মানুষ আমি আমার কেন পাখির মত মন....
লঞ্চ -এ উঠিনা অনেকদিন। একসময় যখন লঞ্চ -এ উঠতাম তখন দেখতাম সদরঘাটে লাইনদিয়ে দাড়িয়ে থাকত অনেকগুলো লঞ্চ। লঞ্চ -এ চড়াটা খুব মজার। পরন্ত দুপুরে লঞ্চ -এর ছাদে দাড়িয়ে নদীর পারের প্রকৃতি দেখার মজা আর কিসে আছে? নদীর ঠান্ডা বাতাস সাথে গরম চা আর চারদিকে বাংলার অপরূপ রূপ! যখন আমি লঞ্চ -এ উঠতাম তখনো ক্যামেরাসহ মোবাইলের প্রচলন হয়নি, থাকলে (যদিও আমি এখনো ক্যামেরা বিহীন মোবাইল ব্যবহার করি ) সেসময়ের কিছু ছবি দিতে পারতাম।
তখনকার তুলনায় এখন যাত্রী সংখ্যা অনেক বেড়েছে, কিন্তু কমেছে লঞ্চ -এর সংখ্যা।
কারন একসময়ের মহান ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন রোটেশন প্রথা নামে একটি নিয়ম চালু করেছিলেন যার ফলে প্রতিদিন উভয় প্রান্ত থেকে তিনটি লঞ্চ চলাচল করে। তখন এ নিয়ে কিছুটা কথা হলেও তখনকার যুবরাজের ভয়ে এ নিয়ে বেশী উচ্চবাচ্য হয়নি। এটি নিয়ে অনেক লেখালেখি হয় যুবরাজের সম্রাজ্যের পতনের পর। সেই যুবরাজ এখন নেই, সেই মহান ব্যবসায়ীও এখন সিনে নেই তারপর আছে তার নিয়ম আছে আরেক যুবরাজ।
আমাদের দেশে প্রায় ১০০টি লঞ্চ রয়েছে (সংখ্যাটি আনুমানিক)।
যার ৫০টির নাম আমি নিজেই জানি যেমনঃ সাগর, সুরভী, কীর্তনখোলা, দ্বীপরাজ, পারাবত এদের প্রতিটি কোম্পানীর ১০টির বেশী লঞ্চ রয়েছে।
এ অবস্থায় প্রতিদিন তিনটি করে লঞ্চ চালানো কতটা যুক্তিযুক্ত? যেখানে যাত্রী রয়েছে অনেক। এবার ঈদে লঞ্চর অভাবে অনেকেই সময়মত ঢাকায় ফিরতে পারেননি, অনেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে ফিরেছেন, অনেকে অগ্রীম কেবিনের টিকিট কেটেও কেবিন পাননি, ইত্যাদি হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন সাধারন যাত্রীগন। তারচেয়েও একটি গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার হচ্ছে, যে মানুষটি প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে ঝুকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চ উঠছেন তিনিযে শুধুমাত্র নিজের জীবনের ঝুকি নিচ্ছেন তাই নয় তার কারন লঞ্চের সবার জীবন ঝুকির মধ্যে পড়ছে। আর বড় দুঃখের বিষয় হচ্ছে, দেশে পর্যাপ্ত লঞ্চ থাকার পরও মানুষকে কস্ট করে কম লঞ্চ অধিক যাত্রী হয়ে যেতে হচ্ছে।
দেশের হাজার হাজার জনগনের কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের বেশী লাভের জন্য সৃষ্টি হয়েছিল এই রোটেশন প্রথা, যে করেছিলেন সেই মামুন বা যুবরাজ কেউই এখন নেই তারপরও এই প্রথা কেন এখনো রয়েছে। তখন বলা হয়েছিল সব যুবরাজের দোষ কিন্তু এখন?
আমরা আশা করব সাধারন যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে এসব আজে বাজে নিয়ম ত্যাগ করে সরকার যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট হবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।