অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইন নিয়ে মাতামাতি চলছে, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে আইন জারি করতে হয়। অবশ্য এমনটা হওয়াটাই উচিত, বাংলাদেশের তথ্য প্রবাহের চিত্র তেমন সুবিধার না।
যেকোনো বড় দুর্ঘটনা কিংবা অঘটনে যখনই কোনো কতৃপক্ষস্থানীয় ব্যক্তি অভিযুক্ত হয় তখনই এই তথ্য তছরুপের ঘটনা ঘটতে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিলো তিনি মেয়েদের প্রতি অতিরিক্ত স্নেহপ্রবন। তিনি ফার্স্ট ক্লাশ করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মেয়েদের কোমল স্থান ব্যবহার করে থাকেন।
এই নিয়ে একটা আন্দোলন হয়েছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তাকে অনেক দিন বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার পরে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এবং এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতনের শেষ ঘটনা নয়, বরং প্রতি বছরই অভিযোগ উঠে, অভিযুক্ত শিক্ষক সব সময়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় পার পেয়ে যান। এবারও একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, মনোবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক সুন্দরী এবং একটু স্বাস্থবতী মেয়েদের প্রতি নেকনজর প্রদান করেন, তাদের কেউ কেউ তার যৌনচেতনায় মারাত্মক দোলা দিয়ে যায়, নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ হন সেই শিক্ষক। মানুষের যৌনকল্পনা থাকে, সেই যৌনকল্পনা বাস্তবায়নের খায়েশও থাকে ১৬ আনার উপরে ১৮ আনা, তবে যখন সামান্য ক্ষমতা যুক্ত হয় এই কল্পনা বাস্তবায়নের সাথে, তখন শুধুমাত্র যৌনকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতার ব্যবহার একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রীর জীবন বিপন্ন করে।
যেমনটা জাহাঙ্গীরনগরের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ এবং প্রতিরোধে এগিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
তারা অনেক বেশী সচেতন এবং অনেক বেশী লড়াকু একটা সংস্কৃতি ধারণ করে নিজেদের ভেতরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে, যেখানে সবাই তথ্য প্রবাহ নিয়ে বড় বড় সেমিনারে বক্তৃতা করে, সেখানেই যেকোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের প্রবনতা নেই। ২৩শে জুলাই ২০০২ ঘটে যাওয়া অঘটনের প্রতিবেদন ছাত্র-ছাত্রীরা জানাতে পারে নি, জানতে পারে নি ৯৭ এ শাহেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত যৌন নির্যাতনের উপরে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন।
মনোবিজ্ঞানের শিক্ষকেরা অর্থকরী গবেষণা করে নির্ধারণ করতে পারেন, এটা কি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের প্রভাব না কি এটা সার্বজনীন একটা বিষয়, শুধুমাত্র যৌনকাতর শিক্ষকেরাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের অনুমতি পায়?
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের কারণেই কি সেখানে যৌন নির্যাতনের ঘটনার হার বেশী? সেখানে নিয়মিত বিরতিতেই অভিযোগ উত্থাপিত হয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে-
শুধুমাত্র যৌনাকাতর হওয়াই কি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিবেচিত হওয়ার অন্যতম যোগ্যতা? আমি জানি না, তবে সেখানেও গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদন অন্ধকারে।
তদন্ত প্রতিবেদন সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসবার দায়িত্ব পালন করে সংবাদমাধ্যম, তবে তারাও নিয়ন্ত্রিত তথ্যপ্রবাহে বিশ্বাসী।
তারা কোনো তথ্যই আদতে প্রকাশ করতে চায় না, বরং তথ্য চেপে ধরে রাখে।
প্রথম আলোর ভান্ডারে এবং সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার ভান্ডারে প্রায় সব রাজনৈতিকের গোপন জীবনের প্রতিবেদন আছে, এবং মিলিটারি সমর্থক সরকারের পথ চলা নির্বিঘ্ন রাখতেই সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন প্রতিবেদনের প্রতিলিপি সংগ্রহের সুযোগ হয়েছে প্রথম আলোর। এই প্রতিবেদনগুলো বিভিন্ন সময়ে হয়রানি এবং ব্ল্যাক মেইলিং এ ব্যবহৃত হয়েছে।
এই লেখাটার ধাঁচটাও প্রথম আলোর মতোই হলো। প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনেই দায়বদ্ধতাবিহীনতার ছাপ পাওয়া যায়।
এসব প্রতিবেদনে দায়সারা গোছে বলা হয়, দায়িত্বশীল মহল মনে করে, কতিপয় সরকারী সংস্থার মতে, এমন জলে ভাসা তথ্য দেখে প্রতিবেদনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করা যেতে পারে আবার এটাও কোনো একটা ষড়যন্ত্রতন্ত্র এমনটাও মনে হতে পারে।
তথ্য অধিকার আইনে একটা ধারা আছে, যেখানে যেকোনো সংস্থা তথ্য প্রদানে অসম্মতি জানাতে পারে, আর্থিক আয় ব্যয়ের হিসাব, কর্মচারীদের স্বচ্ছতা, কতৃপক্ষের স্বচ্ছতা, এবং যেকোনো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের যেকোনো তথ্য জানতে চাইতে পারে, এবং কতৃপক্ষও ব্যক্তির দাবি পুরণে নির্ধারিত সময় গ্রহন করবে, তবে যদি উল্লেখিত তথ্য রাষ্ট্র এবং জননিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়, কিংবা অতিরিক্ত সংবেদনশীল সামরিক তথ্য- তবে কতৃপক্ষ সেই তথ্য প্রদানে বাধ্য নন।
বাংলাদেশের অসচ্ছ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে আছে এর প্রশাসন এবং এর সামরিক সংস্থা, প্রশাসনের যেকোনো তথ্য অবমুক্ত করবার কোনো আগ্রহ না থাকলেই সেই তথ্যকে জনগুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে দেওয়া যেতে পারে, তথ্যের প্রকৃতি নির্ধারণ করবে কারা?
তথ্য তছরুপের ঘটনা কমবে না, তবে মানুষ কিছুটা আশাবাদী হতে পারে, হয়তো তার নিজস্ব স্থানীয় জন প্রতিনিধি এবং স্থানীয় সরকারের আয় ব্যয়ের হিসাব এবং সেখানে নিয়োগ এবং ছাটাইয়ের তথ্যগুলো এবং এর নেপথ্য কারণ তারা জানতেই পারে, এই স্থানীয় সরকার পর্যায়ে আদতে তেমন জনগুরুত্বপূর্ণ এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরুপ তথ্যগুলো থাকে না।
আমাদের তথ্যের অবাধ প্রবাহ প্রয়োজন, তবে তথ্যও মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর। আজ সকালের সংবাদ পত্রে প্রথম আলো কার্যালয়ে বিদ্যুত বিষয়ক সেমিনারের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
ম তামিম সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক টিভি স্টার এবং বর্তমানের দর্জিখানার মালিক আনিসুল হকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ছিলেন আরও বিশেষজ্ঞ মানুষেরা। তারা বিভিন্ন মতামত প্রদান করেছেন, মতামত প্রদান করতেই পারেন,
আনিসুল হক বলেছেন " অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাইলে বিদ্যুৎ থাকতে হবে। কীভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, এ ব্যপারে আমাদের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। সমস্যা আছে , তা স্বত্ত্বেও আগাতে হবে। রাজনৈতিক এবং বুদ্ধিজীবিদের জন্য অনেক কিছু করা যাচ্ছে না।
আসুন উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশের কথা এখন একটু কম ভাবি। "
অধ্যাপক রেজোয়ান খান, যিনি প্রাক্তন বুয়েটের শিক্ষক এবং বর্তমানে ইউআইইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তিনি বলেছেন বর্তমান মূল্য কাঠামোয় বেসরকারী খাত থেকে মানসম্পন্ন বিদ্যুত পাওয়া যাবে না। সৌর বায়ু প্রভৃতি বিকল্প এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানীর দামও অতি উচ্চ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
পেন্ডেকার এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন বড় মাপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিকল্প নেই, তবে এই ধরনের কেন্দ্র স্থাপনের সামর্থ্য নেই দেশীয় উদ্যোক্তাদের, দেশীয় ব্যংকগুলোও এত অর্থ জোগাতে সমর্থ নয়, বিদ্যুত উৎপাদনে কয়লাই বিকল্প জ্বালানী, তাই অতিদ্রুত কয়লা উত্তোলনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এসবের সাথে বিশেষ জ্বালানী উপদেষ্টা তামিমের বক্তব্যটাও পড়তে হবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানী সংস্থান সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি, যদি আজই ১০ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে আর এক ঘনমিটার গ্যাসও দেওয়া উচিত নয়।
এখানে বক্তব্যগুলো বিশ্লেষনের পরে একটা সাধারণ চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়, ভবিষ্যতে কয়লাই হবে বিদ্যূৎ উৎপাদনের অন্যতম জ্বালানি, একটা কয়লানীতি অতিদ্রুত তৈরি করতে হবে, যদি নতুন গ্যাসক্ষেত্র পাওয়াও যায়, সেখান থেকে গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া অনুচিত হবে, অর্থ্যাৎ আমাদের নতুন যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হবে সেগুলো হবে কয়লাজ্বালানীভিত্তিক।
আনিসুল হক বলেছেন কতিপয় বুদ্ধিজীবি এবং রাজনৈতিকের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় সাময়িক সমস্যা তৈরি হচ্ছে, আমাদের পরিবেশের কথা না ভেবে উন্নয়নের কথা ভাবা উচিত।
বক্তব্যগুলোর নেপথ্যে আলাদা একটা গল্প আছে, একটা দুর্গন্ধ পাওয়া যায়,
ফুলবাড়ীর রক্তের সাথে বঞ্চনা করবেই এই সরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।