আ িম প্রাণ খু েল িলখ েত চাই ।
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আত্মাহুতি দেব। পরে ভাবলাম সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি দেশবাসীকে জানানো উচিত। একটি দিনক্ষণও ঠিক করেছিলাম। পছন্দ করে এমন দু'জনকে সিদ্ধান্তের কথাটি জানালে একজন হাসলেন, অপরজন মুখ ফ্যাকাশে করলেন।
প্রথমজন বললেন, সাংবাদিকরা আত্মাহুতির খবর লিখে, আর তুমি খবর হবে! দ্বিতীয়জন মন্তব্য করলেন, চরম অন্যায়ের শিকার হয়ে কোন মজলুমের মনে এমন নির্মম চিন্তা আসাটা অস্বাভাবিক নয়। তিনি হতাশ না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে সংক মোকাবেলার পরামর্শ দিলেন।
প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণার ভেতরেও যখন অবসন্ন শরীরে বাসায় ফিরি, আমার একমাত্র সন্তানটি তখন এক গাল হৃদয়স্পর্শী হাসি দিয়ে এক অসাধারণ মমতায় আব্বু' শবইদট উচ্চারণ করে। এরপর বুকে জড়িয়ে নাকে মুখে ভালবাসার লালা ছড়ায়। ২০০৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের প্রথমার্ধে তার জন্ম।
মানসিক যাতনায় দুঃসহ জীন নিয়ে আত্মাহুতির কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেও বিজয়ে জন্মা সন্তানের কাছে আমি শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হই। দ্বিগুণ মমতায় গড়ে তোলা মা-বাবা, আর ভাই-বোনদের কথা না হয় বাদই দিলাম।
প্রায় এক দশক ধরে প্রশ্নাতীত নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দৈনিক আজকের কাগ (অধূনালপ্ত), ইনকিলাব, সমকাল ও যুগান্তর পত্রিকায় কাজ করেছি। সাংবাদিকতায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য ২০০৩ সালে মানিক মিয়া (ডিআরইউ) ও ২০০৫ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছি। শত্রুও আমার চারিত্রিক সততা নিয়ে কখনও প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
বর্তমান তত্ত্বাবধায় কৎসরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যুগপৎভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ করছে। সামান্য সংবাদকর্মী হিসেবে আমিও এর অংশীদার। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে এখন আমার কর্ম ও জীবন দু'টোই বিপন্ন। কিন্তু কেন. সেটিই আজ আমার লেখার বিষয়।
দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় আমি সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে র্মরত ছিলাম।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কুমিল্লা-১০ আসনের জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আমার ব্যাংক জালিয়াতি ও তার কিছু আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আসে। অভিযোগগুলো দীর্ঘ যাচাই বাচাইয়ের পর সাংবাদিকতার নিয়ম অনুসারে ০গ ৬ এপ্রিল ২০০৮ রেজাউল করিমের বক্তব্য জানার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি না হয়ে পরদিন আমাকে মতিঝিলে প্যাসেফিক হোটেলে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানান। কথা মতো আমি সেখানে যাই এবং রেজাউল করিম তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তাকে বিস্তারিত অবহিত করি। অভিযোগ শুনে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন।
এক পর্যায়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার তথ্য উপাত্ত তুলে ধরলে রেজাউল করিম অত্যন্ত কাতরকণ্ঠে বিষয়টি আপস মীমাংসার প্রস্তাব দেন। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর পল্টন থানা আমীর সিরাজুল হকও উপস্থিত ছিলেন।
আমি বিনয়ের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে রেজাউল করিমকে জানাই, এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওয়াকিবহাল। এ ব্যাপারে তার বাড়তি কিছু বলার থাকলে তিনি যেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি ওইদিনই যথারীতি রিপোর্টটি রেজাউল করিম ও জামায়াতের ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বক্তব্যসহ জমা দেই এবং ৯ এপ্রিল তা যুগান্তরে প্রকাশিত হয়।
রিপোর্টটি প্রকাশের আগে রেজাউল করিম কয়েকজন নেতৃস্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান। সব চেষ্টা ব্যর্থ হবার পর গত ৭ ও ৮ এপ্রিল রাতে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার দু'জন পদস্থ কর্মকর্তা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে ০১৯১৪১২৩৬১৮ ও ০১৫৫০১৫৩৬৪৯ নম্বর থেকে আমাকে রিপোর্ট প্রকাশের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।