একটু আগে আরিল্ডের এক পোষ্টে দেখলাম সা.ইন. একইদিনে চারহাজার ভিউ এর ল্যান্ডমার্ক ছাড়িয়েছে। ভালো লাগলো। পাশাপাশি মনের জানালায় উকি দিয়ে গেলো সেই প্রথম দেখা আর প্রথম একে প্রমোট করার কথা... ...
সা.ইনে রেজিষ্ট্রেশন করেছি খুব অল্পদিন। যদিও এর সাথে ভালোবাসা, সখ্যতা অনেকদিনের পুরনোই বলা যায়। প্রথম সা.ইন. কে পেয়েছিলাম এক অকল্পনীয় জায়গায়, এক স্তম্ভিত বিস্ময়ে, এক অদ্ভূত ভালোলাগার আবেশে।
সময়টা সঠিক খেয়াল নেই। খুব সম্ভব ২০০৬ আপষ্টের শেষার্ধ।
প্রচন্ড ব্যস্ততায় দৌড়ে বেড়াচ্ছি রুয়ান্ডা, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া আর উগান্ডা। এর মাঝেই তিনদিনের একটা ছোট্ট গ্যাপ বের করে চলে গেলাম উগান্ডার শেষ মাথায়, যেখানে পিগমী দের আবাস, তার কাছাকাছি, একটা লেক - বুনোয়ানি। সভ্যতা থেকে অনেক দূরে, সাতাশটি পাহাড়ে ঘেরা এক অনুপম প্রাকৃতিক হ্রদ।
ক্যানোতে করে বারো কিমি লেক পেরিয়ে পৌছলাম এক পাহাড়ের ঢালে সেই আন্তর্জাতিক আবাসিক হোটেলে!! (এটিই ছিলো ঐ অঞ্চলের সবচে সস্তা হোটেল, অবস্থা আমাদের গ্রাম্য চা দোকানের মতো, তবে অনেক পরিচ্ছন্ন)।
সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম্য পরিবেশে কাউন্টারের ওপর প্রায় ঝকঝকে একটি ল্যাপটপ দেখে বিস্মিত হলাম। আমার বিস্ময়কে স্থায়ী রূপ দিতেই যেনো কাউন্টারের ছেলেটা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাই কিনা জানতে চাইলো। চারপাশে পানি আর পাহাড় ছাড়া আর কিছু নেই, স্তম্ভিত আমি সম্মতি জানিয়ে বসলাম। দেশের খবরাদি নেয়ার এক পযার্য়ে দেখলাম সা.ইন কে।
কয়েকজন আফ্রিকান বন্ধুকে নিজের ঠিকানার পাশাপাশি সা.ইন. এর ঠিকানাও দিয়েছিলাম; বলেছিলাম এই সাইটটাতে আমাদের দেশের খবর, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের জীবনযাত্রার ধরণ সম্পর্কে জানতে পারবে। অন্য কেউ এটা ভিজিট করে কিনা জানিনা, তবে আমি নিশ্চিত অন্তত: একজন, চকচকে কালো চামড়ার নিচে ঝকঝকে শুভ্র মানসিকতার ধারক, আমার সেই বন্ধু (মিজ গাউডেনসিয়া কাটো), মোটামুটি নিয়মিত এই সাইটটা ভিজিট করে। ভিজিট করে আর হয়তো ভোগে উদ্দাম সেই বন্ধুতার দিনগুলোর নষ্টালজিয়ায়।
তার ছোট ছোট কথা, হাল্কা দুষ্টুমি আর প্রাণখোলা হাসির আড়ালে সব জেনে শুনেও সে যে মরতে বসেছে তা টের পেয়েই বারো বছর প্রেম শেষে ঘরবাধা বউ আর আমাদের জীবন আলো করা দুই মেয়ের টানে নিজকে সরিয়ে নিতে হয় দ্রুত। হয়তো কিছুটা দৃষ্টিকটু দ্রুততায়ই।
এ কী ভুল, বিভ্রম নাকি কেবলই মায়া – জানিনি। জানতে আসলে চাই ও নি। খুব স্বার্থপরের মতো পালিয়ে এসেছি। ভয়ে, নিজের জীবন-সংসার নিয়েই চিন্তা করা সেই আমি তাই ফোপানো “উসিনিসাহাউ”(ফরগেট মি নট) আর “নাকুপেন্ডা”(আমি তোমাকে ভালোবাসি) এর মাঝে নিজেকে খুব চেষ্টা করে, ভিজে যাওয়া চোখটাকে যথাসম্ভব শুকনো রেখে “কোয়া হেরি”(গুড বাই) “বাকী সালামা” (স্টে ফাইন) বলতে বলতে স্ক্যান্ডিনেভিয়া কোচে উঠে গেছি।
আজ হঠাৎ করেই সেসব দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে আর বাইরে প্রকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে ভিজে উঠতে চাইছে চোখগুলো ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।