আমাদের অভ্যাসগুলোর মধ্যে খোজ করলে সবচেয়ে দুর্লভ অভ্যাস হলো প্রসংসা করা। আমরা প্রশংসা করতে পারি না। কিন্তু প্রশংসা করা শুধু একটি বড় গুণই হতে পারে না এটা জীবনে বড় অর্জনের একটা সহায়ক শক্তিও হতে পারে। আমরা আমাদের কথার মূল্য সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। আমাদের প্রতিটা কথা কিছু না কিছু প্রভাব বহন করে ।
যেমন: কেউ বকাঝকা করলে আমরা কষ্ট পাই , দু:খ পাই, রিঅ্যাক্ট করি। আবার তেমনি কেউ প্রশংসা করলে আমরা বিগলিত হই , আনন্দিত হই, উৎফু্ল্ল হই। সুতারং কথার এই প্রভাব আমাদের সবাইকেই প্রভাবিত করে। আপনি কল্পনা করুন আপনাকে কেউ একদিন প্রশংসা করে বলেছিল তুমি তো বেশ ভালো ..ইত্যাদি ইত্যাদী। কিংবা আপনি আপনার কোন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছিলেন প্রশংসা।
তখন আপনার মনের অবস্থা কি হয়েছিল? নি:সন্দেহে আপনি কাজ করার জন্য আরো বেশি বেশি উৎসাহিত হয়েছিলেন। আপনি আরো ভালো কাজ করেছিলেন। আসলে প্রশংসা একটা বড় শক্তি। কোন বড় পুরস্কারও প্রশংসার প্রতিফলন , কিন্তু কারো মুখনিসৃত: প্রশংসা বা কথামালা অবশ্যই সকল কিছুর চেয়ে বেশী মূল্য বহন করে । এই প্রশংসার শক্তি কি পারে?
মানুষের মধ্যেরসত্যিকারের শক্তিকে বের করে আনতে পারে।
মানুষকে আনন্দ দিতে পারে ।
মানুষকে কল্যাণের সন্ধান দিতে পারে।
কোন কাজের গতিকে বাড়িয়ে দিতে পারে ।
একটু খবর নিয়ে দেখলে দেখবেন কোন কোম্পানীর মালিক যদি তার কর্মচারীদের কাজের প্রশংসা করতে অভ্যস্ত হন তাহলে সেই কোম্পানীর সার্বিক প্রবৃদ্ধি দ্রুততর হয়। এটাই বাস্তব।
এখন প্রশ্ন হলো আপনার মধ্যে এই প্রশংসার গুন কতটুকু বিদ্যমান? একটু খোজ নিয়ে দেখুন নিজের অন্তরে । প্রশংসা করতে গিয়ে সবচেয়ে যে জিনিসটা আমাদের বাধার সৃষ্টি করে তা হচ্ছে ইর্ষা। আপনি যদি ঈর্ষাকে পরাজিত করতে চান তাহলে প্রশংসা একটি ভালো অস্ত্র । আপনি মানুষকে বা মানুষের প্রাপ্তিকে প্রশংসা করা শুরু করুন । দেখবেন আপনার জীবনে কল্যানময় পরিবর্তন আসছে।
আপনি যদি প্রশংসাকারী হন তাহলে কি হবে?
১। আপনি নিজেও প্রশংসিত হবার যোগ্যতা অর্জন করবেন ।
২। প্রশংসিত মানুষ সর্বাবস্থায় উন্নতি লাভ করেন । আপনিও নি:সন্দেহে উন্নতির পথে এগুবেন।
৩। আপনি সকলকে প্রশংসা করলে আপনার দিকে মানুষ আকৃষ্ট হবে। আপনি হবেন আকর্ষনের কেন্দ্র।
৪। শুধু মানুষ নয় প্রতিটা কল্যানকর প্রাপ্তি এবং বিষয়ের প্রশংসা করুন ।
আপনার প্রাপ্তি বেড়ে যাবে।
৫। মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মানুষের ভালোবাসা আপনি অর্জন করতে পারবেন ।
আসলে মানুষের যোগ্যতা প্রাপ্তি আনন্দ ইত্যাদির স্বীকৃতি ব্যতিরেকে মানুষ বেশিদিন সুস্থ সুন্দর ভাবে বেচে থাকতে পারে না। তাই আমাদের সকলের উচিৎ প্রশংসাকারী হওয়ার চেষ্টা করা ।
সামান্য কথা ,যেমন: তোমাকে আজ বেশ স্মার্ট দেখাচ্ছে, একজন মানুষকে বদলে দিতে পারে । আর কথা বলায় তো আমাদের কোন বাধা নিষেধ নেই। তাই বলবো নাই বা কেন? আমরা মানুষের বেশি বেশি প্রসংসা করার মাধ্যমে নিজেদের চারিত্রিক দৃঢ়তা বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি।
আল্লাহতাআলা পবিত্র কোরানে বলেছেন:
ঈমানদারের গুণাবলী হইল -- তাহারা ক্ষমা প্রার্থনাকারী , ইবাদতকারী , প্রশংসাকারী , রোযাদার, রুকুকারী , সিজদাকারী, সৎবিষয়ে আদেশ প্রদানকারী ও অসৎবিষয়ে নিষেধকারী এবং আল্লাহর সীমাসমূহ সংরক্ষণকারী । --সূরা তওবা :১১২
সুতারং আসুন আমরা এই রমজান মাসে আমাদের সৎগুণাবলীর প্রাকটিস করি এবং সুঅভ্যাস হিসাবে অপরকে প্রশংসা করার অভ্যাস গড়ে তুলি ।
এভাবে নিজেও প্রশংসিত মানুষ হিসাবে পৃথিবীতে বিচরণ করতে পারবো।
ধন্যবাদ । আগামীকাল আবার দেখা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।