একজন এ মুহূর্তে বিশ্বসেরা ফুটবলারদের একজন। অন্যজন কখনোই বিশ্বসেরা নন। কিন্তু পরিশ্রম, ধৈর্য আর একাগ্রতা দিয়ে তিনি নিজের নাম তুলেছেন অনেক কিংবদন্তির পাশে। পরশু রাতটা প্রায় একই রকম অর্জনের সাক্ষী হয়ে রইল এই দুজনের জন্য। একজন গোল করে পেরিয়ে গেলেন নিজের দেশের এক সাবেক কিংবদন্তিকে, অন্যজন পাশে এসে দাঁড়ালেন তাঁর দেশের এক কিংবদন্তির।
একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, অন্যজন মিরোস্লাভ ক্লোসা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউরোপ অঞ্চলের ম্যাচে পরশু হ্যাটট্রিক করে রোনালদো পেরিয়ে গেছেন পর্তুগালের রূপকথার নায়ক ইউসেবিওকে। একই রাতে জার্মানির হয়ে গোল করে ক্লোসা ছুঁয়েছেন জার্মানির ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার জার্ড মুলারকে। এক ম্যাচে তিন গোল। রিয়াল মাদ্রিদে যে রোনালদো খেলেন তাঁর জন্য এটা প্রতি মৌসুমের নৈমিত্তিক ব্যাপার।
কিন্তু পর্তুগালের জার্সি গায়ে এমন অর্জনের অনুভূতি এর আগে কখনো পাননি রিয়াল তারকা। দেশের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকের পর তাই যেন উচ্ছ্বাসে ভাসলেন রোনালদো, ‘আমার জন্য এটা ঐতিহাসিক। আমি রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অনেক হ্যাটট্রিক করেছি, কিন্তু পর্তুগালের জন্য করতে পারিনি। এই ম্যাচটা আমার জন্য বিশেষ কিছু। আমি খুবই আনন্দিত।
’ সব মিলিয়ে দেশের হয়ে ১০৬ ম্যাচে ৪৩ গোল হলো পর্তুগিজ অধিনায়কের। কিংবদন্তি ইউসেবিওকে (৪১) পেরিয়ে এখন পর্তুগালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি (প্রথম পেদ্রো পলেতা, ৪৭ গোল)। পেরিয়ে যাওয়ার পরও কিন্তু রোনালদোর কণ্ঠে পূর্বসূরির জন্য শ্রদ্ধা, ‘ইউসেবিওর রেকর্ড মূল লক্ষ্য ছিল না। গোলসংখ্যায় তাঁকে পেরিয়ে যাওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক এবং শুধু সময়ের ব্যাপার। তবে আমি গর্বিত তাঁর পাশে আসতে পেরে।
’ তবে এমন অর্জনের পর দেশের হয়ে মঙ্গলবার বোস্টনে ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলতে পারবেন না রোনালদো। টেন্ডনে চোট পাওয়ায় তাঁকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন পর্তুগাল দলের চিকিৎসক। রাতটা রোনালদোর মতোই দারুণ গেছে মিরোস্লাভ ক্লোসারও। জার্মানির হয়ে ৬৮ গোল করা জার্ড মুলারের ৩৯ বছরের পুরোনো রেকর্ড ছুঁয়েছেন তিনি। এমনিতে ফুটবল ইতিহাসের সেরা স্ট্রাইকারদের নাম করলে হয়তো ক্লোসাকে বেছে নেবেন খুব কম মানুষ।
কিন্তু পরিশ্রম আর অধ্যবসায় সেই ক্লোসাকেই নিয়ে গেছে ব্রাজিলের রোনালদোর গড়া বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডের কাছাকাছি (রোনালদো ১৫, ক্লোসা ১৪)। ধৈর্য যে তাঁর বড় গুণ, সেটার প্রমাণ, ১১ মাস ৬৭ গোলে থেমে থেকেও হাল ছাড়েননি। মিউনিখে পরশু রাতে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে প্রথম গোলটা করার পর তাই জার্মান স্ট্রাইকারের উচ্ছ্বাসটা বোঝাল তাঁর উদ্যাপন। যদিও ম্যাচ শেষে জানালেন নিজেকে কখনোই মুলারের সমকক্ষ ভাবতে রাজি নন, ‘মুলারের সঙ্গে আমার কোনো তুলনা হয় না। তাঁর সমান গোল করতে আমি তাঁর চেয়ে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি ম্যাচ খেলেছি।
’ (মুলার ৬২ ম্যাচ, ক্লোসা ১২৯ ম্যাচ)। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।