উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে এই অনবদ্য আবিষ্কার পুরো বিশ্বকে ধ্যান-ধারণাই পাল্টে দেয়। একজন সফল বাঙালি বিজ্ঞানী হিসেবে নিজেকে নিয়ে গেছেন সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। তার গবেষণার প্রধান দিক ছিল উদ্ভিদ ও তড়িৎ চৌম্বক। তার আবিষ্কারের মধ্যে উদ্ভিদের বৃদ্ধিমাপক যন্ত্র ক্রেস্কোগ্রাফ, উদ্ভিদের দেহের উত্তেজনার বেগ নিরুপক সমতল তরুলিপি যন্ত্র রিজোনাস্ট রেকর্ডার অন্যতম। জগদীশ চন্দ্রের স্ত্রী অবলা বসু ছিলেন একজন বিদুষী ডাক্তার ও শিক্ষাবিদ।
জগদীশ চন্দ্র ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি প্রথম ভারতীয় ব্যক্তি যিনি আমেরিকান প্যাটেন্টের অধিকারী। ২০০৪ সালের এপ্রিলে বিবিসি রেডিওর জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে সপ্তম স্থান অধিকার করেন।
তিনিই প্রথম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন, উদ্ভিদ ও প্রাণী জীবনের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। মার্কনি আধুনিক ছোট বা শর্ট তরঙ্গ মাপের বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে দূরে বেতার সংকেত পাঠাতে সফল হয়েছিলেন যার ফলশ্রুতি হলো রেডিও।
কিন্তু জগদীশ চন্দ্র কাজ করেছিলেন অতিক্ষুদ্র তথা মাইক্রো বেতার তরঙ্গ নিয়ে যার প্রয়োগ ঘটেছে আধুনিক টেলিভিশন এবং রাডার যোগাযোগের ক্ষেত্রে।
জগদীশ চন্দ্র বসু বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের প্রকৃত বাসস্থান ছিল বর্তমান বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায়। জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞান পাঠের জন্যই লন্ডনের উদ্দেশে পাড়ি জমান ১৮৮০ সালে।
কিন্তু অসুস্থতার কারণে বেশিদিন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। অচিরেই চিকিৎসা বিজ্ঞান পাঠ ছেড়ে দিয়ে কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে ট্রাইপস পাস করেন। দেশে ফিরে আসেন ১৮৮৫ সালে। এসে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অস্থায়ী অধ্যাপক পদে যোগ দেন।
তার গবেষণার সূত্রপাতও এখান থেকেই। তার মহান বৈজ্ঞানিক গবেষণাসমূহের সূতিকাগার হিসেবে এই কলেজকে আখ্যায়িত করা যায়। প্রতিদিন নিয়মিত ৪ ঘণ্টা শিক্ষকতার পর যেটুকু সময় পেতেন তখন তিনি এই গবেষণার কাজ করতেন। তার উপর প্রেসিডেন্সি কলেজে কোনো উন্নতমানের গবেষণাগার ছিল না, অর্থ সংকটও ছিল প্রকট। তার এই গবেষণা কর্মগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ইংল্যান্ডের লিভারপুলে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
এই বক্তৃতার সাফল্যের পর তিনি বহু স্থান থেকে বক্তৃতার নিমন্ত্রণ পান। এর মধ্যে ছিল রয়েল ইনস্টিটিউশন, ফ্রান্স এবং জার্মানি। এই বক্তৃতাটি আনুষ্ঠানিকভাবে 'ফ্রাইডে ইভনিং ডিসকোর্স' নামে সুপরিচিত ছিল। এই ডিসকোর্সগুলোতে আমন্ত্রিত হতেন একেবারে প্রথম সারির কোনো আবিষ্কারক। সে হিসেবে এটি জগদীশ চন্দ্রের জন্য একটি দুর্লভ সম্মাননা ছিল।
১৮৯৮ সালের জানুয়ারি ১৯ তারিখে প্রদত্ত তার এই বক্তৃতার বিষয় ছিল 'অন দ্য পোলারাইজেশন অফ ইলেকট্রিক রেইস'। এই বক্তৃতার সফলতা ছিল সবচেয়ে বেশি। ধীরে ধীরে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।