আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের মূল ভিলেন

ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
পরিবেশ সম্মত যানবাহন চাই গ্রিনহাউস এফেক্ট সূর্য তাপের অধিকাংশই পৃথিবীতে প্রবেশ করে আবার প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবী থেকে চলে যায়। এ প্রক্রিয়ায় বাধা দেয় কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন এবং অন্য প্রায় ৩০টি গ্যাস। বাধা পাবার ফলে তাপ আটকে পৃথিবী গরম হয়ে যায়। পৃথিবীতে তাপ আটকে ফেলতে সাহায্য করে যেসব গ্যাস তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলা হয়। এগুলো প্রধানত ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানি (যেমন পেট্রল, ডিজেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস) পোড়ানোর ফলেই সৃষ্টি হয়।

শীতপ্রধান দেশে কাঁচের গ্রিনহাউসের মধ্যে তাপ আটকে রেখে গাছপালা লাগানো হয়। ঠিক একইভাবে পৃথিবীর তাপ বেড়ে যাচ্ছে বলে একে গ্রিনহাউস এফেক্ট বলা হয়। পৃথিবী যখন গ্রিনহাউস ১৯ শতকে পৃথিবীর তাপমাত্রা খুব একটা বাড়েনি বললেই চলে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতেও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ১৯৭০-এর পর থেকে এ গ্রহের তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

গত ১০০ বছরের গড় বৃদ্ধি প্রায় ০.৬০ সেলসিয়াস (১.১০ ফারেনহাইট)। মাত্র আধা ডিগ্রি তাপ বৃদ্ধি অনেকের কাছেই তেমন বড় কোনো বিষয় বলে মনে হয়নি। কিন্তু শতাব্দীর শেষ নাগাদ এ তাপ আরো দুই ডিগ্রি বাড়বে বলে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। মাত্র আধা ডিগ্রি বাড়াতেই পরিবেশের ওপর যে প্রভাব পড়ছে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ তা কোন পর্যায়ে পৌছাবে তা কারো পক্ষেই অনুমান করা সম্ভব হচ্ছে না। গরম এবং ঠাণ্ডা গ্রিনহাউস এফেক্টের কারনে পৃথিবী কিন্তু হঠাৎ করে গরম হয়ে যাবে না।

কিছুদিন খুব গরম এবং কিছুদিন সে তুলনায় ঠান্ডা, এভাবেই চলতে থাকবে গ্রিনহাউস এফেক্টের খেলা। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম পঞ্চাশ বছর যদি গরম বাড়তে থাকে তাহলে পরবর্তী পঞ্চাশ বছর গরম কমতে থাকবে। পরবর্তীতে আবার গরম বাড়বে। এই প্রক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গেছে গত শতাব্দীতে। গত শতাব্দীর মাঝামাঝিতে প্রধানত সালফার এবং বাতাসে ভাসমান বিভিন্ন পদার্থের কারণে তাপ পৃথিবীতে আসতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিলো।

ফলে এ সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা কমার লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। ১৯৭৫ সালে নিউজউইক ম্যাগাজিনের কভার স্টোরি ছিল দি কুলিং ওয়ার্ল্ড। পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে খাদ্য উৎপাদন কমে গিয়েছিল এ সময়। তবে শতাব্দীর শেষ নাগাদ এ ধরনের দূষণ কমে আসে কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাস ব্যবহার বাড়তে থাকে। ফলে পৃথিবী আবার গরম হতে থাকে।

গত কয়েকশ’ বছরের তাপমাত্রার চার্টে এ বিষয়টি বোঝা যায়। ওজোন স্তর ক্ষয় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ১৯ থেকে ৪৮ কিলোমিটার উচ্চতায় ওজন গ্যাসের একটি লেয়ার আছে। এই লেয়ার সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রে বা অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয়। গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলো ওজন স্তর ক্ষয় করে ফেলছে। ফলে পৃথিবীতে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি প্রবেশ করছে।

এর ফলে উদ্ভিদের ক্ষতি হচ্ছে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ্যারোসোলে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন গ্যাস ওজোন লেয়ার ধ্বংসের প্রধান কারণ। মূল ভিলেন কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রায় চার বিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে কার্বন ডাইঅক্সাডইড সহনীয় মাত্রায় উত্তপ্ত করে রেখেছে। ১৭০০ সালের শিল্প বিপ্লবের পর থেকে ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাস অনেক বেড়ে গেছে।

বর্তমানে বায়ুমল্ডলে চার লাখ ২০ হাজার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস রয়েছে। শিল্প বিপ্লবের পূর্বে পৃথিবীতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা ছিল ২৮০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) যা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ৩৮০ পিপিএম। বর্তমান বৃদ্ধির মাত্রা বজায় থাকলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ তা ৮০০ পিপিএম-এ পৌছাবে। এই অতিরিক্ত কার্বন ডাইঅক্সাইড বাতাসে প্রায় ২০০ বছরেও কমানো যাবে না বলে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন। কার্বন ডাই অক্সাইডের অতিরিক্ত নির্গমন পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রাথমিক কারণ।

তাপমাত্রা বৃদ্ধিই অন্যান্য সমস্যাগুলোকে নিয়ে আসছে। গত শতাব্দীর তুলনায় এ শতাব্দীতে পরিবর্তনগুলো দ্রুত ঘটছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত ১০ হাজার বছরেও এতো দ্রুত পরিবর্তনের নজির নেই। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন করে ইউনাইটেড স্টেটস এর পর রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, চায়না, রাশিয়া এবং ইনডিয়া।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.