অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
চাইলেই যেকোনো মর্মান্তিক ঘটনা থেকেও হাস্যরসাত্বক কিছু খুঁজে বের করা সম্ভব। অগাস্ট ২১,২০০৪ এ শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হলো , এবং দুঃখজনক কিন্তু হাস্যকর হলেও সত্য এই সমাবেশটা ছিলো সিলেটের বোমা হামলার প্রতিবাদে সরকারের পদত্যাগ ও পতন দাবি করে আহূত সমাবেশ। সিলেট বোমা হামলার অভিযুক্ত মানুষদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় নি, তেমন ভাবেই সম্ভব হয় নি শেখ হাসিনার উপরে হামলাকারীদের খুঁজে পাওয়া।
অনেক কিছুই সম্ভব হয় না বাংলাদেশে, বাংলাদেশ সব সম্ভবের দেশ হলেও এখানে ন্যায় বিচারের আশা করে জীবনযাপন সম্ভব না, যেকোনো মামলায় অভিযুক্তদের নিশ্চিত ভাবে ঘোষণা করা সম্ভব নয় তারা অপরাধী, সম্ভব নয় অধিকাংশ সময়েই মূল অপরাধীদের খুঁজে পাওয়া, বরং পারস্পরিক দোষারোপের খেলায় এমন একটা পরিস্থিত তৈরি হয়, সেখানে মূল ঘটনার চেয়ে পার্শ্ববর্তী ঘটনাগুলোই অধিকতর প্রভাববিস্তার করে মূল তদন্তকে ছাপিয়ে যায়।
একটা গল্প বলি, দুঃখজনক গল্প, এক দম্পতি গত ৫ বছর ধরে চেষ্টা করছে একটা সন্তান নেওয়ার, নানা রকম চিকিৎসা শেষে, পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়া গেলো মহিলা বন্ধ্যা নয়।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষেরা এটা মেনে নিতে রাজী নয় যে সে আঁটকুড়া হতে পারে, সক্ষম পুরুষ মাত্রই যৌন মিলনে সক্ষম, এবং নারীকে গর্ভবতী করতে সক্ষম, এমন কি অকালে রেতঃপাত ঘটে যে পুরুষেরা তারও নাকি সন্তান হয়, সেখানে এই খেলুরে পুরুষ মানতেই রাজি নয় তার স্পার্মকাউন্ট কিংবা তার বীর্যের জটিলতায় এই অঘটন ঘটতে পারে, এমন পরিস্থিতিতে পুরুষেরা সামাজিক এবং পারিবারিক ভাবেই দ্বীতিয় বিয়ের জন্য অনুপ্রেরণা পায়।
নতুন কচি বৌয়ের সাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সঙ্গমচেষ্টাও সুফল বয়ে আনলো না।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সঙ্গম বৈজ্ঞানিক বিবেচনায় একটু কম ঝুঁকিপূর্ণ বিশেষত যখন পুরুষ সন্তানকামনায় ব্যকুল। বীর্য খুবই স্পর্শ্বকাতর, সামান্য উত্তাপেই উর্বরতা হারায়, সুতরাং নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তার উর্বরতা সর্বোচ্চ শিখরে রাখবার জন্য তাপনিয়ন্ত্রিত পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হতে পারে।
নব বিবাহিত পুরুষ মাসাধিক কাল প্রচেষ্টার পরে প্রায় সান্নিপাতিকের রোগী হয়ে গেলো, ডাক্তারের সাথে আলোচনায় সময় ডাক্তার মৃদু হসে বললেন, নতুন বিয়ে করেছেন, সন্তান চান ভালো কথা তবে সারা রাত কাপড় খুলে থাকতে হবে এমনতো না, বরং হালকা চাদর ব্যবহার করেন।
আরও ৪ বছর প্রাণান্ত প্রচেষ্টা শেষে ডাক্তার যখন ঘোষনা দিলো আসলেই সমস্যাটা সেই পুরুষের তখন বিপর্যস্ত পুরুষ গেলেন মনোচিকিৎসকের কাছে, তার কাছে মনের ব্যথা খুলে বলে হালকা হবেন, মনোচিকিৎসক বললেন বি পজেটিভ, সব সময়ই আশাবাদী হবেন, আসলে পৃথিবীতে যা ঘটে সেটা ভালোর জন্যই ঘটে, সব ঘটনার ভেতরেই একটা ভালো কিছুর ইশারা থাকে, আশাবাদী হওয়ার বিষয় থাকে,
হতভাগ্য ভদ্রলোক কিছুক্ষণ পর যখন সব ঘটনার বিস্তারিত বললেন মনোচিকিৎসককে তখন তিনি বললেন এখানেও আশাবাদী হওয়ার বিষয় আছে।
বিমর্ষ মানুষটা বললেন, এখানে আশাবাদী হওয়ার কি দেখলেন আপনি?
নাহ আপনার কন্ডোম বাবদ কোনো পয়সা খরচ করতে হবে না, অন্তত একটা নিয়মিত খরচের খাত কমে গেলো, আপনার তো দুটো স্ত্রী।
তবে অগাস্ট ২১ তারিখের হামলার পরের দিনের সংবাদপত্র পড়ে যেসব মজার উপকরণ খুঁজে পেলাম সেগুলোও বলে রাখা ভালো,
বিকেল ৫টা বেজে ২৩ মিনিটে প্রথম গ্রেনেডটা বিস্ফোরিত হয়, এরপর বৃষ্টির মতো গ্রেনেড পড়তে থাকে, আনুমানিক ১৩টা গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়, সেই ঘটনার প্রায় ১ ঘন্টা পরে আরও একটা গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয় ৬টা বেজে ২৭ মিনিটে, এবং সেখানে আরও দুটো তাজা গ্রেনেড পাওয়া যায়।
যখন র্যাবের সদস্যরা অনেক বাধা পেরিয়ে সেখানে পৌঁছালো তখন সাতটা, তখনও সেখানে বোমাবিস্ফোরক বিশেষজ্ঞেরা পৌছাতে পারে নি, কয়েকজন সাংবাদিক র্যাবকে অবহিত করেন অন্তত ২টা তাজা গ্রেনেড আছে ঘটনাস্থলে।
আশ্চর্য বিষয় প্রথমে র্যাব সেই গ্রেনড খুঁজে পায় নি, আলোকসল্পতার কারণে গ্রেনেড খুঁজে পাওয়া যায় নি, তবে যখন তথ্যনিশ্চিত হয়ে র্যাব গ্রেনেডের কাছে পৌঁছালো তখনও গ্রেনেডটি যাচাইয়ের উপায় ছিলো না, বাংলাদেশের এলিট পুলিশ ফোর্সের কাছে কোনো টর্চ ছিলো না যা দিয়ে তারা গ্রেনেডটি দেখতে পারে, তবে প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জন্ম দেয়, তাই এক র্যাব সদস্য মোবাইলের আলোতে সেই গ্রেনেড পরীক্ষা করে দেখেন, পরদিন সকালে ৩৫ সদস্যের মিলিটারি গ্রুপ এসে অবশিষ্ট গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত করে নিস্ক্রিয় করে।
তবে র্যাবকে দোষারোপ করি কেনো? তারা আলো ছাড়া অন্ধকারে এত দাগী আসামী ধরতে যায়, সেখানে তাদের বিরুদ্ধে কেউ হামলা না চালালেও তো তারা সন্ত্রস্ত থাকবে, হয়তো ক্রসফায়ারের গল্পটা র্যাব যেভাবে বলে সেভাবে ঘটে না, অন্ধকারে থাকা র্যাব সদস্যরা যখন অভিযুক্তকে নিয়ে কথিত অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যায় তখন তাদের মোবাইল দিয়ে তারা অস্ত্র খুঁজতে শুরু করে, কালো পোশাক পড়া র্যাবকে অন্ধকারে দেখা যায় না, তবে মৃদু মোবাইলের আলো দেখা যায়, এ কারণেই সেখানের উৎসুক মানুষেরা সলুক সন্ধানের জন্যই বাসা থেকে বাইরে বের হয়, এবং এদের কয়েকজনেরই বিড়ি খাওয়ার বদাভ্যাস থাকে,
তারা বিড়ি জ্বালায় এবং অন্ধকারে অপ্রস্তুত র্যাবের সদস্যরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করে সন্ত্রস্ত হয়ে।
তবে অন্ধকারে তার ঠিক অভিজ্ঞতার অভাবেই নিজেদের আশেপাশেই গুলি ছুড়ে, এতে একজন র্যাব সদস্য আহত হয়, তবে অন্ধকারের কারণেই যাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যাওয়া, তার গায়ে ভুলবশত গুলি লেগে যায়। লোকটা অক্কা পায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।