নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের বিরুদ্ধে এক সংখ্যালঘুর বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি রক্ষ্যা এবং নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সংখ্যালঘু পরিবারটি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন।
নগরীর জামতলা ধোপাপট্টি এলাকার বাসিন্দা মৃত লাল মোহন দাসের ছেলে উত্তম কুমার দাস গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া এক আবেদনে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর এ আবেদন করা হয়।
আবেদনে উত্তম কুমার দাস বলেন, এই সরকারের শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম ওসমান আমার পৈত্রিক বাড়ি দখলের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে।
শুরু থেকেই সে তার লোকজন দিয়ে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলায় অবস্থিত আমাদের সাড়ে সাতাশ শতাংশ জমির মালিক উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা। কিন্তু তারা আমার পিতা জীবিত থাকাকালীন সময়ে আমার ছয় ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাইয়ের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছে বলে একটি মিথ্যা দলিল তৈরী করে। যদিও পিতা জীবিত থাকলে পুত্রেরা বাড়ির মালিক হতে পারেনা। এ নিয়ে ২০০৫ সালে আদালতে মামলা হয়।
যে দুই ভাইয়ের কাছ থেকে তারা জমি কিনেছে বলে দাবী করে ঐ দুই ভাই আদালতে লিখিতভাবে জানায়, তারা কোন জমি বিক্রি করেনি। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাংসদ নাসিম ওসমান জামতলা এলাকার বাসিন্দা মৃত নুরু মিয়া চৌধুরীর স্ত্রী জিয়াসমিন চৌধুরীর পক্ষ হয়ে আমাদের জায়গায় গিয়ে জায়গা মাপঝোক করে এখানে মিলাদ মাহফিল করে। আমাদের জায়গার দখল ছেড়ে দিতে বলে।
২০১১ তে এম পি নাসিম ওসমান আমাকে তার জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ডাকিয়ে নিয়ে বলে, ‘তুমি মহিলার (জেসমিন চৌধুরীর) নামে মামলা করেছো কেন ?’ আমি বলেছি যে, ‘মামলা করিনি জিডি করেছি। ’ তখন সে বলে যে, ‘মামলা করবে না।
জিডি তুলে নাও। তুমি মামলায় গেলে তোমার নামে ফেন্সিডিল এর মামলা হবে। এছাড়াও যেকোন ধরনের মামলা হতে পারে। ’
আমাদের জমি দখলের জন্য তৈরী করা ভূয়া দলিলের বিরুদ্ধে আমরা আট বছর ধরে মামলা লড়ছি।
গত ২৪ জুন ২০১৩ তারিখে জাতীয় পার্টি নেতা এডভোকেট বিমল চন্দ্র দাস, আনোয়ার প্রধান, মোহাম্মদ বুলবুল আমার বাড়িতে আসে।
তারা বলে যে, এম পি নাসিম ওসমান আমাদের পাঠিয়েছে। তোরা ২-৩ লাখ টাকা নিয়ে এ বাড়ি ছেড়ে দিবি। এবং কোর্ট থেকে মামলা তুলে নিবি। অন্যথায় নাসিম ভাই তোর (উত্তম) লাশ ফেলে দেবে। এবং এক রাতের মধ্যে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেবে।
আরো বলেন, আমরা ছাড়াও ফয়েজ ও সওদাগর এর তোদের উপর নজর আছে। যেকোন সময় প্রাণনাশসহ বড় ধরনের অঘটন ঘটাবে। একথা বলার ২ দিন পর আমরা লক্ষ করি সাদা রং এর একটি মাইক্রোবাস নিয়ে অপরিচিত দুই লোক এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। এবং আমার ভাইকে আমার সন্ধান দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এ ব্যাপারে আমি ফতুল্লা থানায় একটি জিডি করি।
সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টি নেতা আনোয়ার প্রধান এর মাধ্যমে জানায় যে, ‘এখনও সময় আছে জায়গা ছেড়ে চলে যা। এমপি সাহেব আর শামীম ওসমানের শালা টিটু তোদের সাড়ে সাতাশসহ জেসমিনের ৯২ শতাংশ জমি বায়না করেছে। নাসিম ভাই নিজে তোকে ৩-৪ শতাংশ জায়গা অন্যত্র কিনে দেবে। ১০-১২ লাখ টাকা দিবে। না গেলে এক দেড় মাস পরে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে দেবে।
ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হবি। আরো বলে যে, যত ধরনের মামলা করেছিস সব মামলা তুলে নিবি। মামলা না তুললে কোন লাভ হবে না। এডভোকেট মফিজকে দায়িত্ব দিয়েছি। যত টাকা লাগুক কোর্ট থেকে রায় আমাদের পক্ষে নিয়ে আসবে।
’
এমপি নাসিম ওসমানের ও তার লোকজনের এ ধরনের তৎপরতার কারনে আমি চরম নিরাপত্তহীনতায় ভূগছি। আমি রাতে বাসায় থাকতে পারি না। আমার পরিবারের লোকজনও চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থায় আমি আপনার সহায়তা কামনা করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।