আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্দি কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমান/ আমি তবে মুক্ত বিহঙ্গের মতো তত্বাবধায়ক আকশে...

দেখি তামাশা দেখাই

শেষ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে আমার আর ঘুম লাগেনা। মাথা ঠা ঠা করে যন্ত্রনায়, রাজ্যের বেবাক অসমাপ্ত চিন্তা জড়ো করে তখন আমি একটা খসড়া লেখা তৈরি করি- এ আমার যোগ্যতা। আজকের রচনা সে সব চিন্তারই একটা বিন্দু থেকে রেখা ধরে কিছুদুর এগিয়েছে মাত্র: ২. ঘুম ভাঙার কারন দাড় করাতে গিয়ে অবেচেতন মন চলে গেল হাসপাতালে শায়িত রক্তরোগে আক্রান্ত কিশোর ভাতিজার কাছে। তক্ষুনি খোজ নিয়ে জানলাম ও ঠিক আছে। তবে কার জন্য আমার ঘুম ভেঙে গেল এ কুয়াশার নির্বোধ রাতে? এবং আচমকা অন্ধকারে ১২ বছর বয়সী আমার ভাতিজার অসুখী মুখটি সরিয়ে দিয়ে হাজির হলো আরিফ, কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমান! কতোদিন আয়নায় মুখ দেখেনি ছেলেটা... ৩. বাতিটা জ্বেলে দিই।

আরিফ চলে গেছে। আশ্চর্য, আজ কতোদিন হলো- আমরা বন্ধুরা ওর প্রসঙ্গই তুলছিনা। কোনো আড্ডাতেই ঢুকতে সাহস পাচ্ছেনা নাকি ছেলেটা? আমরা দিন দিন ওকে এতটা অস্পৃশ্য অবস্থায় নিয়ে গেছি যে আরিফের উপস্থিতি আমাদের দু:স্বপ্নের মধ্যেও নেই। আচ্ছা ওর কি জেল জরিমানা কিছু হলো? নাকি হাজতবাসেই কাটাতে হবে পুরোটা জীবন? ওর অপরাধের মানদন্ড ধরে শাস্তির তীব্রতা কতোটা ভয়ংকর হতে পারে? ধরলাম, একদিন কারাগার থেকে বেরিয়ে এলো- তবু ও কি পারবে কোনো দৈনিকে নতুন করে কন্ট্রিবিউট শুরু করতে? ধর্মীয় অনুভুতিশীল বন্ধুরা ওকে ডাকবে তো আগের মতো আড্ডায়! এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারছে না কোনো সংবাদ মাধ্যম। অথচ দ্যাখ, প্রথম আলো ৯ বছর পেরিয়ে ১০ বছরে পা দিয়ে সপ্তাহব্যাপী অবাধ উত্থানকাহিনী ছাপলো।

বিলবোর্ড,রেডিও,টিভিতে প্রথম আলোর এত গুনগান দেখে আমারও খারাপ লাগেনি। কেন? এখন লাগছে, হারিয়ে যাওয়া আরিফের মুখটা আমার শেষ রাতের ক্লান্তিকে চেপে ধরেছে বলে। আমার বোধ হচ্ছে- প্রথম আলোর পাহাড় সমান সফলতা-জনপ্রিয়তার আড়ালে একটি সত্য ও বস্তুনিষ্ট, পাঠকপ্রিয় সংবাদ ঢেকে দেয়া হয়েছে। সত্যি ও নির্মম ব্যপার যে, আরিফুর রহমানের জন্য প্রথম আলো একবার অন্তত একবার মাটিলেপা হয়েছিল। এ খবরটা ধরেই আরিফের প্রতিপক্ষে দাড়িয়ে, আগের মতো একটা সাহসী সম্পাদকীয় লিখতে পারতেনর মি. মতিউর রহমান।

তবে আমি, আরিফুর রহমানের সহমর্মী হিসেবে, আজ, এই ভরা মজলিশে এতগুলো প্রশ্ন তুলতাম না, সত্যি... ৪. ''চলতে চলতে অনেকটা পথ চলে এলাম বলতে বলতে অনেক কথা বলে গেলাম প্রভু, আখের রসে আরেকটু মিষ্টি দিও...'' (সঞ্জীব চৌধুরীর গান) বন্ধ করে দিলাম ক্যাসেট প্লেয়ার। এত ভাবনার ভিড়ে, শেষ রাতে গানের ভারি কথা আজ আমি বইবার যোগ্য নই। এই ভালো নিকোটিনে ভেসে যাচ্ছে আমার ঘর। একটু পরেই বাইরে গিয়ে কুয়াশায় দাড়ালাম, আহ। আরিফ, চলে আয়, দেখে যা কি মিষ্টি কুয়াশা নেমেছে আমার জন্য, হতভাগা।

আমি চাইলেই এখন মুক্ত বিহঙ্গের মতো ডানা মেলে উড়তে পারি তত্বাবধায়ক আকাশে...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।