চিত্ত যেথা ভয়শূন্য - কাছে আসিবি না, তোর মস্তিস্কে নিপাহ ভাইরাস ঢুকিয়াছে। ভগবান তীব্র বিরক্তিতে মুখ ঘুরাইয়া থাকিলেন।
- প্রভু, আমার নিকট মস্তিস্ক ছাড়া আর কোন বিপদজনক বস্তু নাই। তবে অনুমতি দিলে মস্তিস্ক আগাইয়া না দিয়া পদযুগল আগাইয়া দিতে পারি। জয়দেব বলিয়াছিলেন, দেহি পদপল্লব মুদারম।
- খর্জূর রস লইয়া তোর এত আপত্তি কেন?
- প্রভু খর্জূর রস না খাইলে নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যু ঠেকান যাইত, কিন্তু, আই ই ডি সি আরের কর্তা ব্যাক্তিদিগের খর্জূর রস পান বন্ধ করিতে চাহে না কেন?
- তুই বল, কেন চাহে না, তোর নাকি বুদ্ধির চাপে মস্তিস্কে মাঝে মাঝে বিস্ফোরণ হয়।
- প্রভু আমার মনে হয়, উহা অগ্নিজলে মিশাইয়া পান করা হয়।
- তোর মস্তিস্কে কিছুটা গোবর আর বাকিটা অগ্নিজলে ভর্তি।
- কেন প্রভু, আপনি অগ্নিজল আর অপ্সরার লোভ দেখাইয়া সাবার নাসারন্ধ্রে রশি লাগাইয়া ঘুরাইতেছেন, আর আমি বলিলেই সমস্যা। অপ্সরা আর অগ্নিজল এই ছাড়া আপনার স্বর্গধামে আছে আর কী?
ভগবান খুক খুক করিয়া কাশি দিতে থাকিলেন।
- শোন, খর্জূর একটি স্বর্গীয় ফল ইহা কী জানিস?
-হ্যাঁ প্রভু জানি।
- তোদের বঙ্গদেশের নিস্ফলা মাটিতে এই স্বর্গীয় ফলটা জন্মাইতে পারিলিনা। যাহা জন্মায় না আছে তাহার শ্রী না আছে তাহের গায়ে মাংস। আমার সৃষ্ট বিশ্বে যাহারা মাংস না খাইতে পারিবে তাহারা ঝোল খাইবে, ইহাই নিয়ম। খর্জূর ফলাইতে পারিবি না খর্জূরের ঝোল স্বরূপ রস খাইয়া পুণ্য অর্জন করিবি।
বুঝিলি গণ্ড মূর্খ?
হঠাৎ চতুর্দিকে মলয় সমীরণ বহিতে থাকিল, অপার্থিব সৌরভে চারিদিক ভরিয়া গেল, সুমিষ্ট রিন রিন শব্দে অপ্সরারা হাজির হইতে থাকিল। উহাদের প্রত্যেকের হস্তে একটি করিয়া পাত্র। পাত্রে যে পানীয় আছে তাহা দেখিয়া বোঝা যায়, সেই পানীয় হইতে একধরনের মাদকতা পূর্ণ সৌরভও আসিতেছে।
-উহা কি? আমি বিহব্বল ভাবে প্রশ্ন করিলাম। অপ্সরা উত্তর দিল,
-খর্জূর রস।
আমার কর্ণ কুহরে কিন্নর কণ্ঠ যেন মধু বর্ষণ করিল। কিন্নর কণ্ঠ আবারো শুনিবার বাসনার আবারো প্রশ্ন করিলাম।
-উহা কী?
-খর্জূর রস, সঙ্গে উপাচার নিপাহ ভাইরাস।
আমার মস্তক ঘূর্ণিত হইতে শুরু করিল। চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা হইতে হইতে ভগবানের মুখশ্রী আই ই ডি সি আরের কর্তা ব্যাক্তিতে বিবর্তিত হইয়া গেল।
আকাশ বাতাস বিদীর্ণ করিয়া খনখনে গলায় আই ই ডি সি আরের কর্তা ব্যাক্তি হাসিতে হাসিতে খাঁটি বগুড়ার ভাষায় বলিয়া উঠিল।
-মাংস তো প্যালু না, লে ঝোল খা ঝোল খা।
আমি জ্ঞান হারাইলাম।
ভগবানের সহিত কথোপকথন ৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।