আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টাইল আইকন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন



বলিউডে সুন্দরী নায়িকাদের অভাব কখনোই হয় না। ডাকসাইটে এসব সুন্দরীর ভিড়েও তার সৌন্দর্য নজর কেড়ে নেয় সবার। আক্ষরিক অর্থেই নজরকাড়া এ সুন্দরীর সৌন্দর্যের খ্যাতি বিশ্বজুড়েই। বর্তমানে নামকরা অভিনেত্রী হলেও বিশ্বসুন্দরী হিসেবে প্রথম নিজের পরিচয় পৃথিবীর কাছে তুলে ধরেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। খুব কম মানুষের মধ্যেই সৌন্দর্য, মেধা এবং বুদ্ধিÑ এ তিনের সমন্বয় ঘটে।

আর যাদের মধ্যে এ তিনটি বৈশিষ্ট্যের সম্মিলন ঘটে, সাফল্য তাদের পায়ে গড়াগড়ি খায়। ঐশ^রিয়ার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বর্তমান বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় এ নায়িকা তার অবস্থানকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে, তার সাফল্য এখন আর ছবি হিট বা ফ্লপের মাপকাঠিতে বিচার করা হয় না। গুণী এ অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি ফ্যাশনেও ভিন্নমাত্রা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তার অভিনীত চরিত্রগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, প্রতিটি চরিত্রেই যেন এক নতুন ঐশ্বরিয়াকে দেখতে পায় দর্শককুল।

আজকের বিশ্বখ্যাত এ অভিনেত্রীর শোবিজে যাত্রা শুরু মডেলিংয়ের মধ্য দিয়ে। আমির খানের সঙ্গে করা পেপসির মাধ্যমে লাইমলাইটে আসেন ঐশ্বরিয়া। এই একটি বিজ্ঞাপনের সাফল্য তাকে শীতল দিভা, প্রুডেন্ট, পামোলিভ, ক্যাসিও এবং ফিলিপসের মতো প্রডাক্টের ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর করে। এরপর তিনি বন্ধুদের পরামর্শে ফোর্ড সুপার মডেল কনটেস্টে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। এখানেই তার সাফল্যের রথ থেমে যায় না বরং চলতে শুরু করে।

এর পরবর্তী ধাপে তৎকালীন আর্কিটেকচারের ছাত্রী ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া কনটেস্টে রানার্সআপ হয়ে ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ডের খেতাব জয় করেন। বর্তমানে অভিনয় মূল ঠিকানা হলেও এখনো সমানতালে মডেলিং করে যাচ্ছেন একসময়ের এ সুপার মডেল। লাক্স, লরিয়েল, নক্ষত্র ডায়মন্ডের মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর তিনি। ভক্তদের প্রিয় অ্যাশের অভিনয় জীবনের শুরু ১৯৯৭ সালে মনি রত্নমের ইরুভার ছবির মাধ্যমে। এ পর্যন্ত অসংখ্য হিট ছবির পাশাপাশি চোখের বালি, রেইনকোট, প্রোভকটডের মতো শিল্পমানসম্মত ছবিতেও অভিনয় করেছেন।

এমনকি হলিউডও তার কাছে অপরিচিত নয়। তার অভিনীত কয়েকটি ইংলিশ ছবি হলো ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্পাইসেস, দি লাস্ট লিজিওন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তি পাবে বহুল আলোচিত পিঙ্ক প্যান্থার ছবিটি। বলিউডে বিয়ে হলে যেখানে নায়িকাদের অভিনয় জীবনের ইতি ঘটে, সেখানে এ তারকা এখন পর্যন্ত সমান দাপটে অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন। বিয়ের পর তার অভিনীত যোধা আকবর ২০০৮ সালে প্রথম ব্যবসাসফল ছবির স্বীকৃতি পেয়েছে।

এ ছবিতে তিনি যোধা বাঈয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন, যা সমালোচকদের প্রশংসা পায়। যোধা বাঈয়ের ভূমিকায় তার গেটআপও প্রশংসিত হয়েছে। এ চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তিনি যে অলঙ্কার পরেছিলেন, তা সত্যিকারের সোনা, হীরা, মুক্তা, চুনি এবং পান্নার ছিল। একাধিকবার আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের সেরা সুন্দরীর স্বীকৃতি পাওয়া এ অভিনেত্রী পরিচালকদের কাছে ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোর জন্য প্রথম পছন্দ। যোধা আকবরের আগে উমরাও জানে ঐতিহাসিক চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।

এছাড়া আগামীতে হলিউডের ছবি তাজমহলে হলিউড তারকা স্যার বেন কিংসলের বিপরীতে মমতাজ মহলের ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। বহুমাত্রিক এ অভিনেত্রী অভিনয় এবং স্টাইলে তার অভিনীত চরিত্রগুলো এতো বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তোলেন যে, ধুম-টু এবং যোধা আকবরের মতো সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী চরিত্রে ভিন্ন গেটআপে দর্শকরা খুব সহজে মেনে নেয় তাকে। প্রথমে ধুম-টুর অতি আধুনিক হট সুনেহরি, যার জন্য তিনি একাধিকবার স্টাইল আইকনের পুরস্কারও পেয়েছিলেন। এরপরই দর্শকদের সামনে হাজির হন সম্রাজ্ঞী যোধারূপে। দুটি চরিত্রেই সিনেমাপ্রেমীরা আপন করে নেয় তাকে।

প্রমাণ পরপর এ ছবি দুটির তুমুল ব্যবসায়িক সাফল্য। অতি সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে স্বামী অভিষেক এবং শ্বশুর অমিতাভের সঙ্গে করা সরকার রাজ। এখানেও তাকে সম্পূর্ণ নতুন করপোরেট লুকে দেখা গেছে। বলা হচ্ছে, এ ছবিতে তিনি ১০ লাখ রুপি মূল্যের একটি সানগ্লাস পরেছেন। ঐশ্বরিয়া হচ্ছেন বলিউডের প্রথম অভিনয়শিল্পী যিনি বলিউডকে পশ্চিমি দুনিয়ায় ব্যাপকভাবে পরিচিত করে তোলেন।

ভারতীয় নায়িকাদের মধ্যে একমাত্র তার মোমের মূর্তি লন্ডনের মাদাম তুসো মিউজিয়ামে আছে। এছাড়া অপরাহ উইনফ্রে শোতেও তিনি প্রথম অংশ নেন। রাশিয়ায় তার নামে একটি টিউলিপ ফুলের নামকরণ করা হয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, পৃথিবীব্যাপী তিনি সুন্দরীদের সেরা সুন্দরী হিসেবে অনেকবার স্বীকৃতি লাভ করেছেন। সব পোশাকেই সমান সুন্দরী অ্যাশের প্রিয় পোশাক হচ্ছে ব্যাগি শার্ট এবং নীল জিন্স।

তার প্রিয় ডিজাইনার হলেন নীতা লুল্লা এবং সাহাব দর্জি। উল্লেখ্য, বিয়েতে তিনি নীতা লুল্লার ডিজাইন করা পোশাক পরেছিলেন। তার প্রিয় রঙ সাদা, নীল এবং লাল। গঠনগত দিক দিয়ে ছিপছিপে শরীরের অধিকারী অ্যাশ ফিগার ঠিক রাখার জন্য জিমে যান না বলিউডের অন্যান্য ফিগার সচেতন নায়িকার মতো। তিনি শুধু নিয়মিত নাচ প্র্যাকটিস করেন।

আর কে না জানে, মাধুরীর পর এখনকার নায়িকাদের মধ্যে একমাত্র অ্যাশই ক্লাসিক্যাল নৃত্যে পারদর্শী। বলিউডের প্রায় সব নায়িকাই ফিগার ঠিক রাখতে যেখানে ক্যালরি মেপে খাবার খান, সেখানে সাবেক এ বিশ্বসুন্দরীর প্রিয় খাবার হচ্ছে আইসক্রিম। আর রূপচর্চার ক্ষেত্রে তার একমাত্র পছন্দ প্রাকৃতিক উপাদান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।