যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
নমুনা-১
উনি ভীষন সৎ। কোন ঘুস খান না। সেক্রেটারিয়েটে তার দারুণ রেপুটেশন। বাস্তবিকই। পূর্ণাঙ্গ সচিব হয়েই আছেন প্রায় তিনবছর।
তিনচারটে মন্ত্রণালয় ঘোরা হয়ে গেছে। সর্বত্রই তার নামের বাহার।
এই ভদ্রলোক তার চাচা শশুরের বাসায় পানির সংকট দেখা দিলে তার মন্ত্রণালয়ের একজন এসিসটেন্ট সেক্রেটারীকে সবসময় ওয়াসার সাথে কথা বলার জন্য এনজেগ রাখেন। ইদানিং পানি সংকট তীব্র হওয়াতে এবং সেনাবাহিনী পানির গাড়ী ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বে থাকাতে বড় কর্মকর্তারাও বেশ সিরিয়াল নাটকে পড়ে গেছেন। তো ঐ এসিসটেন্ট সেক্রেটারীর কাজ হলো তার সেক্রেটারীর চাচাশশুরের বাসায় প্রতিদিন যেন এক ট্রাক পানি পৌছে যায় তার ব্যবস্থা করা।
নমুনা-২
তিনিও খুব সৎ। কোন উপরি নেননা। বেতনের টাকায় সংসার চালান। সরকারী কোয়াটারে থাকেন। একটা সরকারী প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক।
নিজের গ্রামের বাড়ীতে জাকাতের এক লাখ টাকা দেবেন বলে উক্ত জেলার জেলাপ্রশাসক থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদের সব কর্মকর্তাদের মোটামুটি তটস্থ করে রেখেছেন। এই সব কর্মকর্তাদের গাড়ীর ফুয়েল কস্ট, আপ্যায়ন বাবদ আনুমানিক এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
নমুনা-৩
তিনি একটা সরকারী প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী। ভীষণ সৎ। তার অফিসের গাড়ী সবসময় তার স্ত্রী, সন্তানের সেবায় নিয়োজিত।
আর অন্যদিকে পুল থেকে একটা গাড়ী তার সেবায় নিয়োজিত। অফিসের কম্পিউটার, ল্যাপটপ তার বাসার সদস্যরা নিজের মত ব্যবহার করে থাকে। বছরান্তে অফিসের খরচে সে ল্যাপটপের মডেলও পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।
নমুনা-৪
তিনি একজন সরকারী ঊর্ধ্ব ঊর্ধ্বতন আমলা। সৎ এর চূড়ান্ত।
তার মেয়ে একটা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। মেয়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় নাই বলে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পর্যন্ত পেছানো হয়েছিল।
উপরোক্ত চারজনের সরকারী অর্থ আত্মসাৎ বা ঘুসের কোন নমুনা আমার চোখে পড়ে নাই। কিন্তু তাদের এইসব কর্মকান্ডগুলো একদমই নৈমত্তিক। এগুলো কারো চোখে পড়ে না, অনৈতিক মনে হয় না।
আমার দেখা মতে সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা সৎ বলে পসার কামিয়েছে তাদের বেশীরভাগ সরকারী সম্পত্তি নিজের বাবদাদার মনে করে ভোগ করে থাকে। সাবঅর্ডিনেটদের শ্রমঘন্টা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, সরকারী গাড়ী, অফিস লজিস্টিকস ও আপ্যায়ন সুবিধা পারিবারিক কাজে যথেচ্ছা ব্যবহার করে থাকেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।