আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শব্দের অবসেশন বনাম নষ্টালজিয়ার সন্ধানে

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

অবসেশন শব্দটা অনেকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শব্দটি একইসাথে ইতিবাচকতা কিংবা নেতিবাচকতা বহন করতে পারে। অবসেশনকে ভালো করে বুঝতে হলে বুঝতে হবে স্পিরিটকে। একজন মানুষের অন্তর্গত অনেক ধরনের স্পিরিট থাকে। এজন্যই মানুষের অবসেশন বহুর্মুখী।

এক কৃপনের অবসেশনের গল্প শুনেছিলাম। কিপ্টটার অপসেশন কাড়ি কাড়ি টাকার প্রতি। টাকা যাতে বেশি খরচ না হয় সেই চেষ্টার অন্ত নাই তার। একবার তার গুদামঘরে আগুন লাগলো। সেই গুদামঘরে রাখা চাল আল আর আলু...।

তার সেই গুদামে আগুন লাগলো। কিপ্টা তখন টাকা খরচ হবে দেখে ফায়ার সার্ভিস অফিসে ফোন করে না। দিল কয়েকটা মিস কল। কিন্তু মিস কলে কি আর ফায়ার সার্ভিস জাগে। কিপ্টার গুদাম ঘরের চাল আর আলু গেল পুড়ে।

কিপ্টা তখন পোড়া আলু খাওয়া শুরু করলো। কিপ্টা তখন বলে পোড়া আলু হেভভি টেস্ট!! তবে এখানে একটা বিষয় হলো বেশি করে আলু খান, ভাতের উপর চাপ কমান থিওরির প্রয়োগ হলো পরোক্ষভাবে...কিপ্টার অবসেশন গ্রো করলো পোড়া আলুর প্রতি। প্রসঙ্গ কিপ্টা না। প্রসঙ্গ ছিল অবসেশন। অবসেশন নির্ভর করে স্পিরিট এর উপর।

একটা স্পিরিট যখন একটা মানুষকে প্রভাবিত করে তখন তা তার জন্য অবসেশন হয়ে দাড়ায়। শব্দের অবসেশন বিষয়টা একটু ভিন্ন। যারা লিখে প্রতিটা মানৃষের আরো স্পেসিফিক করে বলতে গেলে লেখকদের কিছু বিশেষ শব্দের প্রতি আলাদা অবসেশন থাকে। ঘুরে ফিরে সেই শব্দগুলোই উঠে আসে তার লেখায়। লেখক হয়তো অনেক সময় তা অনুভব করতে পাচ্ছেন না।

কিন্তু শব্দগুলো আদতে বাসা গেড়ে বসেছে তার লেখার স্বত্ত্বায়। এইটাকে বলে লেখকের শব্দের অবসেশন। আমি লেখক না। তারপরেও লেখার ক্ষেত্রে কিংবা বলার ক্ষেত্রে কিছু শব্দের অবসেশন আছে আমার। এর মধ্যে একটা শব্দ হলো নষ্টালজিয়া।

আমার স্মৃতিচারনে নষ্টালজিয়া শব্দটা না আসলে কেমন যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায় বিষয়টা। আমি না চাইলেও কেমন করে জানি নষ্টালজিয়া শব্দটা চলে আসে। চলে যাই নষ্টালজিয়া প্রসঙ্গে। নষ্টালজিয়া শব্দটার মুল ব্যবহার এখন অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আভিধানিক অর্থে অনুযায়ী নষ্টালজিক হচ্ছে হোমসিকনেস এর অন্য রুপ।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু ডিকশনারিতে এটার অর্থ অতীতের স্মুতিময় সময় হিসাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে অতীতের সেই সময়টা সেন্টিমেন্টাল হতে হবে, সেই সময়টার স্মৃতিচারণ মনের গভীরকে তাড়িত করবে। নষ্টালজিয়া জোহানেস হপার নামরে একজন সুইস মেডিক্যাল স্টুডেন্ট প্রথম চালু করেন ১৬৮৮ সালে। শব্দটা যেমন অতীতের তেমন বয়ে চলছে অতীত স্মুতি। গ্রীক নস্টজ আর অ্যালগস শব্দের মিলনে নস্টালজিয়া এসেছে।

নস্টস শব্দটার মানে রিটানিং হোম আর অ্যালগস শব্দটার মানে পেইন। সবমিলিয়ে সেই হোমসিকনেস জাতীয় কিছু হয় আর কি। তবে এখন আমরা হরহামেশা নষ্টালজিয় শব্দটা ব্যবহা করছি অতীত কোন স্মরনীয় সময়, স্মৃতি, ঘটনা কেন্দ্রিকতায়। আমরা নষ্টালজিক হই হরহামেশাই। আর আমরা নষ্টালজিক হতে পারি বলেই স্মৃতিকেন্দ্রিক আমাদের এতো এতো ভাবনা।

(লেখাটার কেন্দ্রিক আরো কিছু ভাবনা ছিল। কিন্তু লোডশেডিংয়ের জ্বালায় সেই ভাবনাগুলো ঠিকমতো লিখতে পারলাম না। পরে একসময় এটা সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চালাবো। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।