.......অতঃপর মৃত্যুর প্রতীক্ষা
প্রথম পর্বঃ অবশ্য পাঠ্য
(এম আই টি ও টরেন্টো ইউনিভার্সিটির জয়েন্ট প্রফেসর মার্ক এসক্যাবি গ্লাসগোর এক কনফারেন্স থেকে সোহেল ভাইয়ের ইমেইল এড্রেস জোগাড় করেছিলেন। তিনি সরাসরি মেইল করে সোহেল ভাইকে তার পিএইচডির ছাত্র হবার আমন্ত্রণ জানান। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সোহেল ভাই ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা বলে তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। )
সেই নব্বইয়ের দশকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে বিটিটিবির প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান। পরিচয় সূত্রে বন্ধুর এক পর্দানশীল ধার্মিক ছাত্রীকে ভাল লেগে যায়।
মেয়ে তার চেয়ে আট বছরের ছোট। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থিনী। দুপক্ষের পরিবারের সর্বসম্মতিক্রমে বিয়ে হয়ে যায় তাদের।
এক বছর বাদেই সোহেল ভাই স্কলারশীপ নিয়ে দেশের বাইরে চলে যান মাস্টার্স করতে, মেয়েটি বুয়েটের সামনের সারিতে চান্স পায়। এক বছর যেতে না যেতেই মেয়ের আগ্রহ, যোগাযোগ কমে যেতে থাকে।
বিচলিত হয়ে পড়েন সোহেল ভাই। এ ছুটিতে মেয়ের ভিসার ব্যবস্থা করে কিছুদিনের জন্য নিজের কাছে নিয়ে আসেন।
ছুটি নিয়ে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ঘুরেন স্ত্রী কে নিয়ে। এর মাঝেই দেখেন অপ্রত্যাশিত উগ্র মেজাজ, সামান্য ঘটনা নিয়ে রাগারাগি হৈচৈ। দু'দিন ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে প্রচন্ড অস্থিরতা, দুর্ব্যবহার।
ঝগড়া হলেই, কথায় কথায় ... "আমাকে কেন বিয়ে করেছিলে".........তারপর একদিন দেশে যাবার পালা.......মেয়েটি গুনে গুনে ২২ জন বন্ধু আর ক্লাশ মেটদের জন্য বাজার করলো.....সোহেল ভাই নির্দিধায় দিলেন শপিং খরচ।
কিন্তু কি অদ্ভুত নিজের জন্য কিছুই কিনলোনা মেয়েটি! সোহেল ভাই বার বার "নিজের জন্য কিছু নিলেনা" বলার পরেও না। এটি ছিল একটা অস্ত্র। মেয়েটি দেশে ফিরে বন্ধুদের খুশি করল আর মা বাপ কে মুখ ফুলিয়ে বলল,
"ও আমাকে কিছুই কিনে দেয়নি.....আমাকে এ ক'দিন আমানবিক অত্যাচার করেছে। "
মেয়েটি সোহেল ভাইয়ের সাথে আর যোগাযোগ করেনি।
প্রবাস বিরহে থেকে নিজের স্ত্রীকে দুটো ভালোবাসার কথা বলার সুযোগ দেয়নি সে। মাস্টার্সের গবেষণার মাঝখানে দেশে এসে নিজের স্ত্রীর কাছ 'অপরিচিত মানুষের' ব্যবহার পেলেন।
শুধু জানতে চেয়েছিলেন, "কি দোষ ছিল আমার?"
মেয়েটি একটা কথাই বলল, "আমার আর ভালো লাগেনা".....কি, কেন, কোন কিছু বলার সুযোগ দিলনা সোহেল ভাইকে। রিক্সায় উঠে ঘুরে চলে গেল। শ্বশুর শাশুড়ির কাছে গেলেন সোহেল ভাই...দেখলেন অবাধ্য মেয়েকে নিয়ে তারা ভীষণ চিন্তিত.......সোহেল ভাইকে তারা ভীষণ স্নেহ করেন...মেয়ের বাবা-মার অসহায় ভাব দেখে ব্যর্থ মনে বিদেশে ফিরে গেলেন তিনি.....
দু'মাসের মাথায় মেয়েটা ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয় সোহেল ভাইয়ের বাবা-মার কাছে।
প্রবাসে থেকে মানসিক ভাবে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েন তিনি। তার বন্ধু, একটেলে কর্মরত এক উর্ধতন প্রকৌশলী, সব জেনে মেয়েটির মোবাইল নাম্বর ট্র্যাক করে জানতে পারে এজনের নম্বরে এফএন এফ করা এবং তার সাথে দীর্ঘক্ষণ রাতে কথা হয়। 'পরকীয়ার' ঘটনায় তিনি আর বিস্মিত হননি......এজ শি নো মোর বিলঙ্গস টু হিম....
(সামনের পর্বে সমাপ্য)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।