আজ দৈনিক আমাদের সময় কর্তৃপক্ষ মাফ চেয়েছে একটা ভুয়া খবর বিজ্ঞাপন আকারে ছাপানোর জন্য। বিজ্ঞাপনের বিষয়টা নাকি ছিল বিচ্ছেদকৃত এক হিন্দু মেয়ের ছবি তার স্বামীর সাথে প্রকাশের। তাই এই পোস্টটা দিলাম।
তালাক বিষয়টা ইসালাম ধর্মে ও মুসলিম পারিবারিক আইনে স্বীকৃত। কিন্তুু বাংলাদেশের হিন্দু আইনে তালাক বা ডির্ভোস নাই।
বাংলাদেশ ব্যতীত ভারতে হিন্দুদের মাঝে তালাক প্রথা রয়েছে। ভারত বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে তালাক প্রথা এনেছে। আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তনে ও পরিবর্ধনের প্রেক্ষিতে হিন্দু সমাজে তালাক প্রথা প্রর্বতিত হয়েছে এবং এ প্রসঙ্গে বহুসংসদীয় আইন প্রবর্তিত হয়েছে ভারতে। ভারতে ১৮৫৬ সালে হিন্দু বিবাহ বিধি পাসের মাধ্যমে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে বিবাহ বিচ্ছেদ প্রথা চালু করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে আজ পযর্ন্ত এমন কোন বিধি প্রবর্তিত হয় নাই।
১৯৫৫ সালে ভারতের হিন্দু বিবাহ আইনে তালাক কে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উক্ত আইনের ধারা-১৩ অনুযায়ী স্বামী বা স্ত্রী নিম্নোক্ত কারণে তালাকের জন্য আবেদন করতে পারে।
১. সংসার ধর্ম ত্যাগ ২. যৌন কেলেংকারী ৩. নির্যাতন করার অভিযোগ উৎখাপিত হলে ৪. এছাড়া ১৯৭৬ সালের সংশোধনীতে আনীত পারস্পরিক সম্মতিতে উভয় উভয়কে তালাক দিতে পারে।
একটি বৈধ হ্নিদু বিবাহে এই সাতটি উপাদান থাকলে তাকে বৈধ হিন্দু বিবাহ বলে।
হিন্দু আইনের বিধান মতে হিন্দু বিবাহের উপাদান ৭টি ।
যেমন: ১ বয়স ২.সম্মতি ৩.বিধি সংগত পদ্ধতি ৪. আইনগত সর্ম্পক ৫. একই বর্ণ ৬. ধর্মীয় আনুষ্ঠিকতা ও ৭. একাধিক স্বামী নিষিদ্ধ।
তারপরও দেখা যায় সমাজে কোন কোন হিন্দু যুবক এবং যুবতীরা তাদের নিজ নিজ বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে পরবর্তীতে অন্য ছেলে-মেয়ের সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সেটা কিভাবে ? সেটা হচ্ছে আদালতের মাধ্যমে। আদালতের মাধ্যমে যে বিবাহ হয় তাকে সিভিল ম্যারেজ বলে হিন্দু ম্যরেজ বলে না। সেই সিভিল ম্যরেজের বিধান অনুসারে হিন্দু-ছেলে মেয়ে আদালতে সেপারেশন হওয়ার জন্য আবেধন জানায় যাহা বিচ্ছেদ হিসাবে বিবেচিত হয় ।
কিন্তুু কোন মেয়ে যদি হিন্দু নিয়মে একবার বিবাহ হয়ে যায় সেটাই স্বীকিতৃ বিবাহ । আদালত কাছ হতে বিচ্ছেদ হলেও তার আগের স্বামী , স্বামী হিসাবেই স্বীকৃত থেকে যায়।
অপর দিকে ইসলাম ধর্মে তালাকের বিধান আল-কোরানে অনুসারে স্বীকিৃত। এবং সেই ক্ষমতা পূরুষই প্রয়োগ করতে পারে মেযেরা নয়। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে সূবর্ণা মোস্তফা হুমায়ন ফরিদীরে তালাক দিল কিভাবে?
এখানেই আসে মুসলিম পারিবারিক আইনের ভিন্নতাটা মূল ইসলামিক শরীয়া আইন হতে।
এখানে সূবর্ণা মূস্তাফা যে তালাক টা হুমায়ন ফরিদির উপর প্রয়োগ করেছে সেটা হচ্ছে তালাকে-তৌফিজ। এটা বিয়ের সময় মেয়েরা ছেলেদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে। অন্য ভাবে বললে ছেলেরা এই তালাক দেওয়ার ক্ষমতাটা মেয়েদের কে প্রদান করে। নারীরা তা সংরক্ষন করে । বিবাহের নিরাপওা স্বরুপ এটা মুসলিম মেয়েরা ছেলেদের কাছ থেকে পায় ।
ছেলেরা পালিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করিলে বা কোন অত্যচার তার স্ত্রীকে করিলে এটা প্রয়োগ করে মেয়েরা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাইতে পারে। ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে স্ত্রীকে কতিপয় কারণে আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ডিক্রি পাবার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। পরে ১৯৬১ সালে মুসলিম পারিবারিক আইনের মাধ্যমে তালাক সংক্রান্ত বিধান গুলির মধ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে তা তালাকে তৌফিজের ক্ষেএেও প্রযোজ্য।
মুসলিম পারিবারিক আইনের আরেকটি বৈশিষ্ট যে এখানে বিশেষ বিবাহ আইনের মাধ্যমে মুসলিম মেয়েরা অন্য ধর্মের অনুসারি ছেলেকে ও বিবাহ করতে পারে। বিষয়টা এখানে একারণে উল্লেখ করলাম কারণ অনেকেই জানে না মুসলিম মেয়েদের যে এমন ভাবে বিয়ে হতে পারে।
হিন্দু বিবাহ কোন চুক্তি না এটা একটা ধর্মীয় আচার পক্ষান্তরে মুসলিম বিবাহ একটি চুক্তি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।