মাহবুব লীলেন
খুশকিভর্তি দাড়িতে খসাখস হাত চালাতে চালাতে জ্ঞানগুরু সক্রেটিস ওডার ওডার বলে টেবিলে করাতের তিনটা বাড়ি মেরে সবাইকে জানিয়ে দেন যেন আইন অমান্যকারী কেউ তার শিষ্যত্ব দাবি না করে তারপর নাতিশিষ্য আরিস্টটলের অভিজাত গণতন্ত্রে রেফারির চাকরি নিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দেন গোলাগুলি খেলার গণতান্ত্রিক নিয়ম
যেহেতু তোমাগো পোলাপাইন যুগে হ¹লেই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছ চ্যালাকাঠ নিয়া সেহেতু জানো গাছের ডাল তাক কইরা একজনে যদি ট্যারে ট্যারে ঠাস আওয়াজ করে তাইলে উরে মারে অক কইয়া অইন্যজনের পইড়া মইরা যাওনের কথা আর যেহেতু সেই খেলা জঙ্গলের চিপা ছাড়া জমানো কঠিন সেহেতু অখন অমারাও চইলা আসছি সিরাম চিপায় আর যেহেতু সেই খেলায় দুইডা পক্ষ লগবই লাগব সেই হেতু তুমি গোলাম হোসেনের পোলা এক পক্ষে থাকবা আর আরেক পক্ষে আছে ওইযে ওরা আর যেহেতু তোমাগো কারোই এখন আর পোলাপান যুগের খেলার বয়স নাই বইলা দিনে দুপুরে খেলাধুলা করলে পাবলিকে হাসব সেহেতু দিনের বদলে আমরা বাইছা নিছি রাইতের আন্ধার যাতে সূর্য ফর্সা হওনের আগেই হাত মুখ ধুইয়া গিয়া বৌয়ের পাছা ঘইসা শুইয়া পড়বার পারি আর যেহেতু আইন্ধার রাইতে আলো থাকে না বিধায় দুই পক্ষের কেডা কোনটা চিনতে অসুবিধা হইতে পারে সেইহেতু ওগোরে আগেই আমি কইয়া দিছি হগলেই যেন এক কিসিমের পোশাক পইরা আসে মানে বইয়ে পুস্তকে যারে ইউনিফর্ম কয় আরকি আর তোমার পোশাকতো তোমারে আলাদাই কইরা অন্য পক্ষের থিকা আর যেহেতু খেলার নিয়ম নিয়া কারো কোনো আপত্তি নাই সেহেতু দেরি করার কোনো মানে নাই তয় যেহেতু খেলার বয়স পার হইয়া গেছে সেহেতু ছুডু বেলার খেলনা দিয়া খেলতে ভালো না লাগারই কতা তাই অইন্যপক্ষ গাছের ডান্ডার বদলে নিয়া আসছে লোর ডান্ডা আর এই ডান্ডার সুবিধা হইল এইডা তাক কইরা মুখ দিয়া আর ট্যারে ট্যারে ঠাস আওয়াজ কিংবা হাতে ঝাঁকি দিয়া গুলি ছুডাইবার ভঙ্গিও করতে হয় না আর যেহেতু নাতি আরিস্টটল সামনে খাড়াইয়া আছে সেহেতু এক পক্ষরে সুবিধা দিলে আমার চাকরি যাইতে পারে তাই তোমারেও ছুডুবেলার খেলা থাইকা সব নিয়ম বাদ দিয়া খালি খাড়াইয়া থাকার নিয়ম দিতাছি মানে হইতাছে ওরা আওয়াজ করল কি না কিংবা হাতে ঝাঁকি দিলো কি না সেইডা তোমার দেখনের দরকার নাই আর সবচে বড়ো যে সুবিধাটা তুমি পাইতাছ তা হইল গুলি খাইলে পইড়া যাওনের নিয়ম থাইকা তুমি মুক্ত মানে হইতাছে উরে মারে অক কইয়া তোমার আর পইড়া যাওন লাগব না কারণ পইড়া গেলে তুমি কষ্ট পাইতে পারো আর যেহেতু ওই পক্ষের আওয়াজ আর ঝাঁকি সব অটোমেটিক হবে সেইহেতু তোমার পইড়া যাওন আর মইরা যাওনের সিস্টেমটাও আমি অটোমেটিক কইরা দিলাম....
যেইহেতু হগলেই সমানভাবে নিয়মকানুন অবগত হইছ আর আমার নিকট প্রতীয়মান হইতেছে যে কাউরে আমি পক্ষপাতিত্ব করি নাই সেই হেতু ওডার ওডার মানে খেলা শুরু হইতে পারে আর যেহেতু ওডার বলার আগেই একপক্ষ অলরেডি গুড়–ম গুড়–ম কইয়া ফালাইছে সেইহেতু এইবার উরে মারে অক কইয়া তোমার মইরা যাওনের পালা
কিন্তু যেহেতু তুমি হালারপুত গুলি খাইলে শরীলের চৌদ্দ ছেন্দা দিয়া যে রক্তহাগু করবা সেইডা যেহেতু আমারে আগে কও নাই আর আমি সক্রেটিসও এর লাইগা কোনো নিয়ম ঠিক করি নাই সেইহেতু এরিস্টটলের গণতন্ত্রে চাকরি বাচানের লাইগা এখন আমারে আরেকখান প্রেস রিলিজ লিখতে হইব পত্রিকায়...
০২
বোনের বিছানায় চড়াও হয়ে চাষি ইব্রাহিম বোনকে বৌ বানিয়ে মিশরে পালিয়ে জানের ভয়ে বৌকে রাজার বিছানায় পাঠিয়েও আগুন থেকে বাঁচতে পারল না দেখে তার নাতিস্য নাতি মুসা লেঙ্গুট তুলে পুরা নীল ছেড়ে ইউরোপের দিকে দৌড়াতে দৌড়াতে আগুনকে ফায়ার বলা শিখে গেলো কিন্তু হাভাতে মইরমের ছেলে রাজকীয় নেমনতন্নের লোভ সামলাতে না পেরে খাওয়ার টেবিলে গিয়ে যখন ফেঁসে গেলো আর তাকে তক্তা ফিটিং দিয়ে কাকতাড়–য়া বানানো হলো তখন সে কাকের ঠোকর খেতে খেতে কাকতাড়–য়ার ইংরেজি নাম ক্রস জেনে হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে উঠল হতভাগি মইরমের উদ্দেশ্যে- মারে লুঙ্গি কাছা দিয়া নানাজানের ফায়ার হইতে বাচার কাহিনী কইলি কিন্তু তোর পোলারে ক্যান শিখাইলি না ক্রসের পলিটিক্স...
০৩
যেহেতু গতরাতের খেলার মাঠে একটা ঘাসফড়িং ঘুমাচ্ছিল এবং যেহেতু তার পায়ে কিছু রক্তের ছিটা লেগে আছে আর যেহেতু সে জোড় হাত করে এসে বসেছে সেহেতু সে কোনো জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে এসেছে বলে সক্রেটিসের কাছে মনে হলো তাই তিনি খুশি হয়ে উঠে তার প্রশ্ন পেশ করার অনুমতি দিলেন আর যেহেতু ঘাসফড়িংদের জগতে বেশি জ্ঞানী হবার সুযোগ নেই সেহেতু সে চাষীর মতোই তাকে জিজ্ঞেস করে বসল- মহান গণতন্ত্রের দেশে তোমাকে কেন জনসভায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে হলো সেই কাহিনী কিন্তু আমরা এখনও জানি না চুদির ভাই...
এক থাপ্পড়ে ঘাসফড়িংকে চ্যাপটা করে ওডার ওডার বলে আবার তিনবার টেবিলে করাত ঠুকে দাড়ি চুলকাতে চুলকাতে খিচিয়ে উঠলেন সক্রেটিস- হালার পুতেরা গণতন্ত্রের কোন বালটা বুঝস তোরা?
গণতন্ত্র হইতাছে কাগজপত্রের সাক্ষী
যা আমি লিখতে বসছি এখন...
২০০৮.০৮.১০ রোববার
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।