আজ পহেলা এপ্রিল। তাই বিশ্বের তরুন-তরুনীরা কেউ তৃপ্ত হবে অন্যকে বোকা বানিয়ে আর কেউ তুষ্ট হবে বোকা বনে। এ দিনটি কারো কারো জন্য বয়ে আনে আনন্দের খোরাক আর কেউ হন বিড়ম্বনার শিকার, যা অনেকের জন্য কল্যাণকর হয় না। কিন্তু দিনটি উদযাপন করার আগে আমাদের জেনে নেয়া দরকার এর পটভূমি কি এবং কেন উদযাপন করা জরুরী। তাহলে আসুন জেনে নেই দিনটির পটভূমি।
সেজন্য আপনাদেরকে নিয়ে যেতে চাই ১৪৯১ সালে। তখন মুসলমানদের ৮০০ বছর স্পেন শাসনের শেষের দিক। আমি এমন একটি সময়ের কথা বলছি যখন সমগ্র ইউরোপের মানুষ অন্ধকার সময় অতিক্রম করছিল। সভ্যতার আলো তখনো তাদের কাছে পৌছায়নি। এমনকি যারা আজ নিজেদের সভ্যতার ধারক ও বাহক মনে করে সেই ইউরোপের মানুষ জানতো না গোসল করে কিভাবে শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।
ব্যতিক্রম ছিল স্পেনের মুসলমানরা। স্পেনের রাজধানী গ্রানাডাকে বলা হতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের বাতিঘর বা লাইট হাউজ। স্পেনের আরেকটি প্রধান শহর ছিল কর্ডোভা। সেখানে ছিল কর্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়। সমগ্র ইউরোপ থেকে জ্ঞানপিপাসু লোকেরা কর্ডোবা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতো জ্ঞান অর্জন করার জন্য।
যখন সমগ্র ইউরোপের লোকেরা গোসল করতে জানতো না তখন মুসলমানরা রাস্তার পাশে গড়ে তুলেছিল 'Public toilets' বা হাম্মামখানা। সেখানকার আলহামরা প্রাসাদ, গ্রান্ড মসজিদ আজো মানুষের কাছে বিস্ময়কর স্থাপত্য।
কিন্তু ধীরে ধীরে ইউরোপের মুসলমানদের মধ্যে জন্ম নিল ভোগ বিলাস, সম্পদের লোভ, খ্যাতির লিপ্সা। তখন ১৪৯২ সাল। স্পেনের মুসলমান শাসক তখন বাদশাহ-হাসান।
তার পুত্র আবু আব্দুল্লাহর নৈতিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। যার কারনে খ্রিষ্টানরা তাকে দিয়ে পিতা হাসানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করালো এই আশ্বাস দিয়ে যে, যদি বাবাকে গদিচ্যুত করতে পারে তবে তাকে ক্ষমতায় বসানো হবে। পিতার বিরুদ্ধে আবু আব্দুল্লাহ বিদ্রোহ করলে হাসান ক্ষমতা ছেড়ে পলায়ন করে। আর তখনই অন্ধকার নেমে আসে মুসলমানদের ভাগ্যাকাশে। আবু আব্দুল্লাহর দুর্বল নেতৃত্ব ও নৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা করে খ্রিষ্টান রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রানী ইসাবেলার যৌথ বাহিনী স্পেন আক্রমন করে বসে।
এতে আবু আব্দুল্লাহ আত্নসমর্পন করতে বাধ্য হয়। ফলে ২৪শে নভেম্বর ১৪৯১ সালে সহজেই ফার্ডিন্যান্ড গ্রানাডার রাজপথসহ সমগ্র শহর দখল করে নেয়। রাজা ফার্ডিন্যান্ড শুরু করে নৃশংস ও বর্বর পন্থায় হত্যাযজ্ঞ, লুণ্ঠন ও ধর্ষন। অবশেষে চাতুরতার আশ্রয় নিল রাজা ফার্ডিন্যান্ড এবং রানী ইসাবেলা। তারা ঘোষনা করলো যে, যারা শান্তি চায় তারা যেনো সব মসজিদে গিয়ে আশ্রয় গ্রহন করে।
সরল বিশ্বাসে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় হাজার হাজার মুসলিম আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নগরীর মসজিদসমুহে গিয়ে আশ্রয় গ্রহন করে। যখন মসজিদগুলোতে মুসলমান নর-নারী ও শিশুরা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কাঁদছে তখন রাতের আঁধারে জ্বালিয়ে দেয়া হলো সমস্ত মসজিদ। দাউ দাউ করা আগুন, নারী-পুরুষের আর্ত চিৎকার আর ফার্ডিন্যান্ড-ইসাবেলার ক্রুর হাসি মিশে একাকার হয়ে গেল।
দিনটি ছিল ১লা এপ্রিল ,১৪৯২। তার পরের বছর থেকে খ্রিষ্টানরা মুসলমানদেরকে বোকা বানানোর দিনটি সুনিপুণভাবে পালন করে আসছে।
আজকের এই পর্যায়ে এসেও মুসলমানদেরকে বোকা বানানোর খেলায় তারা আর একবার সফল হলো। তারা আজ মুসলমান তরুন-তরুনীদের মাঝে 'এপ্রিল ফুল'-র বীজ ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয় খ্রিষ্টানরা তাদের তৈরি অপসংস্কৃতিগুলো মুসলমানদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারন ইসলাম নামটিকে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে মুছে দিতে এটাই একমাত্র পন্থা। তাই মুসলিম তরুন-তরুনীদের কাছে আমার প্রশ্ন আর কতকাল তোমরা বিধর্মীদের সাজানো খেলায় নিজেদের বোকা বানাবে? আর কতকাল ইসলাম নামক জীবন ব্যবস্থাটিকে তাদের হাতে বলি দেবে? এখনও যদি তোমাদের বোধোদয় না হয় তবে কবে হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।