সংস্কৃত 'বড্র' থেকে বাংলায় 'বড়' শব্দটি এসেছে। প্রাচীন বাংলায় বড় শব্দটিকে লেখা হত 'বোড়' (ধান দেখিয়া পরভুর মনে বোড় ইচ্ছা - শূন্যপুরাণ)।
'বড়' বিশেষণটি বাংলা ভাষায় নানা অর্থ বহন করে। এটার সাধারণ অর্থ বৃহৎ। দীর্ঘ, বিশাল, লম্বা, ঢেঙ্গা, মাথায় উচ্চ, স্ফীত বা মোটা, অত্যন্ত অর্থেও বড় শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
পরিমাণ বা আধিক্য অর্থেও শব্দটি চালু রয়েছে (বড় লেগেছে, আমার মাথায় দেয় দাগা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ)।
অতিশয়, অতিরিক্ত, অত্যধিক নির্দেশ করতেও বড় শব্দটি বাংলায় প্রচলিত (সে বড় বাড় বেড়েছে)।
অন্যদিকে বয়সে বড় বোঝাতে বাংলায় যে 'বড়' শব্দটি ব্যবহৃত হয়, তা এসেছে সংস্কৃত 'বৃদ্ধ' শব্দ থেকে (সভাজন শুন জামাতা গুণ বয়সে বাপের বড় - ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর)। শব্দটির বিবর্তন এ রকম : সংস্কৃত বৃদ্ধ> বুড্ঢ > বুড় > বড়।
একই ভাবে এ বড় শব্দটি ব্যবহৃত হয় সম্মানে বড়, শ্রেষ্ঠ বা উচ্চপদস্থ বোঝাতে (বারেকের তরে ভুলাও জননী, কে বড় কে ছোট কেন দীন কে ধনী কেবা আগে কেবা পিছে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।
মহৎ, প্রশস্ত, উদার অর্থেও বড় শব্দটির ব্যবহার রয়েছে (তার হৃদয়টি সত্যি বড়)।
ধনী বোঝাতেও বাংলায় বড় শব্দটির সাবলীল ব্যবহার রয়েছে (বড়র পীরিতি বালির বাঁধ। ক্ষণে হাতে দড়ি থেকে চাঁদ - ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর)। এছাড়া বিপরীতার্থক (রোগের সময় বড় দেখলে তায়, এখন দেখবে), তুচ্ছার্থে (বড় হাসির কথা নয়) ও সামান্য ভাবব্যাপক অর্থে (বড় নাকি গাঁ তার আবার মাঝের পাড়া) বড় শব্দটির প্রয়োগ আছে।
খড়ের তৈরি মোটা দড়ি অর্থেও শব্দটি এক সময় বাংলায় প্রচলিত ছিল (কাপড় উসাস করে যেন মরায়ের বড় - ককিগ্ধকন চণ্ডী)।
এ বড় শব্দের বিবর্তন হচ্ছে সংস্কৃত বড্র > প্রাকৃত বড্ড > বাংলা বড়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।