বাংলা ভাষায় 'টানাপোড়ন' শব্দটি এসেছে তাঁত থেকে। সাহিত্যিক মাহবুব উল আলম লিখেছেন, 'তাহার পরনে মোটা ধুতি, এমন মোটা যে, টানাপড়েনগুলি স্পষ্ট চোখে পড়ে'। বাংলায় 'টানাপড়েন' শব্দটিও শুদ্ধ।
তাঁতের ফ্রেমে বাঁধা দৈর্ঘের সুতোকে 'টানা' ও প্রস্থের সুতোকে বলা হয় 'পোড়ন'। পোড়নের সুতো মাকুতে জড়ানো থাকে।
মাকু ডানে-বামে অনবরত আসা-যাওয়া করে। ওতেই তাঁতের কাপড় বোনা হয়। এ কারণে বাংলা অভিধানে টানাপোড়নের এক অর্থে বলা হয়েছে : পুন:পুন কান্তিকর গমনাগমন।
টানা ও পোড়নকে কেন্দ্র করে মাকুর এ অস্থিরতাই আমাদের সঙ্কটময় জীবনে ঢুকে থেকে টানাপোড়ন বা টানাপড়েন হিসেবে। টানাপোড়ন শব্দের অর্থ হচ্ছে পুনঃ পুনঃ কান্তিকর কোনো কিছুর মধ্যে ঝুলে থাকা বা সংকটের মধ্যে থাকা।
ভূদেব মুখোপাধ্যায় তার 'পারিবারিক প্রবন্ধ'-এ লিখেছেন, 'ত্বদীয়তা এবং মদীয়তা ভাব কাপড়ের টানাপড়েনের ন্যায় এমনি পরস্পর অনুসৃত যে তাহাদিগকে পৃথক করিয়া লওয়া অসাধ্য। '
টানাপড়েন শব্দটি গৌণার্থে বারবার আনাগোনা অর্থেও ব্যবহৃত হয়। দীনবন্ধু মিত্র তার 'জামাই বারিক' উপন্যাসে লিখেছেন, 'এখন তোমরা এক জায়গায় বসে খাবে, না আমার টানাপড়েন কত্তে হবে। '
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।