বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...
লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক র্যালি ২০০৮
ঘনঘন নৌ-দুর্ঘটনার জবাব দেবে কে ?
প্রতি বছর ঘটছে ভয়াবহ নৌ-দুর্ঘটনা। ঘটছে প্রাণহানি। তদন্ত কমিটি হয়, প্রতিবেদন পেশ করা হয়, দুর্ঘটনা বন্ধের সুপারিশ তৈরি করা হয়। কিন্তু নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেই চলে। প্রতিবছর-ই বর্ষা মৌসুমে লঞ্চ দুর্ঘটনার পরপরই এইসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের রিপোর্ট মতে, লঞ্চ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ডি ক্যটাগরির অযোগ্য নৌ-চলাচল এবং অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই। বর্ষা মৌসুম এলেই আমাদের দণি বাংলার মানুষের নৌ-দুর্ঘটনা নিয়ে আতংকে দিন কাটানোর দিন। নদী পথে যাতায়াতের একটি অন্যতম সহজ পথ হল দণি বাংলার মানুষের। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে কর্তব্যে অবহেলা, অযোগ্য নৌযান চলাচলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে দুর্নীর্তির মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদান এবং নজরদারী না রাখা একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। লঞ্চ মালিক ও চালকদের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে নিয়ম-কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শণ এবং সর্বপরি নিরাপদ নৌ-চলাচল বিষয়টিকে সরকারের আমলে না নেওয়ার ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই নৌ-দুর্ঘটনা ঘটে চলছে।
এর যেন কোনো প্রতিকার নেই। মানুষের জীবনের মূল্যকে এরা থোরাই কেয়ার করেন।
দুর্ঘটনার পর শত শত পরিবারের ক্রন্দনধ্বনি ওঠার পরেই কেবল কর্তৃপ কয়েক দিন এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়, তদন্ত কমিটি হয় এবং একটি দায়সারা গোছের তদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। আবারও যথারীতি আগের মতোই নৌ-মালিক ও চালক দস্যুদের রাজত্ব চলতে থাকে নৌ-রুটে। এটা যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে।
যে লঞ্চ দুর্ঘটনায় শত শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, নৌ-পরিবহন কর্তৃপরে সেখানে কাজটা কি ? তাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই ? এতোগুলো মানুষের মৃত্যুর জন্য শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দায়ী করে কি দায় এড়ানো সম্ভব ? লঞ্চ চলাচলের অযোগ্য হওয়ার পর কিভাবে উপযুক্ততার সাটির্ফিকেট পায় ? কাদের মাধ্যমে পায়? রাষ্ট্র কি করে? রাষ্ট্রের কাজ কি শুধু বদমায়েশদের রাজত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া ? রাষ্ট্রের কাজ কি শুধু খারাপ মানুয়ের পে কাজ করা ? জনগণের টাকায় যে রাষ্ট্র চলে, সেই রাষ্ট্রের যারা কর্মকর্তা, কর্মচারী, তাদের তাহলে দায়িত্বটা কি? আমরা ট্যাক্স দিয়ে রাষ্ট্রের এতোসব বাহিনী পালছি, তাদের কর্তব্যটা আসলে কি? নিরাপদ নৌ-চলাচলে নৌ-পুলিশের ব্যর্থতার দায়ে তো কারো কখনো দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়নি। কোনো লঞ্চ মালিকের সাজা হয়নি। কোনো নৌ-চালকের সাজা হয়নি? নৌ-পুলিশ ব্যর্থ হলে নৌ-বাহিনী কি করছে? সেনা-বাহিনী কি করছে? রাষ্ট্র কি করছে? আমরা কি শুধুই দুর্ঘটনার শিকার হতে থাকবো? তাহলে রাষ্ট্রযন্ত্রের দরকারটা কি? আমরা কি তাহলে এখনো মগের মুল্লুকে বাস করছি না? আমরা কি এখনো কতিপয় দস্যুর রাজত্বে বসবাস করছি না? এতোসব বিষয়ের জবাব কে দেবে? আমরা চাই যান্ত্রিক ত্র“টি বা নৌ-চালকের খামখেয়ালীতে বা নৌ-রুটের নিয়ম কানুন উপো করে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহনের জন্য আর যেন কোনো নৌ-দুর্ঘটনা না ঘটে। সরকারকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। এ যাবৎ সংগঠিত সকল নৌ-দুর্ঘটনার যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
রাষ্ট্রে কেউই যে আইনের উর্ধ্বে নয় সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বর্তমান সেনা-বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ঘন ঘন লঞ্চ দুর্ঘটনার বিষয়গুলি আরো কঠোরভাবে দমন করা সম্ভব।
আমরা চাই প্রত্যেক বছর ঘন ঘন লঞ্চ দুর্ঘটনা এড়াতে উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন নৌযান ও আধুনিক নৌ-ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন। মানুষের জীবনের মূল্যের চেয়ে অন্য কোনো অযৌক্তিক যুক্তিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। নিরাপদ নৌ-চলাচল বাস্তবায়ন মুভমেন্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকে স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য প্রতি বছর ২৩ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোক র্যালি ও মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বল করে জনগণকে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে।
এ বছরও নিরাপদ নৌ-চলাচল বাস্তবায়ন মুভমেন্ট ২৩ মে ২০০৮ শুক্রবার বিকাল ৪.৩০টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শোক র্যালি বের করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিত করতে যথাযথ সহযোগিতা করতে আহবান জানাবে।
নিরাপদ নৌ-চলাচল বাস্তবায়ন মুভমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত শোক র্যালি ও মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে আপনি স্ব-বান্ধব উপস্থিত হয়ে আপনার মূল্যবান মতামত তুলে ধরবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানের সময়: ২৩ মে ২০০৮, রোজ শুক্রবার, বিকেল ৪.৩০ মিনিট
স্থান: জাতীয় জাদুঘর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ
আয়োজন: নিরাপদ নৌ-চলাচল বাস্তবায়ন মুভমেন্ট
ধন্যবাদন্তে
সুমন শামস ও রেজা ঘটক
নিরাপদ নৌ-চলাচল বাস্তবায়ন মুভমেন্ট
প্রয়োজনে:০১৭১১-১৬৫৮৬৩, ০১১৯৯৫২১৭৫৯।
Email: or
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।