশ কে ১৯৪৭ সালের পূর্বাবস্থায় নিয়ে যাওয়া। সেটাই কি চান ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল? সে জন্যেই তো তিনি কোলকাতার বই মেলায় শেখ হাসিনা কে বাংলাদেশের মূখ্যমন্ত্রী বলাকে কোনদিনও সমালোচনা করেন নি। ডঃ জাফর ইকবালের কাছে ১৯৭১ সালের রাজাকাররা দোষী কিন্তু লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে যারা মূখ্যমন্ত্রী বলে সেই হাসিনা নিজে ঐ ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কোনই প্রতিবাদ করেন না, তখন ডঃ জাফর কে স্রেফ বাংলাদেশে বসে কাবা শরীফের কুত্তা খেদানো হুজুরের কাহিনীই মনে করে দেয়।
উনি একটা আজব আবদার করেছেন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য।
বিএনপি ও জামাত কোনদিন কোন কালেও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার বিষয় তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে আনবে না। আর ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবালের মতে বিএনপি ও জামাত এ বিষয় না আনলে হবে তাদের বাংলাদেশে থাকার অধিকার নেই এবং নিশ্বাস নেওয়ার অধিকার নেই। মনে হয় বাংলাদেশ ও এর জনগণের যারা বিএনপি ও জামাতের সমর্থক এবং ৬০% জনগণ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধের সমর্থক তারা ডঃ জাফর ইকবালের পৈতৃক সম্পত্তি বা কেনা গোলাম। তিনি কোন দুঃসাহসে বললেন যে বাংলাদেশে থাকার অধিকার নাই এবং নিশ্বাস নেওয়ার অধিকার নেই। এ রকম কথা কেবল বাকশালী গংদের কেই মানায়।
আর বাকশালীরা কখনই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় এবং নিশ্বাস নেওয়ার কথা ২০০৬ সালের শেষে ও ২০০৭ এর শুরুতে আওয়ামী নেতা ওবায়দুল কাদেরের মুখে শুনেছি। ওবায়দুল কাদের বলেছিল তিনি বঙ্গভবনে অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ করে দিবেন। কিন্তু আল্লাহ্র কি ইচ্ছা জেলে যেয়ে এমন অসুস্থ হলেন যে জামিনে মূক্তির দিন তিনি চলতে অক্ষম ও স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে ও সমানে হাপাচ্ছেন। এই ঘটনা ডঃ জাফর ইকবাল এত তাড়াতাড়ি কিভাবে ভুলে গেলেন? তাকে মনে রাখতে হবে বিএনপি-জামাত সমর্থকগণ তার এই অন্যায্য দ্বাবীর (দীর্ঘ সময় অবহেলিত) কাছে মাথা নত করতে বাঁধ্য নয়। তারা স্বাধীন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের স্বার্থের পক্ষেই তারা রায় দেবেন।
ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবালের এ ধরণের আহবান আসলে অবাঞ্চিত ও অযাচিত আহবান। বিএনপি ও জামাতের সমর্থকদের ডঃ জা. ইকবালের থেকে কোন রাজনৈতিক সবক নেওয়ার প্রয়োজন নাই। কারণ তারা আওয়ামী-বাকশালী গং ও তার সমর্থক ডঃ জাফর ইকবালের মতলবী রাজনৈতিক কর্মকান্ড বুঝে। তারা ভালভাবেই জানে ১৯৭১-৭২ সালে ৯৩০০০ পাকিস্তানী সৈন্যদের কে বিনা বিচারে পাকিস্তানে যেতে দিয়ে শেখ মুজিব আসলে আসল বা মূল আসামীদের কে ছেড়ে দিয়েছেন। যদিও মূল বা প্রধান আসামী তৎকালীন পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান।
তাই সমর্থকগণ মনে করে পরবর্তীতে জিয়া এ দেশের রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যাবস্থা বিলুপ্ত করে কোন দোষ করেন নি। আর ভদ্রতার মুখোশ আটা ডঃ জাফর ইকবাল এটা কেন বলেন না ১৯৯১-৯২ সালে ঘাদানিক তৈরি করে, জাহানারা ইমামের কাছে পত্রে লিখিত অঙ্গীকার করেও ১৯৯৬-২০০১ সালে হাসিনা ও তার আলীগ সরকার এ দেশীয় যুদ্ধাপরাধের বিচার করেন নি। বরং ১৯৯৫-৯৬ সালে হাসিনা ও নিজামী সহাস্যে পাশাপাশি বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। যা বিএনপি ও জামাত সমর্থকদের কাছে বদ্ধমূল ধারণা হয় যে স্রেফ রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বন্দেই যত্ত সব হৈ চৈ, জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙচুর এবং যুদ্ধাপরাধের বিচাও চাওয়া স্রেফ বাহানা মাত্র। যদি ১৯৯১ সালে বিএনপির বদলে জামাত আলীগ কে সমর্থন দিয়ে সরকারে বসাত তবে কোনদিনও রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে টু-শব্দটিও হত না।
সে জন্যেই ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে জামাতের অংশগ্রহণ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলে নি। আর ইতিহাসে দেখা যায় ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে আলীগ-জামাতের একত্রে অংশগ্রহণ ও একত্রে সম্মিলিত ভাবে বিরোধী দলের ভূমিকায় তৎপর। আর ১৯৮৮ সালে সংসদ ভেঙে দিলে আলীগ-বিএনপি-জামাত একত্রে সহ আরও রাজনৈতিক দলের স্বৈরাচার এরশাদের জাতীয় পার্টি সরকারের পতন আন্দোলনে শামিল হওয়া। তখনও ভুলেও বলেনি যে জামাত যুদ্ধাপরাধী তার সাথে আমরা একত্রে আন্দোলন করবো না। যত্ত বিপত্তি বাঁধে বিএনপি কে সমর্থন করার কারণে।
কাজেই ভদ্রতার মুখোশে তিনি ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল যত্তই তারা বক্তব্য কে সাধাসিধে বলুন না কেন এটা আসলে আওয়ামী-বাকশালী ও সেক্যুলারিষ্ট মতলববাজদের প্রতিধ্বনি মাত্র।
র্দূভাগ্য আমাদের যে যদিও ডঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল যার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রশ্নাতীত ভাবে প্রশংসনীয় তার মত ব্যাক্তির একতরফা ভাবে অন্ধের মতন নিজস্ব রাজনৈতিক সমর্থন করত স্রেফ বিপক্ষের নিন্দা এবং নিজ মতাদর্শের দলের দোষের সমালোচনা করা আমাদের শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্র কে বিতর্কিত ও অনিশ্চিত করে দেয়। তিনি ঐ একই লেখাতে বলেছেন যে শুধু আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে যথাযথ করা গেলে আমাদের দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। অথচ তিনি বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার কেন্দ্রে থেকে বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষের পছন্দের আদর্শের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তাদের এ দেশে থাকার বিরুদ্ধে কথা বলবেন সেটা কিভাবে সম্ভব? আমরা বাংলাদেশ কে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। ডঃ জাফর ইকবালের মতন পক্ষপাতদুষ্ট অগণতান্ত্রিক ও বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য বাংলাদেশ কে অশান্তি ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিবে।
এতে করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে। তাই এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মূখ্যমন্ত্রীর অনুসারী তাবেদার গংদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক বাংলাদেশীদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। আল্লাহ্ আমাদের সহায় হৌন। আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।