আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সৃস্টি সুখের উল্লাস

আমি একজন অতি সাধারন মানুষ। সুন্দরের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই জলে স্থলে অন্তরীক্ষে। এই ব্লগে প্রচারিত ধারাবাহিক উপন্যাস এবং কবিতা আমার নিজ ব্লগ নীল নক্ষত্রে প্রচার করছি। যে যাই বলুক নিজের তৈরী করা যে কোন কিছুই যে দেখতে ভাল লাগে মনের গহীনে একটু কম্পন অনুভুতি হয় তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই জন্যেই হয়ত বা নিজ সন্তান এতটা প্রিয়।

সন্তানের জন্য আমরা কি না করি! সকাল থেকে সন্ধ্যা বা রাত গভীর পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। বৃষ্টিতে ভিজে কিংবা রোদে পুরে দেহ তামা হয়ে গেলেও মনে হয় এইতো আর একটু কিছু রেখে যাই যাতে আমার সন্তানের চলা পথ মসৃন হয়। আমিও এই ধারাবাহিকতার বাইরে কিছু নই। জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি। এত দিন যেখানে যে বইটা পড়েছি তা হাতে নিয়ে বারবার উলটে পালটে দেখেছি আর ভেবেছি এই বই যারা লিখে তারা দেখতে কেমন? তারা এত কিছু লেখার মত তথ্য, সময়, ধৈর্য্য এগুলি কেমন করে পায়, কোথায় পায়? অনেক দিন ধরেই ব্লগে লেখা লেখি করছিলাম যদিও লেখালেখি এর চেয়েও অনেক আগে থেকেই চলে আসছিল।

দেশে ফেরার পর সাহাদত ভাই গত দুই বছর ধরে কত্ত যে তাগিদ দিয়েছে তার হিসেব করতে বসলে মনে হয় কয়েক দিস্তা কাগজ লেগে যাবে। শেষ পর্যন্ত বলেই ফেললেন যে কিছু একটা প্রকাশনা না বেরুলে আর লেখক বলে পরিচয় দেয়া যাচ্ছে না। কথাটা শুনে একটু ভাবনার উদয় হলো। হ্যা তাইতো! চট করে সেদিনই মালেক ভাইর কাছে একাকীত্বের মূর্ছনা আর এই জীবন পথের বাঁকে বাঁকে পাঠিয়ে দিলাম। পরে মালেক ভাইর কাছে খরচের পরিমান জেনে গৃহি সরকারের কাছে জানালাম তিনি একাকীত্বের মূর্ছনা বাদ দিতে বললেন।

আমিও মেনে নিলাম। না মেনে উপায় নেই কারন যা হচ্ছে সবই হবে গৃহ সরকারি অনুদানে কাজেই সরকারি নির্দেশ না মেনে উপায় নেই। যথারীতি মালেক ভাইকে জানিয়ে দিলাম একটার চেষ্টাই করেন। মাঝে মাঝে মালেক ভাই ফোন করে এটা ওটা টুকিটাকি নানা কিছু জেনে নেয় আর এদিকে আমি বসে বসে ভাবি আমার বই তাহলে শেষ পর্যন্ত বের হবে! নিজের সৃষ্টি কার না দেখতে ইচ্ছে করে? আমিই বা তাদের দলে কেন থাকব না? কাউকে কিছু বলিনা কিছু বুঝতেও দেই না কিন্তু মনের মধ্যে দারুণ একটা তোল পার চলছে বুঝতে পারছি। নিজের লেখা ছাপান অক্ষরে রীতিমত বই হয়ে আসবে! কি ভয়ানক রকমের আশ্চর্য কান্ড!!! সেদিন শব্দনীড়ে জিয়া ভাইর পোস্টে দেখলাম বই ছাপার কাজ হয়ে গেছে।

মালেক ভাইও ফোনে জানিয়েছিল তখন থেকেই বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা ধর ফরানি ভাব। কি হবে কেমন হবে এই ধরনের একটা অনুভুতি। শেষ পর্যন্ত আজ প্রেসে গেলাম। দেখি জিয়া ভাই আর জাকির ভাই প্রেসের গেটে দাঁড়িয়ে আছে। মালেক ভাই, জামান ভাই পথে।

প্রেসের ম্যানেজার বাইন্ডিং কারখানায় নিয়ে গেল। ওখানে জাকির ভাই ব্লগারস ফোরামের সবগুলি বইয়ের একটা করে কপি নিয়ে আমার হাতে আমার বইটা দিল আর আমি অবাক হয়ে হাতে নিয়ে একটা অস্বাভাবিক সুখের পরশ পেলাম। উলটে পালটে নানা ভাবে দেখলাম। সেই সব দিনের কথা মনে হলো। সবাই বই দেখায় ব্যস্ত হয়ে গেল আর আমার মোবাইলের ৩.৫ মেগা পিক্সেলের ক্যেমেরা কয়েকবার ক্লিক করে তাদের কয়েকটা মূহুর্ত ধরে নিল।

দেখা দেখির পালা শেষ হলে বাড়ি ফিরে এলাম। মেঝ মেয়ে এত দিন জানতে বা দেখতে চায়নি বাবা কি লেখে কিন্তু আজ বইটা যখন হাতে দিলাম সে যে কি আনন্দে আত্মহারা হয়ে হাতে নিল তা না দেখলে বোঝা কঠিন। সেই যে বসল এর মধ্যে অর্ধেক পড়ে ফেলেছে। ওর মা ছোট বোন একটু দেখার সুযোগ পেয়েছে শুধু। হাতে নিতে পারেনি।

সবগুলি বইয়ের প্রচ্ছদ অত্যন্ত চমত্কার হয়েছে। মালেক ভাই জিয়া ভাই জাকির ভাই সবাই অনেক পরিশ্রম করে এই প্রকাশনার কাজ সফল করেছে এজন্য তাদের জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার আজীবন মনে থাকবে তাদের এই কথা। আরো মনে থাকবে সাহাদত ভাইয়ার কথা, যিনি অমন করে না বললে হয়ত আজও এই কাজ হতো না।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.