সত্যবাদী ডাঃ আনিস দস্তগির! বেশ জবরদস্ত একটা নাম, অন্তত গল্পের নায়ক হিসেবে বেশ মানিয়ে যাবে। মায়াবতী মেয়ের জন্য এবার নাম খোঁজার পালা। বেশ কিছুদিন ধরে নাম খোজা চলছে! সব নামগুলো পেটেন্ট করে নিয়ে গিয়েছেন আমার আগের লেখকেরা! রূপা, নিলু, তিথি, মিতু, নিতু, অলি, ম্রিন্ময়ী, মুনা, অপালা, বুলা...মাথায় খালি ঘুরে ফিরে এই নাম গুলো আসে! কারন আর কিছুই না; এক সম্মোহনের জালে জড়িয়ে এদের স্রষ্টারা এই পৃথিবী ত্যাগ করেছেন। আমার জন্যে একটা নাম থাকতে পারত না! একটা না, দুটো নাম; আনিস দস্তগির কে আর ঠিক পছন্দ হচ্ছে না! নামের মাঝে কেমন একটা চাপদাড়ি ভাব আছে। আমার গল্পের নায়ক ক্লিনশেভড, কেতাদুরস্ত।
টানে সবাইকে, বাঁধনে জোড়ায় না! ধুর! মাসুদ রানা নয়! একটু আলাদা; একটু অন্যরকম। এমন যেন, এই মুহূর্তে স্পেসশিপ করে স্বর্গ থেকে নেমে এল, মোটা কাঁচের চশমা! তাকালও আর তরুণীরা সব গলে গেল, না না, শুভ্র নয়! আচ্ছা গল্পের চরিত্র গুলোর কি নাম থাকা জরুরী? নায়ক হব আমি, আর নায়িকা সে; রূপবান আর মায়াবতীর গল্প। কিন্তু খুব বেশি রূপবান নয়, এবং মায়ায় কিঞ্চিৎ ঘাটতি আছে এদের গল্পগুলো কে বলবে? ঐ যে সেদিন দেখলাম ইডেন কলেজের সামনে এসিডে ঝলসে পড়ে থাকা একটা মেয়ে, ওর গল্পটা তো লেখা হবে না! হয়ত কেও লিখবে, ফোকাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প লিখতে হবে। রূপবান নায়কের সাথে মায়াবতী কন্যার। কোথা থেকে শুরু করব, হাত ধরার দিনটা; না বেশি ম্যাড়ম্যড়ে।
বরং প্রথম চুম্বন থেকে; যেখানে ওষ্ঠের গভীরতার বর্ণনা থাকবে, নির্জন কোনও এক ঘরে; আদিম শিহরণ! বেশ হবে, শুরুতেই আকর্ষণ, আকর্ষণের পরে শুরু হবে খাড়া বড়ি থোর, থোর বড়ি খাড়া; শেষে আবার থাকবে ওষ্ঠ; নাকের নিচে কিঞ্চিৎ ঘাম, মাথার ঠোকাঠুকিতে সন্ধে নামা পার্কে! বর্ণনার বেশি গভীরে যাওয়া যাবে না; হালকার উপরে ঝাপসা একটা অনুভূতি; সুড়সুড়িতেই শেষ হবে; ব্যাস চূড়ান্ত হিট! রেসিপি আমার হাতের নাগালে, একদম নিপাতনে সিদ্ধ! সব ঠিক আছে, শুধু শুরুটাই করতে পারছিনা। পারছিনা কেন! সত্যিকারের প্রেমের গল্পগুলো কি লেখা হয় কখনই!
ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে সে! মনের ভেতর তুমুল ঝঞ্ঝা। ১ নম্বর না ২ নাম্বারটা, নাকি টেলিফোনে যার সাথে তুমুল আড্ডা সেইটা!
-ফুলটা কি আমার জন্যে?
ধুস! ৪ নাম্বারটা, যাইহোক, আপাততও
-হাঁ, তোমার জন্যেই!
অতঃপর ওষ্ঠ; পার্ক, লিটনের ফ্ল্যাট!
বাকি কাহিনী আসতেও পারে; অথবা পুনরায় শুরু! এবং গল্পের সমাপ্তি!
অথবা সমাপ্তি নয়, বরং ভূতুড়ে গল্পের শুরু! মোবাইলে মোবাইলে ছড়িয়ে পড়া ছবি; ছেলেটার ছবি ঝাপসা, বন্ধুদের আড্ডায় আবার দর্শন;
-ধুরশালা, লিক হইল ক্যামনে?
পত্রিকার পাতায় ছাপা খবরে জানা যায়, সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলতে থাকা একটা দেহ ছিল, প্রেম ছিল!
আমার মনে হয় কোনও একটা বিশেষ কারণে এই গল্পগুলো লেখা হয়নি!
আমজাদ সাহেবের ডিউটি শেষ রাত তিনটায়। রাতের ডিউটি থাকলে উনি একটু পাগলা পানি খান। বাসায় ফিরে আদিম ক্ষুধা মেটান অথবা ভালবাসেন! সাড়া না পেলেও; সাড়া ইদানিং তেমন পান না।
নতুন করে ভালবাসতে মন চায় তার। একটু আলাদা, একটু অন্যরকম! অতঃপর, পাগলা পানির ঘোরে, আদিম ক্ষুধার নিবৃতি! অথবা ভালবাসা! মাথা নিচু করে বাসায় ফেরা, ভালবাসার ইচ্ছেটাই হটাত মরে যায়, পানিটাকেই ভালবাসা, পানিটাকেই প্রেম!
ধুর! হবেনা আমাকে দিয়ে! ডাঃ আনিস দস্তগির আর মায়াবতী কন্যারা আমার কলমে আসছেন না। আমি জানি কেন এই গল্পগুলো লেখা হয়নি; এই লেখাগুলো লেখা উচিৎ নয়। একটু অন্য গল্পও তো আছে, প্রেমের গল্পের মতই!
ছেলেটা আর মেয়েটা (৪ নং) লিটনের ফ্ল্যাট পাড় হয়ে কোনও এক গোধূলি বেলায়, সত্যি হারিয়ে যায় এক মহাজগতিক অনুভুতিতে। স্পর্শে ফোটে ফুল, কোল আলো করে আসে! ফোকলা দাঁতে হাসে।
আমজাদ সাহেব ঘটা করে ঘুরতে যান নারিকেল জিঞ্জিরায়, নতুন করে জাগে প্রেম। সেই পুরনো শরীরেই জাগে ভালবাসা, একটু আলাদা একটু অন্যরকম!
আমার মনে হয় গল্পগুলো সব এখান থেকে শুরু করা উচিৎ;
নান্নি রানীকে যখন আমার নানাজান দেখতে যান, তখন তিনি টেবিলের নিচে বসে পুতুল খেলছিলেন। বড় বড় চোখে অবাক হয়ে তিনি দেখেন তার হবু স্বামীকে। নানাজান ঐখানেই কাবু! আম্মুর কাছে গুপ্তধনের মত আগলে রাখা কিছু চিঠি আছে তাদের। ওগুলো ধরা নিষেধ ছিল! নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণের সুত্র ধরে প্রতিটি চিঠি আমি পরেছি।
আমি জেনেছি, সত্যিকারের প্রেম কাহিনীগুলো আসলে গল্পের মতই। কারণ তারা জীবনটাকে গল্পের মত করে নেন।
আমি এখনও ভাবছি কি নাম দেব আমার মায়াবতীর; একটা নাম অবশ্য আছে, যে নামটা হয়তো আমার পরের প্রজন্মের দুর্নিবার আকর্ষণের সুত্র হবে! কে জানে! ততদিন অপেক্ষায় থাকুক সবাই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।