আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিষয়টা কি এতোই কঠিন? মনে হয় না।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

১৯৭১ সালে যারা বাংলাদশের জন্মের বিরোধীতা করেছে - ঘটনাচক্রে তাদের বেশীর ভাগের গায়ে ইসলামী লেবাস ছিল। প্রায় সবাই তাদের কর্মকান্ড ধর্ম দিয়ে ব্যাখ্যা করেছে। ওরা পাকিস্থানী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য যে সকল ঘাতক দল তৈরী করেছে - তাদের নাম ছিল - রাজাকার (রেজাকার), আল-বদর আর আল-শামস বাহিনী। যাদের সাথে ইসলাম ধর্মের ইতিহাসরে একটা সম্পর্ক নিয়ে ওদের প্রচুর বিবৃতি আর প্রচার আছে। যেমন ধরা যাক: ২৩শে সেপ্টেম্বর ‘৭১ ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসাস্থ বদর বাহিনীর ক্যাম্পের এক সমাবেশে বদর বাহিনীর প্রধান মতিউর রহমান নিজামী বলেন - “যারা ইসলামকে ভালবাসে শুধুমাত্র তারাই পাকিস্থানকে ভালবাসে।

এইবারের উদ্ঘাটিত এই সত্যটি যাতে আমাদের রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবিরা ভুলে যেতে না পারে সে জন্যে সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালাতে হবে”। এখানে সুস্পষ্ট ভাবে নিজামী নামক এক ধর্ম-রাজনীতিজীবি 'ইসলাম'কে "রাজাকারীতার" সাথে একই সুত্রে গেঁথে দিয়েছে। এই রকমের বহু প্রমান পাওয়া যাবে। এমন বাংলাদেশের গনহত্যার সাথে জড়িত রাজনৈতিক দলগুলো নাম জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ - সবই ইসলাম ধর্মের লেবাস নিয়ে ছিলো। সুতরাং এটা জোর গলায় অস্বীকার করার সযোগ নেই - বাংলাদেশের একটা দল ধর্মকে ব্যবহার করে বিরাট অপকর্ম করেছে।

করেছে বললে ভুল হবে - এখনও করছে। শত শত সংগঠন ইতোমধ্যে দেশে আছে যারা ধর্মের নামে এখন রক্তপাতে বিশ্বাসী। জেএমবির বোমা হামলা, আত্নঘাতী হামলা আর বিচারক হত্যা আর শিবিরের শিক্ষক হত্যা - সবই হয়েছে ধর্মের নামে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে - ধর্মকে আড়াল করে নিজেদের অপকর্ম জায়েজ করার জন্যে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত - শিবির চক্রই মুলত ধর্মকে আক্রমনের মুখে ফেলে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইস্যুতে ধর্ম নিয়ে বিতর্কের দায়দায়িত্ব একক ভাবে ধর্মের বিরোধীতাকারীদের উপর চাপিয়ে দেওয়াটা কতটা যৌক্তিক হবে - সেটা ভাবার বিষয় বটে।

এতো গেল মুক্তিযুদ্ধ - রাজাকার - আর জামায়াত প্রসংগে। জামাতি ব্লগারদের কঠিন পর্যবক্ষনের মধ্যে আমরা থাকি। একটা শব্দ এদিক ওদিক হলেই ফতোয়া জারী হয়ে যাবে। (ইতোমধ্যে হয়েছেও)। এটা হলো বিরাট সতর্কতার ব্যাপার - যুদ্ধাপরাধী প্রসংগে বলতে গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় - যাতে ধর্মপ্রান মানুষের জন্যে কষ্টের কারন না হই।

তবে কিছু ব্লগারদের জামাতি শ্রেনীর সাথে অতি মাখামাখি অনেক সময় তাদের রাজাকার হিসাবে চিহ্নিত হতে সাহায্য করে। তার দায়দায়িত্ব সেই ব্লগারেই - যিনি রাজাকারদের সাথে অতিরিক্ত মাখামাখি করবেন। রাজাকারি পোস্টে ধর্ম খুঁজে এরা বরঞ্চ নিজেদের ধর্মজ্ঞানের দৈন্যতাকেই প্রকাশ করেন। কোন কোন ব্লগার নিজের স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থান ধরা পড়ার পর ধর্মের কাট-পেস্ট পোস্ট দিয়ে একটা অনুভুতি তৈরী করার চেষ্টা করেন। তাদের বিষয়ে সতর্ক করে বলতে চাই - সঙ্গদোষে লোহা জলে ভাসে - এই প্রবাদটা আমাদের স্মরন রাখতে হবে।

তাইলে আমারদের করনীয় কি? এইটা পরিষ্কার বুঝতে হবে - জামায়াত/শিবির চক্র বাংলাদেশের শত্রু আর ওরা নিজেদের আত্নরক্ষার ঢাল হিসাবে ইসলামকে ব্যবহার করে ইসলামকে অপমান করার সুযোগ করে দিচ্ছে। সুতরাং একজন দেশপ্রেমিক এবং ধর্ম প্রান মানুষ হিসাবে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে জামায়াত/শিবির নামক দেশের ও ইসলাম ধর্মের শত্রুকে বিতারিত করতে হবে। এটা দেশের ও ধর্মের জন্যে সমানভাবে প্রয়োজনীয়। এখন প্রশ্ন আসে - নাস্তিকদের বিষয়ে। নাস্তিকরা আগেও ছিলো - এখনও আছে - ভবিষ্যতে থাকবে।

যার বিশ্বাস তার কাছে গুরুত্বপূর্ন। আর সীমারেখাটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে। একজন মুসলমানকে যেমন কোরানের নির্দেশ - মেনে যারা যারা বিশ্বাসের মধ্যে থাকার অধিকার মেনে নিতে হবে - তেমনি নাস্তিকদের উচিত হবে তাদের বিশ্বাসের উৎকৃষ্টতা প্রমানের জন্যে অন্যের বিশ্বাসকে খাটো করে দেখানোর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা। আশা করি তারা ধর্ম নিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করে জামাতিদের জন্যে কম্ফোর্ট জোন তৈরী করতে চাবেন না। কারন জামাতিরা চাইবেই ধর্মীয় বিতর্কের আড়ালে নিজেদের ক্যামোফ্লেজড করে তাদের বিষাক্ত চেহারটাকে আড়ালে রাখতে।

বাকস্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচার নয় - স্বাধীনতার সাথেই আসে দায়িত্বশীলতার কথা। আশা করি সবাই দায়ত্বশীল ভুমিকার রাখে ব্লগ এবং দেশকে রাজাকারিতা মুক্ত করবো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.