আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয় সুমন্ত আসলাম,আমি দু:খিত

জীবনে সুখের মূল কথা হল - এই পৃথিবীর কেউ বা কোন কিছুই তোমার জন্য নয়।

প্রিয় সুমন্ত আসলাম, এদেশের লক্ষ লক্ষ আলপিন পাঠকের মাঝে আমিও একজন ছিলাম। ছিলাম বলতে হচ্ছে কারন বর্তমান সরকার আলপিনকে শুধু নিষিদ্ধই ঘোষনা করেনি, একে অবৈধ* বলেছে। পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই দৈনিক পত্রিকার সাপ্লিমেন্ট এর জন্য আলাদা ভাবে কোন নিয়মের/ডিক্লারেশন এর প্রয়োজন হয় না। এগুলো দৈনিকের সাথেই প্রকাশিত হয়।

বিশ্বের জনপ্রিয় প্রায় সব দৈনিকেরই সাপ্লিমেন্ট এবং ফান ম্যাগাজিন রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের বিজ্ঞ সরকার(!!!) এবং তার চেয়েও বিজ্ঞ উপদেষ্টারা আজ আলপিনকে অবৈধ ঘোষনা করেছে। যখন এই দেশটি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল, আমাদের মত সাধারন মানুষের যখন সেই সব দুর্নীতির স্বীকার হওয়া ছাড়া কোন কিছু বলার ছিল না, আলপিন তখন সেই সব দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষদের নিয়ে, সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে ফান করত। আর আমরা এই ভেবে মানসিক শান্তি পেতাম, কেউ না কেউ কোন না কোন ভাবে তো প্রতিবাদ করছে। এ সমাজের নানা স্তরের মানুষের কাছে আলপিন ছিল বিনোদনের মূল বিষয়।

আলপিনে বিনোদনের চেয়েও বড় ছিল - মানুষের মানবতাবোধ জাগ্রত করা। আপনি নিজে আলপিনের শেষ পাতায় সেরকমই একটি লেখা লিখতেন। মাঝে কিছুদিনের জন্য বন্ধ করেছিলেন আপনার লেখা, আলপিনের পাঠকদের তাড়নায় আবার লিখতে বাধ্য হয়েছিলেন। আপনার কি মনে পড়ে গত বিএনপি সরকারের সময় যখন বাস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল শাহবাগে, তখন আপনি একটি শিশুর জবানবন্দিতে এর প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই আবেগপ্রবণ লেখাটির কথা? অথবা বংগবন্ধু এবং জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সেই লেখা যাতে বলেছিলেন তাদের জন্য তৈরি বেহেশতে তাঁদের প্রতিকৃতি ভেংগে পড়ছে হাসিনা আর খালেদার অত্যাচারে, আর তাঁরা দুইজন কাঁদছেন দেশের এই অবস্থা দেখে। এর চেয়েও অনেক বেশি মানবিক আবেদন সম্পন্ন লেখা আপনি লিখেছেন, জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন এদেশের মানুষের ঘুমন্ত বিবেককে।

আপনি আপনার অনেক লেখায় খোলা চিঠির আকারে অনেক কিছু বোঝাতেন। কিন্তু নিয়তির কি পরিহাস দেখুন, আজ আপনার এক পাঠক আপনার জন্য খোলা চিঠি লিখছে। ভেবেছিলেন কখনও? যে অনভিপ্রেত ঘটনাটি ঘটেছে, তার বিষয়ে অনেক কিছু বলেছি বলে আর বলতে চাই না। দেশের এই জটিল সময়ে প্রথম আলোর ভূমিকা নিয়ে দিনকে দিন শংকিত হচ্ছিলাম। কিন্তু ভরসা ছিল আপনার উপর।

কারন আপনি যে আপনার লেখা দিয়ে অনেকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন! আমার কষ্ট লাগছে আপনার সম্পাদক সব কিছু আপনার উপর চাপিয়ে দিল। আমার কষ্ট লাগছে ইনকিলাবের ঘটনায় সম্পাদক গ্রেফতার হয়েছিল, কিন্তু বিভাগীয় সম্পাদকের কিছুই হয়নি। এই ক্ষেত্রে আপনার প্রিয় সম্পাদক নিজের দায়িত্ব অস্বীকার করে আপনার মত একজন লেখককে চাকরিচ্যুত করল। কষ্ট লাগছে আলপিন আর বেরোবে না বলে। আপনিই অনেকবার বলেছিলেন যে, এদেশের জনগণ খুব অসহায়।

তারা কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতিবাদ তো দূরের কথা, নিজের অনুভূতিও প্রকাশ করতে সাহস পায় না। শুধু নীরব দর্শক হয়ে রয়। আপনি আমাদের সেই নীরবতাকে, সেই আস্ফালনকে এতদিন ধরে ভাষায় রূপান্তরিত করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন সকল অন্যায়ের বিরূদ্ধে। অথচ আজ.. আজ আমি খুব অসহায়। এই ব্যাপারটিতে আমার কিছুই করার নেই, নীরব দর্শক হয়ে সহানুভূতি প্রকাশ ছাড়া।

কোন না কোন দিন আপনার লেখা নিয়ে আবারো হাজির হবেন আমাদের মাঝে - প্রত্যাশায় আছি সেই দিনের। আমার অক্ষমতার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দু:খিত , সুমন্ত আসলাম। ইতি- আপনার একজন গুনমুগ্ধ পাঠক কার্টুন বিষয়ে আমার আগের পোস্ট ইনকিলাবের ঘটনা *সূত্র: এটিএন বাংলার রাতের টক শো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.