আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আশকা তুমি কার (পর্ব-৭) (পূর্ণদৈঘ্য বাংলা ছায়াছবি)

"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার

২২ ছাইফুল খুব সাবধানে তার ব্যাগ গোছাচ্ছে আর এদিক ওদিক খুব কেয়ারফুলি অবজার্ভ করছে, কেউ দেখে ফেলে নি তো! নাহ্ মনে হয় কেউ দ্যাখে নি। ছাইফুল যে আজকে বিরাট কিছু একটা করার প্লানে আছে এটা রমজানের বুঝতে এতটুকু কষ্ট হয় নি, তাই সে ঠিক করল শেষ মুহূর্তে একবারের জন্য হলেও সে কিলিক লাগিয়ে যদি আশকাকে থামাতে পারে..... আশকাকে তার পানে ফিরিয়ে আনতে পারে.... সে তাআই করবে। রমজান ছাইফুলকে ফলো করার জন্য ছাইফুলের বাসার পাশে বসে থাকলো। ছাইফুল সাবধানে বের হয়ে নতুন কেনা ক্যাপটা মাথায় দিল, তারপর একটা রিকশা নিয়ে স্টেশনে রওনা হল। রমজান তার পিছে পিছে গেল.... ২৩ পথে যেতে যেতে জাম্বু: দ্যাখ বাদর পোস্টারটা! বইয়ের নাম ঝন্টু মন্টু দুই ভাই, আমাগো গেরামের ছগিরের ২ ছাগলের নাম... হিহিহি.. কিছুক্ষণ পর আবার....হায় রে মাবুদ, কি একখান নাম থুইছে ডাইনী বুড়ি.........হিহিহি.... বাদরের রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে, এরকম একটা সিরিয়াস মুহূর্তে কি করে জাম্বু সিনেমার পোস্টার দেখে আকাশ বাতাস ফাটায় হাসছে! বাদরের মনে হচ্ছে, ধাক্কা মেরে জাম্বুকে রিকশা থেকে ফেলে দিতে কিন্তু বাদর তা করতে পারছে না, সে জাম্বুকে যমের মত ভয় পায়।

একবার জাম্বুর কথায় কথা দিতে গেছিল ছোটবেলায়, জাম্বু তাকে কোমড়ে এমন লাথি মেরেছিল আজও তার চিহ্ন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে, কুজো হয়ে গেছে বাদর। পুরোনো ব্যথাটা আজও মাঝে মাঝে পীড়া দেয় তাকে। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে রিকশায় ঘুরছে ওরা ২জন কিন্তু একজন সিনেমার পোস্টার আর একজন তার উপর বিরক্তের জ্বালায় খেয়ালই করেনি কখন তারা স্টেশন ছাড়িয়ে বহুদূর চলে গেছে। বাদর স্বম্বিত ফিরে পেল, দেখলো তারা স্টেশন থেকে বহুদূরে চলে এসেছে। তারা রওনা দিয়েছিল ৬টায়, এখন বাজে সাড়ে ৭টা।

বাদর হুঙ্কার দিল, ওই রিকশা থাম। বোবা রিকশাওয়ালা ইমন আপন মনে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। বাদর: কি থামলি না! সে যাচ্ছে তার মত সে কিছু শুনতে পায় না, হঠাত তার কি মন হল সে প্লেনের গতিতে রিকশা টানতে শুরু করল। বাদর আর জাম্বু চিতকার করতে করতে একসময় জাম্বু ক্ষেপে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে রিকশাওয়ালাকে লাথি মারতে যেয়ে রিকশা থেকে পড়ে গেল। আর বাদর রিকশা করে ঘুরতেই থাকলো।

২৪ রমজান সানগ্লাস চোখে চাদর মুড়ি দিয়ে মুন্নার কাছে থেকে তার নতুন সাইকেলটা নিয়ে ছাইফুলের রিকশার পিছু পিছু গেল। খুবই সুনসান থমথমে পরিবেশ লাগছিল ওদের দু’জনের কাছেই। ছাইফুলের কাছে রিকশার এ জার্নিটা খুবই দীর্ঘ মনে হচ্ছিল, কিন্তু একঘেয়েমি লাগছিল না, কেবলই মনেমনে বলছিল, অপেক্ষার প্রহর যে কত কষ্টের তা যদি তুমি বুঝতে....আশকা । গাছ থেকে একটা পাতা পড়লেও ছাইফুলের ভালো লাগছিল আর রমজান সে আওয়াজ শুনে চমকে উঠছিল, ছাইফুল দেখে ফেললো না তো ওকে ফলো করা হচ্ছে এই ভেবে(ছাইফুলের দেয়া মারটা ভুলেনি রমজান)। ছাইফুলের সাথে ফাইটের ফলে রমজানের শরীরটা একটু দুর্বল।

হঠাত একটা কুকুর খ্যাক করে উঠল, রমজান তার সাইকেল নিয়ে কাত হয়ে পড়ল, তারপরে কোনো রকমভাবে নিজেকে সামলে নিল আর ছাইফুলের মনে হলো আশকা যেন অ্যাই করে উঠল। ছাইফুল একটা গান শুরু করলো, সময় যেন কাটে না, বড় একা একা লাগে................. তারা স্টেশনে পৌছালো...... আশকাকে দেখা মাত্রই ছাইফুল আবার গান শুরু করলো.....নীইল সাগর পার হয়ে তোমার কাছে এসেছি.....ভালোবাসো আর নাইবা বাসো তোমায় ভালো বেসেছি............... আশকা ছাইফুলের হাতে ব্যাগ দেখে বলল: কি ব্যাপার তুমি কই যাও? ছাইফুল: না মানে....হয়েছে কি......... আশকা: তুমি আবার যদি এই স্বপ্ন দেখে থাক যে আমি তোমার সাথে পালাব তাইলে কিন্তু ভুল বুঝছো.......... ছাইফুলের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। চারিদিকে অন্ধকার মনে হলো। “আমি কি মারা যাচ্ছি?”—নিজের মনেই প্রশ্ন করলো। মাথাটা ঝাকিয়ে নিজের চোখের অশ্রুটাকে সংবরণ করতে চাইল, কিন্তু অশ্রুরাও প্রতিবাদী হয়ে উঠল, ঝরে পড়ল দু ফোটা অশ্রু।

সে অশ্রু লুকানোর জন্য ছাইফুল পিছন ফিরল, আশকা হয়তো ছাইফুলের অশ্রু দেখতে পেল না, দেখল রমজান। হেসে উঠল রমজান। “এ আমি কি দেখলাম, তবে কি, তবে কি! ইয়াউ! ছাইফুল তাইলে এমনে এমনে কলা খাইতেছিল। ’’ --আপন মনে রমজান এগুলো বলে ওদের ওখানে গেল। রমজান: কেমন আছো আশকা ভাবী? আশকা রেগে বলল: মানে? ছাইফুল থতমত খেয়ে বলল: কি বলিস রমজান এগুলা? রমজান: যত যাই বলিস ছাইফুল তোর চয়েস আছে বলতে হবে।

তোকে আর আশকা ভাবীকে যা মানিয়েছে......... ওদের তিনজনকে একসাথে দেখে ছালু আর নাড়িয়ার কথা কাটাকাটি শুরু হলো। তাদের তর্কের বিষয়বস্তু আশকা এই দুইজনের মধ্যে কার সাথে পালাচ্ছে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।