leo_abdullah@yahoo.com
শারীরিক দুর্ভোগ এবং আর্থিক বিষয় বিবেচনা করলে চিকিৎসা করানোর চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করা অনেক কম ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের দেশের জনস্বাস্থ্য সেবা ও মেডিকাল প্রফেশনালদের খুব জটিল ভূমিকায় রোগ এড়ানোর মানুষজনকে সহযোগিতা করতে হয়।
জনস্বাস্থ্য সেবার দায়িত্ব হলো সামাজিকভাবে জনসাধারণের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষা দেয়া। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা এবং বাড়ি-ঘর ও অন্য স্থানের ময়লা নিষ্কাশন করা। মশাসহ অন্যান্য কীট-পতঙ্গকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কীটনাশক ছিটানো তাদের দায়িত্ব।
এছাড়াও জনসাধারণের জন্য অন্য সুবিধা যেমন Ñ স্কুল, কলেজ ও হসপিটাল ইত্যাদি পর্যবেক্ষণে রাখা যেন প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার দিক থেকে মানসম্মত পর্যায়ে থাকে। শিক্ষা ও অন্যান্য সার্ভেইলেন্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডাক্তার ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে আগেভাগেই সজাগ হতে পারেন।
চিকিৎসক, ডেন্টিস্ট ও অন্যান্য মেডিকাল এক্সপার্টদের আয়ত্তে বেশকিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হলো ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে দেহে প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করে।
ভ্যাকসিনকে ধন্যবাদ যে পোলিওর প্রাদুর্ভাব আজকের দিনে কমে গেছে অনেকটাই ও গুটিবসন্ত (স্মল পক্স) নির্মূল হওয়ার পর্যায়ে। এছাড়াও ছোট বাচ্চাদের ডিপথেরিয়া ও হুপিং কাশির মতো জীবননাশকারী রোগ এখন অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে।
রোগ প্রতিরোধের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো নিয়মিত মেডিকাল চেকআপ করানো। ফলে ডাক্তাররা প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করতে পারেন। মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে সহজে রক্ষা পেতে পারেন আপনি, সেই সঙ্গে চিকিৎসা প্রক্রিয়াটিও হয় সহজ।
উদাহরণ হিসেবে ধরুন, একজন ডেন্টিস্টের কাছে চেকআপ করতে গেলে তিনি দাতের প্লাক তুলবেন। প্লাক হলো দাতের ওপর ব্যাকটেরিয়ার আঠালো ধরনের একজাতীয় আস্তরণ। মুখের মধ্যে যেসব জায়গায় আপনার পক্ষে পৌছানো কঠিন যেমন, দাত ও মাঢ়ির সংযোগস্থলে প্লাক দাতকে কঠিন রোগের দিকে নিতে পারে। ওইসব স্থানে যেসব টিসু দাতকে মাঢ়ির সঙ্গে আটকে রাখতে সাহায্য করে প্লাক সেগুলোকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
আমাদের মধ্যে যাদের স্বাস্থ্যগত অভ্যাস ভালো নয় তাদের সবচেয়ে দামি জনস্বাস্থ্য সেবা কিংবা মেডিকাল সার্ভিস দিয়েও খুব একটা লাভ হয় না।
অগুনতি গবেষণায় এটা প্রমাণ হয়েছে যে, স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের মধ্যে সংযোগ সূত্র হলো ব্যালান্সড ডায়েট অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া করা, ভারসাম্যপূর্ণ ওজন বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, কনডম ব্যবহার করা ও সীমিত সংখ্যক যৌন সঙ্গী রাখা, তামাক বর্জন, ও অ্যালকোহল বর্জন কিংবা মাত্রা বজায় রেখে গ্রহণ করা। যেসব মানুষ এ গাইড লাইনগুলো মেনে চলতে ব্যর্থ হন তারা হৃদরোগ, ক্যান্সার, এইডস, হেপাটাইটিসসহ অন্য ভয়ঙ্কর রোগের ঝুকি বাড়ান।
জনস্বাস্থ্য সেবার মান, মেডিকাল প্র্যাকটিস ও ব্যক্তিগত দায়বোধ Ñ এ তিনটি বিষয়ের পারস্পরিক সম্পর্ককে দাতের ক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। খাবারের টুকরা মুখের মধ্যে আটকে গিয়ে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। তিনটি ধাপে দাতের এ ক্ষয়কে কার্যত বিনাশ করা সম্ভব।
জনসাধারণের জন্য সাপ্লাইয়ের পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্লুরাইড মেশানো, প্রফেশনাল ডেন্টিস্টের সাহায্যে কোটিং নিয়ে দাতকে প্লাস্টিক সিল করে দেয়া যাতে এক ধরনের মাইক্রোস্কপিক পিটের মধ্যে দাত ক্ষয়কারী ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে এবং সর্বোপরি নিয়মিত দাত ব্রাশ ও ফ্লসিং করা।
< তামিম আব্দুল্লাহ >
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।