আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধু চিরদিন

অতীতকে নিয়ে নস্টালজিক হতে ভালোবাসি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেও।

পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো গত শুক্রবার। বিশ্বাসই হচ্ছে না যে স্কুল সার্টিফিকেট দিয়ে ফেলেছি! নানুর ভাষায় 'ম্যট্রিক' - শুনতেই কত বড় বড় লাগে। বাংলাদেশে এস এস সি পরিক্ষার্থীরা নাকি দিনে কমসে কম দশ-বারো ঘন্টা পরে। আমি পরীক্ষার আগের চার দিন গড়ে হয়তো চার ঘন্টাই পড়েছি।

সেই চার ঘন্টাই পড়তে গিয়ে একটু পর পর কফি ঢালতে হয়েছে। রেসাল্ট বের হওয়া পর্যন্ত জীবনের স্বাদ ভালোভাবে পেয়ে নিতে চেষ্টা করছি। জিনিষটা হাতে পাওয়ার পর আশেপাশের পরিস্থিতি কি রকম হবে বলা মুশকিল। ক্যাফিনের ক্ষতিপূরণ করতে গিয়ে শনি-রবি কেটেছে ঘুমে ঘুমে। সোমবারে স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে বাইরে গিয়েছি।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এটা সবার বাবা মাকে জানিয়ে করা হয়েছে। স্কুল ফরমালের বদলে করা, তাই ঠিক করলাম সেজেগুজে যাব। চার ইঞ্চি হীলের স্যান্ডেল পরে ভেবেছিলাম অনেক লম্বা হয়ে গিয়েছি। সুখ-সুখ ভাবটা বাকিদের সাথে দেখা হওয়ার প্রায় সাথে সাথেই দপ করে নিভে গেলো। অন্যদেরকে আমার থেকেও লম্বা লাগে! দেখা গেলো সাতজনের মধ্যে একজনই হীল ছাড়া, তবে সেটার জন্য ওকে ক্ষমা করে দেওয়া যায়।

মেয়েটা নিজেকে ছেলে ভাবতে পছন্দ করে। কথা ছিলো একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়া হবে। ম্যাপটা হাতে পেয়েই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। কোন কিছুই ঠিক মতো পড়া যাচ্ছে না। তবু আমি খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে বুঝিয়ে দিলাম যে হাতের ডানে হাটতে হবে।

কিছু দূর গিয়ে মনে হলো একটা কিছু ভুল হচ্ছে। ম্যাপের সাথে রাস্তা মিলছে না। ইউটার্ন নিয়ে ছয়জন আবার হাটা শুরু করলাম। সেদিকেও একই অবস্থা। চারবারের মাথায় আমি হাসতে হাসতে শেষ।

রাস্তা ভুল করার মধ্যে হাসির কি আছে সেটা আর কারও মাথায় ঢুকছিলো না। একজন আবার আমাকে প্রয়োজনের অধিক হাসির অভ্যাসের অপকারিতা সম্পর্কে জ্ঞান দিতে শুরু করলো। সাতবারের বার সবার পায়ের দিকে চেয়ে হাল ছেড়ে দিতে হলো। একজন মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম আমরা ঠিক পথেই আছি, পাঁচ মিনিট হাটলেই রেস্টুরেন্টের সামনে চলে যাব। যদিও পাঁচ মিনিটের জায়গায় পনের মিনিটের মতো লেগেছে, শেষ পর্যন্ত ঠিক মতো পৌঁছাতে পেরেছি।

দূর থেকে 'ইন্ডাল্জেন্স' লেখা দেখে সবাই পায়ের ব্যাথা ভুলে গেলো। হীল নিয়েই এক দৌড়ে একদম দরজার সামনে! সোমবার দুপুর, তাই আমরা ছাড়া আর কেও ছিলো না। পুরো জায়গা নিজের মতো করে নিলাম। আয়েশ করে খেয়ে টেয়ে কিছু ছবিও তুলে ফেললাম। এক পাশে টিভিতে ক্রিকেট দেখাচ্ছিলো।

সেটা নিয়ে কিছু অর্থহীন হাসাহাসি হলো। ছোট ছোট জিনিসকে বড় করে দেখার স্বভাব আমাদের সবার মাঝেই একটু আধটু আছে। সেদিন সেটা অনেক বেশি বের হয়ে পড়েছিলো। ওদের কে আমি কতটুকু পছন্দ করি সেটা বোধহয় ওরা জানে না। মিস করবো - অনেক, অনেক, অনেক।

বি:দ্র: ছবিটা আমার খাবারের। ছবি তোলার কথা মনে হয়েছে অর্ধেক খাওয়ার পর।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.