আমাদের পরিবেশ না না ভাবেই আজ বিপর্যস্ত। বিশ্বে এই যে নানামুখী পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে তা রোধে কী করণীয় হতে পারে? তা নিয়ে নানা গবেষণা সংস্খা বলছে বিভিন্ন কথা। জর্জিয়ার একটি গবেষণা সংস্খা বলেছে, অনাবাদি বনাঞ্চলে মানুষের বসতি বাড়াতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চল এমন রয়েছে যেখানে কোনোদিন মানুষের পদধূলিই পড়েনি। গবেষণা সংস্খাগুলো বলছে, এসব এলাকায় মানুষের বসতি স্খাপন করতে দেওয়ায় অসুবিধা কোথায়? কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে তো সেই জনসংখ্যা নেই।
তাহলে কী অভিবাসীর জন্য দরজা উন্মুক্ত করবে যুক্তরাষ্ট্র আরো উদারভাবে?
বিশ্বের বড়ো বড়ো শহরের মেয়রেরা যখন তাদের নিজ নিজ শহর নিয়ে বড়ো বড়ো কথা বলছেন, তখন বিশ্বের অনেক গরিব শহরের মানুষরা করে যাচ্ছেন বেঁচে থাকার সংগ্রাম। বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণের কারণে নানা জটিল রোগের উপদ্রব হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে জনজীবনের প্রতি। গাড়ির কালো ধোঁয়া, হর্ন, কার্বন-ডাই অক্সাইডসহ নানা ক্ষতিকর গ্যাসের প্রভাব, মানবদেহের প্রতি মারাতক হুমকি হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে নদী, খালবিল ভরাট হয়ে যাওয়া, বনাঞ্চল দখল, গাছ কেটে সবুজের সমারোহকে হরণ করার মতলবি মানসিকতা জনজীবন বিপন্ন করে তুলছে দিনে দিনে। এমনকি বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্খায় ফলন্ত শাক-সবজি, ফলমূল কতোটা প্রাকৃতিক পুষ্টি-সমৃদ্ধ তা নিয়েও সন্দেহ বাড়ছে দিনে দিনে।
গবেষকরা বলছেন বিষাক্ত সার প্রয়োগ করে যে শাক-সবজি ফলানো হয় তা মানবদেহের জন্য নানা জটিল রোগ জন্ম দিতে পারে। ইউরোপ আমেরিকায় অর্গানিক খাদ্যের কদর বাড়ছে দিনে দিনে।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জীবনপ্রবাহের একটি ঘনিষ্ঠ সমন্বয় আছে। মানুষ অক্সিজেন গ্রহণ করে। আর বৃক্ষরাজি কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে ভারসাম্য রক্ষা করে।
কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য, বিশ্বের মানুষের একাংশ এখন যেন সে সত্যটি ভুলতে বসেছে। বৃক্ষ রোপণের চেয়ে, বৃক্ষ নিধনের মহাউল্লাস বাংলাদেশের অনেক বনাঞ্চল উজাড় করেছে। পাখি নিধন, নদীতে মাছের পোনা বাড়তে না দেওয়ার (জাটকা নিধন) মতো অনৈতিক কর্মের বিরুদ্ধে সরকারি কঠোর ব্যবস্খা নেই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই।
পরিবেশের এই আগ্রাসন ভাবিয়ে তুলেছে পাশ্চাত্যের অনেক দেশ কেও ।
আজ যারা তৃতীয় বিশ্বের রাজনৈতিক মুক্তির কথা বলে রাজনীতি করছেন তাদের সুস্খ-সমৃদ্ধ পরিবেশ গড়ে তুলতে এবং বাঁচাতেও এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে একটি প্রজন্মকে গড়ে তুলতে জ্ঞানের মুক্ত বাতায়ন যেমনি খুলে দিতে হবে, তেমনি বিশুদ্ধ পরিবেশও তৈরি করতে হবে। গ্লোবাল ওয়ার্মিঙের ভারসাম্য নিয়ে বিশ্বে গেলো এক দশক থেকেই মাতামাতি হচ্ছে। বাংলাদেশের আপামর মানুষের কাছে এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আরো বলিষ্ঠ উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে মানুষ ঘনবসতি, হাইরাইজ বিল্ডিঙের বাসিন্দা যেমন হচ্ছে এর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশের পয়:নিষ্কায়ন, আবর্জনা নির্মূলও অপরিহার্য।
১৪ কোটি মানুষের বাংলাদেশে এই গণসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। পাশ্চাত্যের ক্লাইমেট সামিট হয়তো ধনী নগরগুলোর স্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু গোটা বিশ্বের বিভিন্ন নগরের বস্তিবাসীদের দিকে নজর দেবে কে? কে জানতে চাইবে ইথিওপিয়া, সুমালিয়া , রুয়ান্ডার সেসব শিশুদের কথা ?
অথচ গোটা বিশ্বে বস্তিবাসী, দিনমজুর মানুষের সংখ্যাই বেশি, যাদের জীবনযাত্রা দারিদ্র্যসীমার নিচে।
আমি বার বার ভাবি যে আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে আছি , সে আকাশ কি সবাইকে সমান আলো কিংবা ছায়া দেয় ? দিতে পারে ?
ছবি - বিমানেশ চন্দ্র বিশ্বাস
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।