ইমরোজ
সম্প্রতি দেশের বিজয় দিবস পালিত হলো। সেটা নিয়ে অনেকের লেখাই পড়লাম পত্রিকায়। সব লেখার একটি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত আছে। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার চাই।
নানা ঘটনা নানা কিছুর উদ্ধৃতি দিয়ে যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের দাবী করা হচ্ছে।
অতি সাহসিকতার সাথে প্রথম আলো বিজয় দিবসে হেডলাইন করেছে, "যুদ্ধাপরাধিদের বিচার চাই"।
জামাত যারা করেন তারা অনেকে হয়তো খুবই মনক্ষুন্য হয়েছেন। ৩৬ বছর পরেও আমরা কেন বিচার চাচ্ছি। তাদের জন্য বলছি, অপরাধের বিচার হয় কথাটা কি আপনি এখনও শিখেন নাই?
এরশাদ শিকদার যে অপরাধ করেছিলো, তার বিচার হয়েছে দেখেছেন? তাহলে আপনার বাপের বিচার হবে না কেন?
ঘোলা জলে মাছ শীকার করছি, পানি ঘোলা করছি, আরও কত কি যে বলছে জামাতের লোকজন রা তার কোন শেষ নেই। আরে বাবা আমি তো অন্যায়ের বিচার চাইতে পারি নাকি? নাকি সেই অধিকার আমার নাই? জামাত যে প্রত্যক্ষ ভাবে গণহত্যার সাথে জড়িত ছিলো এইটার ছবি সহ প্রমাণ আছে।
আরও লোকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে। সবার কথা কি মিথ্যা?
ইন্ডিয়া পাকিস্তানের যুদ্ধ হয়েছে, আর ভেতরে একটা গৃহযুদ্ধ হয়েছে বলে জামাতের লীডাররা যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে আমার একটি কথাই বলবার আছে।
"গৃহযুদ্ধই যখন হলো, তাহলে এ দেশ জন্মালো কিভাবে"? কোথাও দেখছেন গৃহযুদ্ধ লেগে স্বাধীন্ দেশ হয়ে গেছে? দুই জার্মানি আলাদা ছিলো, কিন্তু তারা জোড়া লেগে গেছে, দুই কোরিয়া আলাদা আছে, তারাও জোড়া লেগে যাবে। কিন্তু রাশিয়া আর কাজাকিস্তান কি জোড়া লাগবে? নাকি রাশিয়া আর বসনিয়া হারজোগভিনা জোড়া লাগবে? কেন লাগবে না তার কারণ হলো ওরা স্বাধীনতা পেয়েছে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা পেয়েছে।
সেটা গৃহযুদ্ধ যদি আপনারা বলেন তাহলে বুঝতে হবে আপনারা বাংলাদেশকে চান না, বা অস্বীকার করেন। আর যে দল দেশকে অস্বীকার করে কেন সে দলকে আমরা ক্ষমতার লড়াই করতে দিবো?
দেখুন জামাতের বিশেষ-অজ্ঞ রা, আপনারা নাজ্জি পার্টির নাম শুনেছেন আশা করি। সেখানে এখনও যদি কোন নাজ্জি সোলজার ধরা পরে তাকে যুদ্ধাপরাধির দ্বায়ে বিচার করা হচ্ছে। সেটাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন আপনারা?
আচ্ছা, ধরুন যদি স্বাধীনতা না হত আমাদের দেশের তাহলে পাকিস্তান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে কি বিচার করতো না? তাদের কি বিচার হত না? সেটাকে কিভাবে দেখতেন আপনারা? নিশ্চয়ই তার প্রতিবাদ করতেন না। এখন যেহেতু আমাদের দেশ স্বাধীন সুতরাং আমাদের লোকদেরকে পাকিস্তানীদের হাতে যারা ধরা খাওয়াইয়া হত্যা করতে সাহায্য করেছে তার বিচার কি আমরা চাইতে পারি না?
পৃথিবীতে আমাকে আপনারা একটা দেশ দেখাতে পারেন যেখানে যুদ্ধাপরাধিদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে? বা তাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? অথবা নির্বাচন করতে দেওয়া হয়েছে?
আপনাদের বাপেরা মিলাদ মাহিফিল করেন, একবার কি ফুল দিতে গিয়েছিলেন কোন শহীদ মিনারে অথবা স্মৃতিসৌধে? তাহলে কিসের মুক্তিযুদ্ধকে আপনারা বিশ্বাস করেন, অথবা শ্রদ্ধা করেন।
হামিদুর কিংবা মতিউরের পাশে তো আপনাদের কাউওকে দেখলাম না একবারের জন্য। কেন?
উপর দিয়ে বললে হবে না আপনারা মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করেন। এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, এই যুদ্ধের মহাত্ত্ব সম্পর্কে আপনাদের জানতে হবে, এবং জাতীয় নেতা তথা জাতীয় সৌধগুলোতে আপনাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে সর্বপরি সেকুলার হতে হবে যদি এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে চান। অন্যথায় ব্যার্থ তো ছিলেনই, থাকবেন চিরিদিনই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।