গুপ্তপথে পলায়নের সময়ে দেখেছি একজন মা তার শিশুকে রেখে পালিয়ে গেছে,একটি নতুন ঘর তার কাধের কাছে যে সব সবুজ কলাপাতার গাছ ছিলো তাদেরকে নিয়ে সুষমভাবে পুড়ছে,আর একজন বিব্রত হাস ভাবছে সে কেন হলো না শুভ্র ডানার অতিথি পাখি কিংবা বুনো কোনো হাস।
আমার কাধে একটি মরা খরগোস,একটি কাছিম ও একটা প্রানী মানুষ,যার অপরাধ হলো অস্বীকার করে যাওয়া কৃত্রিম নিয়মাবলীকে। আমার অপরাধ ছিলো উত্তর পথের লোকেদের হত্যার মত নিদারুন গর্হিত কাজ!আমি যদিও খুব আনন্দের সাথেই খুন করে থাকি,যারা আমার সাথে একাত্নতা করেছিলো। তাদেরকে দেখিয়ে দিলাম ভিসুভিয়াসের জন্ম মানেই হলো সীমাবদ্ধ থেকে যাওয়া,বিধ্বংসী অগ্নি নিয়ে জ্বালামুখের সংকীর্ণতা নিয়ে নিজে নিজে ফুসে যাওয়া। আমার কাধের অত্যাচারিত মানুষটিকে দেখিয়ে দিলাম ফুলের গন্ধ কোনো প্রকরণে সীমাবদ্ধ না থেকে নৈঃশব্দে ঝরে গেছে বীজ।
আমি নিভিয়ে দিলাম আমার রক্তাক্ত পদচিন্হ,কেউ যাতে অনুসরণ না করতে পারে,স্কাল্পহান্টারেরা আমাদের মাথা কেটে যদি রেখে দেয় পৃথিবীর যাদুঘরে?দেখা গেলো আমাদের বলা হচ্ছে মেধাবী মস্তিস্ক এবং অর্থহীন নোবেলের মতো বালছাল আরো অনেক উপাধি!যদিও কৃষ্নপক্ষ এখন তবুও অন্ধকারেই রয়ে গেছে আমাদের যতশত মিথিক্যাল ভূত।
কয়েদকালে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিলো মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক ধ্রুপদী আত্নার সন্গে। আমাকে হঠাৎ গেয়েছিলো
"অন্ধ আনে ব্যকরণ,
মিথ্যা মানে কিছুই নয়
জ্বলতে থাকুক আমার মন,
সত্য মানে কিছুই নয়,
পরিবর্তন,পরিবর্তন
আমার হাতে বিবি হরতন
তোমার হাতে বিবি হরতন
কেউকি জানে জোচ্চুরিটা কোথায়?
শেষে শুধু এমনই হয়
নিজমন্ডু নিজেই কর্তন?"
আকন্ঠ কবিতা গেলে,সে কবি ছিলো,তার কাছে কবিতা মানে ভাববাদী আচরণ করা। প্রায়ই বলতো সে কবিতার কোনো মর্ম রাখতে চায়না,কবিতাকে কোনো সীমানায় নিতেও চায়না সে। কোনো মহান সত্বার কাছে সে বারবার মুক্তি চাইতো দারুন উত্তরাধুনিকভাবে কেনো যেনো সে তার নিজের অসীমভাবাপন্নতা ধারণ করতে পারতোনা,বরং নিদারুণ আধুনিক এবং বস্তুবাদী প্রাচীণ সেইসব কবিদের মতো একদিন সে সুইসাইড করলো।
সুইসাইডের দিন তার তিক্ত বিষের বাটিতে আমি চিনি গুলতে গুলতে জানতে চাই যে তার কবিতাগুলোর কি হবে?সে আমাকে বলেছিলো,পিপড়া হয়ে সেই অক্ষরগুলো পৃথিবীর কোথাও না কোথাও চলে যাবে। এরপর আমি সুমিস্ট বিষপানে তাকে প্রলুব্ধ করলাম,আমার তৃতীয় খুন সম্পন্ন হলো। গান গাইলো সে
আমার হাতে বিবি হরতন
তোমার হাতে বিবি হরতন
কেউকি জানে জোচ্চুরিটা কোথায়?
শেষে শুধু এমনই হয়
নিজমন্ডু নিজেই কর্তন...
এর কিছুদিন পর আমি আমার একটি খুনের সুখস্মৃতি নিয়ে আত্ননির্বাসিতদের কয়েদ থেকে পালিয়ে এলাম,দেখলাম পথে কয়েকটি কলসের কাছে পড়ে আছে আমার খুব প্রিয় আয়না,একটা জলাশয়। দেখতে পেলাম আমার চুলদাড়ি অনেক বড় হয়ে গেছে,আহারে আমার সুশ্রী ও সুন্দর সামাজিক মুখ,ইচ্ছে হলো আমি তাকেও খুন করে বাড়াই নতুন এক আনন্দ।
পথে একটি অরণ্য পড়লো,ক্ষুধার্ত হলাম আমি।
বড় বড় বুনো একপ্রকার মুলা দিয়ে আহার সারবো ভাবি। এমন সময় মুলালোভী এক খরগোশ এগিয়ে আসে। প্রতিস্ঠানিক ধারণায় বন্য প্রাণীরা যেমন হয় এ আবার তেমন নয়,ভয় না পেয়ে সে আমার সে আমার আশেপাশে নির্ভয়ে ঘুরঘুর করতে থাকে,আমি দ্বিতীয় খুন করলাম...
সমুদ্র পাড়ি দেবার সময় একটি কাছিম চোখে পড়ে আমার,দেহে তার লেগে আছে শতবর্ষের পুরণো শ্যাওলা। পুরণো আকড়ে ধরে রাখার জন্যই যেন তার শক্ত খোলস আর অকারণে নিজ দেহেই পলায়ন,আমার রাগ হলো। সেটাকে মারতে কস্ট হয়েছিলো খুব তার দেহাবরণের জন্য...
একটি আগ্নেয়গিরির বৃত্তাকার জ্বালামুখ ধরে অসীম বছর হেটে চলেছে একটি জীবন্ত প্রাণী কাধে তার তিনটি মৃত প্রাণী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।