সমাজ থেকে কল্পিত দ্বন্দগুলো দূর হোক। পর্ব-01
গণতান্ত্রিক রাজনীতি জনগণের জন্য যতটা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশী গনতন্ত্রকে রাজনীতির জন্য প্রয়োজন রাজনীতিবিদদের। বিশেষতঃ বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক জীবনকে গণতন্ত্র নামক লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ও ইতিহাস যদি আপনি পড়েন তাহলে দেখবেন গনতন্ত্র শব্দটি একটি সরকারের 5 বছরের রাজনৈতিক নানান কর্মকান্ডের সাথে মাত্র একদিনের কর্মকান্ড জড়িত। সেটা আবার ঐ সরকারের শাসন আমলের সাথে জড়িত নয়, শাসন আমল শুরু হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহুর্তের সাথে জড়িত।
শাসন আমল শুরু হয় একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হবার পর। তারপর তারা 5 বছর শাসনভার গ্রহণ করে। গনতন্ত্রের সম্পর্কটা শুধুমাত্র একটি নির্বাচন: তারপর মনে হয় না গণতন্ত্রের সাথে সরকারের আর কোন আক্ষরিক সম্পর্ক আছে। নিচে বোল্ড করে উইকিপিডিয়া প্রাপ্ত গনতন্ত্রের সংজ্ঞা হুবুহু কপি করে দেওয়া হলো। যা পড়লে উপরোক্ত লেখার বাস্তবতা বোঝা যাবে।
(গণতন্ত্র হলো কোন জাতিরাষ্ট্রের (অথবা কোন সংগঠনের) এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমান ভোট বা অধিকার আছে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহনের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। যদিও শব্দটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয় তবে অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। গণতন্ত্র বা ডেমোক্রেসী শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ δημοκρατία (ডেমোক্রেসিয়া) থেকে, যার অর্থ "জনগণের শাসন"[১]শব্দটির উৎপত্তি δῆμος (ডেমোস) "জনগণ" ও κράτος (ক্রাটোস) "ক্ষমতা" থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে এথেন্স ও অন্যান্য নগর রাষ্ট্রে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝাতে শব্দটির প্রথম ব্যবহার হয়।
)
সংজ্ঞার আলোকে বর্তমান সরকার এবং বর্তমান বিরোধীদল কর্তৃক একাধিকবার করে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হয়েছে। তার ফলাফল সবাইতো দেখেছে। কখনও দেশের জনগণ সুশাসন দেখেনি। তবে গণ বিরোধী কর্মকান্ডের অভাব দেখেনি। তাহলে শেষ কথা দাঁড়াচ্ছে এইরকম সু-শাসনের সাথে গণতন্ত্রের কোনপ্রকার সম্পর্ক নেই।
এতকিছুর পরও একদিনের ঐ গণতান্ত্রিক নির্বাচনটাও বাংলাদেশের জন্য বিরাট এক ইস্যু (সমস্যা) হয়ে দাঁড়িয়েছে যদিও অবশিষ্ট্য 5 বছর তেমন কোন ইস্যু বলে মনে হয়না। দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার। কথা সত্য। নিরপেক্ষ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব। কিন্তু সুশাসন? সেটা কি পাওয়া সম্ভব? তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যদি থাকে তাতে উপরোক্ত সংজ্ঞার মত শুধুমাত্র নির্বাচনের সাথে সম্পর্কযুক্ত গণতন্ত্র শব্দকে বাঁচিয়ে রাখা গেলো।
তাতে প্রায় ষোল কোটি জনগণের আশা কি বেঁচে থাকবে?
তাহলে কি গণতন্ত্র পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার? নাকি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্ববধায়ক সরকার দরকার? আগে কোনটা দরকার? আপনার কি মনে হয়?
চলবে--------------:
আলমগীর কবির
দর্শনা।
5/30/2013 1:38:48 AM
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।