সবকিছুতেই নির্মোক থাকছি, সবকিছুই ইদানীং অর্থহীন মনে হয়; নিজের এই নেতিবাচক প্রবণতায় নিজেই লজ্জিত ।:(
[ ............
জানি না আসলে এটি কি,কোনো কবিতা না নিছক অনুভূতির পঙতিমালা, শুধু জানি অনুভূতিগুলো ছিলো বড় অকপট আন্তরিক, সহজ-সরল আর অন্যরকম অসাধারণ|
লেখা হয়েছিলো সাতানব্বুই এর মাঝামাঝি, এস।এস।সি পরীক্ষার পর নাম্বার হিসাবের পারমুটেশন-কম্বিনেশান যখন জঘন্যমাত্রায় বিরক্তিকর, ঝিমধরা সময়গুলো কাটতেই চায়না; আবার কিছুদিন ছিলাম বিষণ্ণতার এক শহর ঢাকায় তখন|
কোনো এক কঙ্কাবতীর চোখের মায়ায় লিখেছিলাম, কেন জানি তারে আর মনে পড়ে না অনুযোগে| এখনকার সমীকরণে মনে হয় কোনো ঘাত নেই, অনুরণ নেই , আলোড়ন নেই – কেন জানি কেবলই বয়ে যাওয়া জীবন| কিছুটা মরা নদীর মতো|
কর্ণফুলীর হলদেটে কাগজে লেখা সেই অনুভূতির পঙতিমালাগুলো হঠাৎ করে কুড়িয়ে পেয়ে ব্লগের দ্বিমিক পাতায় তুলে দিলাম| কোনো কোনো লাইন পড়ে খুব হাস্যকর কাঁচা অনুভূতি মনে হতে পারে, কিন্তু তাই তো ছিলাম | না?
তাই পুরোপরি সেইরকমই তুলে দিলাম|
............ ]
১.১:
শক্তির কবিতায় পড়েছিলাম - “যাবো বলে থেমে থাকতে নেই, বলতে নেই যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো?“
তারচেয়ে বলি যাবো না কেন? আমি চাই আবেগ ভালোবাসা সত্য সুন্দর ও মঙ্গলময় মহাসত্য|
বলি এসো আজ সবাই বৃষ্টিতে ভিজি|
১.২:
অতঃপর ক্ষমাপ্রার্থনা করেই বলি শিশির , তুমি কি সেই স্ট্রীটে হেঁটেছ আবার যেখানে অপরাজিতা ফুটে রয়েছে
কলেজিয়েটের প্রাচীরে আর শ্যামল ঝোঁপের মাঝে চুঁইয়ে আসে আলো, নিঃসংগ পথচারী হেঁটে যায় খোলা ম্যানহোলে দৃষ্টি সতর্ক ;
যে আলো আঁধারে হেঁটেছিলাম তুমি আর আমি ক্লান্ত
এক অনন্ত ভাস্বর জয়ের দিনে এ জাতির ; তীব্র কন্ঠে আমারও বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, ‘আমি জয় করেছি|
১.৩:
শিশির , মনে পড়ে এপ্রিলের তেরো ,ক্লান্ত এবং বিধ্বঃস্ত একটি অসমাপ্ত ফলাফলবিহীন যুদ্ধের শেষে আমি,
গাদা করা ফাইলস্তুপের উপর বিচ্ছিরি ঝলমলে টিঊবের আলো ,ওপাশে তুমি
অনিন্দ্য অপার; ক্লান্ত চোখে তাকাই উপরে অতীত যুদ্ধের সময়সূচী|
সময় বয়ে গিয়েছিলো ক্রমাগত স্বরের হ্রস্ব ফিসফিসানি গুহায় প্রতিধ্বনি | ক্লান্ত আমি ক্লান্ত তুমি|
১.৪:
তোমায় নিয়ে আমার সেই রাতে কত ভাবনা , শিশির; জানো মাথাব্যাথা নিয়েই আমি মধ্যরাতে হেঁটেছি
নিয়নের ছায়াময় ফুটপাথে আর পূর্ণিমার দিকে সতর্ক চোখ রেখে ,
আইস ফ্যাক্টরি রোডের ভৌতিক আবছায়ায় দীঘল কদমে আমরা হেঁটে গিয়েছি আমার বা আমাদের নিঃসংগ উৎকল্পনার ভেতর দিয়ে,
সমস্ত হিমজমাট ভদ্রতা নিয়ে; হিসাবরক্ষককে সন্তর্পনে এড়িয়ে|
১.৫:
শিশির , মধ্য এপ্রিলের এক ভ্যাপসা স্যাঁতস্যাঁতে দুপুরে, পূরবীর একলয়ের ঐকতান শব্দে যেন
বিশুদ্ধ তাললয়ের উঁচুধরের নৃত্য আর ঝিমধরা অলস দুপুরে চোখমুঁদে আমি ;
ফিরে যাই মার্চে , পনেরোর নয়টা সাতচল্লিশে আর একফাঁকে দেখেছিলাম সেকেন্ডের সোনালী কাঁটা সাতান্নয়,
হলদে হয়ে যাওয়া ছোট্ট কাঠবাদাম গাছের নিচে উচ্ছসিত তুমি অপার সরলতায়।
কি অসংকোচে আর অপার বিস্ময়ে প্রথম আমার ইন্দ্রিয় অনুভব করল একটি চিরপরিচিত চিরঅচেনা সম্বোধন – ‘তুমি’,আমার প্রথম প্রাচীর ভাঙলে তুমি আর প্রথম আঘাতের অনুরণে এলোমেলো আমার নিউরন আর প্রথম আস্বাদিত অচেনা অনাঘ্রাতা তোমার কন্ঠধ্বনি|
২৮-এপ্রিল-১৯৯৭
আইস ফ্যাক্টরি রোড,চট্টগ্রাম ও পর্বতা সেনপাড়া,মিরপুর।
(১.৫/১.১৬) পরবর্তী অংশ
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।