আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুস্পের হাসি
৩১ জানুয়ারি আমার জীবনের মনে রাখার মতো একটি দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে আমার জীবন্ত বাবার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়েছিলো। এর ২১ দিন পর সেই বাবাকে আবার দেখেছি। কিন্তু তখন পৃথিবীতে তার নিঃশ্বাস ফেলার বা নেয়ার অধিকার আর রাখেনি বিধাতা।
বাবার ক্যান্সারের কথা অনেক আগেই আমরা জানি।
সঙ্গে আরো রোগ আশ্রয় নেয় তার দেহে। এসবের ফলে তা চামড়ায় সমস্যা দেখা দেয়। আমরা কারণটা জানি। এবং এও জানি, এর চিকিৎসায় কোন লাভ নেই। ক্যান্সারের জন্যই এটা হচ্ছে।
তবুও বাবাকে স্বান্তনা দেয়ার জন্য ৩১ জানুয়ারি সকালে বাবাকে হসপিটালে নিয়ে গেলাম। রিকশায় যাবার পর বাবাকে হাত ধরে নামাতে গেলে বাব রেগে যান। সারাজীবন তিনি অন্যর সাহায্য খুব একটা পছন্দ করতেননা। আমাকে বললেন, আমি কি এতো অসুস্থ নাকি? তোমাকে ধরতে হবে না। আমি হাটতে পারবো।
যাইহোক-ডাক্তারকে দেখালাম। ডাক্তার আলাদা করে আমাকে বললেন, আপনারা সব জানেন না? আমি হ্যাঁ বললে তিনি বললেন, তাহলে এনেছেন কেন? বাসায় যান। আমি তাকে অনুরোধ করলাম, কিছু একটা লিখে দেন। ডাক্তার কয়েকটা ওষুধ লিখলেন। আমি বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
রাস্তায় বাবা বললেন, ভালো হবে তো, বাবা? আমি মিথ্যে করে বললাম, সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভালো হবে। ডাক্তার তাই বললো।
না, বাবার সে চামড়ার সমস্যা আর ভালো হয়নি। আমি সেদিনই চলে আসি রাজশাহীতে বাবাকে শেষবারের মতো জীবিত দেখে। তখনো জানতাম না-শেষ দেখা।
রাজশাহীতে আসার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি আমার বাড়ি যাবার কথা। কাজের চাপে হয়নি। ১৭ ফেব্রুয়ারি বাবা ফোন দিলেন। কথা শুনেই বুঝলাম বাবার অবস্থা ভালো নয়। আমি বললাম বাবা ২১ ফেব্রুয়ারি আসবো।
এটাই বাবার সঙ্গে আমার শেষ কথা। কিন্তু হায়রে সাংবাদিকতা! অফিসর বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট আমাকে যেতে দিলো না। ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়েও কেন জানি গেলাম না। দুপুরে অফিসে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ এলো শেষ খবর।
বাবা নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।