জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, রাজশাহী
রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ধর্ষণের শিকার দুইটি পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্যোগ। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রভাবশালী বিএনপি সমর্থকদের একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রের কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে আওয়ামী সমর্থক পরিবার দুটি। নির্যাতিতদেরকে নিরাপত্তাদান, আইনগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের নামে বহু বেসরকারি সংগঠন দেশে কাজ করলেও এই পরিবার দুটিকে রক্ষায় কার্যকরভাবে কেউ এগিয়ে আসেনি।
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী কৃষি শ্রমিক আবদুল হালিমের কিশোরি কন্যা ধর্ষিত হন ২০০২ সালের ১৯ এপ্রিল। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনার দিনই বিএনপি সমর্থক প্রভাবশালী আবদুল জলিলের ছেলে ছাত্রদল ক্যাডার হারুন-অর রশিদকে স্থানীয় জনতা হাতেনাতে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দেয় আসামিপক্ষ। কিন্তু মামলা তুলে না নেয়ায় শেষ পর্যন্ত বাদি ও ধর্ষণ ভিকটিমের পিতা আবদুল হালিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি হারুন আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস পায়। হালিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় জলিল, জামাল, জহুরুল, জাহাঙ্গীর, জাফর, তাজুল, মাহাবুল, হামেদ ও জহিরউদ্দিন এই ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। কিন্তু পুলিশ ৪ জনকে বাদ দিয়ে জলিল, হামেদ, তাজুল, মাহাবুল ও জহিরউদ্দিনের নামে চার্জশিট দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে বাদিপক্ষ আদালতে নারাজি দাখিল করে। এই নারাজির শুনানি আজও হয়নি।
অন্যদিকে ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি হারুন আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস পান। এরই বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে। সেই আপিলেরও নিষ্পত্তি হয়নি অদ্যাবধি।
প্রভাবশালী আসামিপক্ষ হালিমের ভাই ও নিকটাত্মীয়দের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে একাধিক মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে বলে ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ। দরিদ্র এই পরিবারটি একেবারেই পথে বসেছে।
২০০২ সালের ২১ শে মার্চ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কোন্দা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী রজব আলীর ৭ বছরের শিশু কন্যা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে যুবদলের ৪ ক্যাডার ধর্ষণ করে এবং চাকু দিয়ে যৌনাঙ্গ কেটে দেয়। এ ঘটনায় আশরাফুল, ইসরাফিল, রহিম, মকে ওরফে মখলেছ, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, আশরাফুলের ভাই আশকান ও ভিসিআর চালক আমজাদের নামে ধর্ষণ মামলা করা হয়।
আদালতের আদেশে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে।
কিন্তু ধর্ষক পরিবারের সদস্যদের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। ভিকটিমের পিতা-মাতা-ভাই ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করে পরিবারটিকে সর্বশান্ত করে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ধর্ষিত শিশুটির মাতা নেকজান বেগমকে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, ডাক্তারী সনদে নেকজানের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উল্লেখ না থাকায় মামলায় অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে হামলাকারিদের দায়ের করা মামলায় ধর্ষণ ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের জড়ানো হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।